বাংলাদেশের সব ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের অপসারণ না করার দাবিতে মাঠে নেমেছেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা।

সোমবার (২১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ ফোরাম (বিইউপিএফ) এবং চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সব সমমনা সংগঠনের ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় তারা অপসারণ না করার দাবি জানান।

মানববন্ধনে আন্দোলনকারী চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা লিখিত বক্তব্যে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ সরকারের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও শক্তিশালী কাঠামো। স্বাধীনতার পরবর্তী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং মেম্বারদের দ্বারা ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালিত হয়ে আসছে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও চেয়ারম্যানরা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। ইউনিয়ন পরিষদ কাঠামো ভেঙে দিলে দেখা যেতে পারে সামাজিক অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে বিশৃঙ্খলা ও পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে অবনতি হয়েছিল ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও চেয়ারম্যানরা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দিন রাত কঠোর পরিশ্রম করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিয়েছেন। তবে যেসব ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান ও সদস্যরা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

তারা আরও বলেন, এ অবস্থায় সব ইউনিয়ন পরিষদ ভেঙে দিলে অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে এবং জনমনে অসন্তোষ দেখা দেবে। ফলে যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে এ সরকার গঠিত হয়েছিল তা অর্জিত হবে না। আমরা আপনার (ড. ইউনূস) নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করতে চাই বিধায় জনগণের দোরগোড়ায় সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তৃণমূল পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিদের বিলুপ্ত বা অপসারণ না করার জন্য দাবি জানাচ্ছি।

মানববন্ধনে আজিজুল নামের এক চেয়ারম্যান বলেন, আজ ইউনিয়ন পরিষদের সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। আপনারা জানেন মানুষ সেবা বঞ্চিত হচ্ছে। আজ পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগ চলছে, নৌবাহিনী বিমান বাহিনীতে নিয়োগ চলছে। তাদের ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বিভিন্ন ধরনের সনদপত্র দিতে হয় আমাদের। তারা কিন্তু বর্তমানে এ সেবা পাচ্ছে না। তারা খুব কষ্টে আছে। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ করব যাতে ইউনিয়ন পরিষদ ভেঙে না দেওয়া হয়।

মো. জাকির আলম বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ ভেঙে দিলে দেশের আইনশৃঙ্খলা এবং জনগণের সেবা মুখ থুবড়ে পড়বে। এই যৌক্তিকতার আলোকে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার স্বার্থে আমাদের বাংলাদেশ ইউনিয়ন অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আমরা জানাতে চাই, ইউনিয়ন পরিষদ না ভেঙে আমাদেরকে পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেওয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় বাংলাদেশের যে অশান্তি যে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হবে তার জনরোষ বর্তমান সরকারের ওপরে পড়বে।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ ফোরামের (বিইউপিএফ) আহ্বায়ক মো. জিল্লুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যক্ষ মো. সুজাউদ্দৌলা লিপটন প্রমুখ।

ওএফএ/এসএসএইচ