স্বনামধন্য ইসলামী ব্যক্তিত্ব, বিদগ্ধ আলোচক, লেখক ও আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেছেন, আমাদের জীবনের লক্ষ্য উদ্দেশ্য নির্ধারণ করতে হবে। ডাক্তারও হন তবে লক্ষ্য নির্ধারণ করুন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই ডাক্তার হব।

রোববার (২০ অক্টোবর) ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ ইসলামিক কালচারাল ক্লাবের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ফেইথ অ্যান্ড ফিউচার’ পাওয়ারড বাই আলিফ আতর শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন এই ইসলামী আলোচক।

এতে বক্তব্য দেন ইসলামিক ব্যক্তিত্ব আহমেদ রফিক হাফিজাহুল্লাহ। এসময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের প্রিন্সিপাল কাজী শামীম ফরহাদ, ক্লাব কো-অর্ডিনেটর মো. নুরুন্নবী ও প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা। সেমিনারে মিডিয়া পার্টনার ছিল জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্ট।

শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, আমাদের তারুণ্যের জন্য সবচেয়ে বড় ঝুঁকির কাজ হচ্ছে নিজের চরিত্রকে সংরক্ষণ করা। পশ্চিমাদের যে অপসংস্কৃতি আমাদের মধ্যে পুশ করার জন্য এ দেশের সমস্ত গণমাধ্যম, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করা হচ্ছে। পশ্চিমাদের জ্ঞান বিজ্ঞান তথ্য প্রযুক্তি অবকাঠামোগত অনেক ভালো ভালো কাজ আছে। কিন্তু তাই বলে তাদের সংস্কৃতি আমাদের ওপর চাপিয়ে দিতে পারে না। কারণ আমার সংস্কৃতির সঙ্গে তাদের সংস্কৃতি সাংঘর্ষিক। পশ্চিমারা আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে থাকলেও আমাদের থেকে পরিবার ব্যবস্থা থেকে অনেক পিছিয়ে। আমাদের সমাজে পরিবারে সম্মান, বাবা-সন্তান, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যে বোঝাপড়া তা পশ্চিমারা চিন্তাও করতে পারেন না। তাদের মধ্যে সন্দেহ অনেক। তারা কেউ কাউকে বিশ্বাস করেন না। আমাদের সমাজেও অধঃপতন আসছে। তবে এই অবিশ্বাস আমাদের দেশে অনেক কম।

বাংলাদেশের সংস্কৃতি অনেক সমৃদ্ধ। তাই পশ্চিমা সংস্কৃতিকে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে– উল্লেখ করে তিনি বলেন, ধর্ম, বর্ণ, মতভেদ নির্বিশেষে আমাদের সংস্কৃতি অনেক বেশি সমৃদ্ধ। সংস্কৃতি প্রত্যেকটা জাতির স্বকীয়তা। যেটার ভিত্তিতে জাতি টিকে থাকে।

শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, আমি প্রায়ই একটা কথা বলি, আমাদের দেশের বয়োজ্যেষ্ঠদের মধ্যকার ভালোবাসা হচ্ছে মেড ইন জাপান, আর তরুণদের ভালোবাসা হচ্ছে মেড ইন চায়না। কারণ এখন ভালোবাসা প্রকাশ করার হাজারটা মাধ্যম বের হলেও ভালোবাসা বাড়েনি। আর বয়োজ্যেষ্ঠদের মধ্যে ভালোবাসা প্রকাশ করার এত মাধ্যম না থাকলেও ভালোবাসা কমেনি। আমাদের বন্ধন বিশ্বাস বাড়াতে হবে।

মুসলিম তরুণদের ভোগবাদী মানসিকতা ত্যাগ করে ত্যাগের মানসিকতা বাড়াতে হবে উল্লেখ করে এই ইসলামী আলোচক বলেন, ইসলাম আমাদের ত্যাগ শেখায়। আর বর্তমান ভোগবাদী সভ্যতা আমাদের ভোগ শেখাবে। অথচ ত্যাগের চেয়ে ভোগ সহজ। ভোগ সবাই করতে পারে। ভোগ করার জন্য যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু ত্যাগ করার জন্য যোগ্যতার প্রয়োজন হয়। ত্যাগ সবাই করত পারে না। মুসলিম তরুণ হিসেবে আমাদের ত্যাগী হতে হবে। পশ্চিমারা সেক্সুয়াল ইস্যুতে অনেক বেশি উন্মুক্ত। কিন্তু আমাদের চেয়ে অনেক বেশি অসুখী তারা। তাদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা অনেক বেশি। আমাদের দেশ উন্নত হচ্ছে, অশান্তিও বাড়ছে। আমাদের দেশেও আত্মহত্যা, অশান্তি বাড়ছে। আমাদের বুঝতে হবে শান্তিই একমাত্র পথ। আর শান্তির ধর্ম হচ্ছে ইসলাম। আমাদের ইসলামের ছায়াতলেই থাকতে হবে। মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। তবেই সাফল্য আসবে।

জেইউ/এসএসএইচ