সরকারের সংস্কারের এজেন্ডায় উপেক্ষিত ব্যক্তি মালিকানাধীন খাত
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে ব্যক্তি মালিকানাধীন খাতের সক্রিয় অংশগ্রহণ নেই, আবার সরকারের চলমান নীতি সংস্কার কার্যক্রমেও এই খাত প্রাধান্য পায়নি, যা উদ্বেগের বলে মনে করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
রোববার (২০ অক্টোবর) এক সংবাদ বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে সংস্থাটি।
বিজ্ঞাপন
টিআইবি বলছে, দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি ব্যক্তি মালিকানাধীন খাতকে বাদ দিয়ে সংস্কার ভাবনা কিংবা এ খাতে নিয়োজিত শ্রমশক্তির জন্য বৈষম্যহীন ও অংশগ্রহণমূলক উন্নয়ন ব্যবস্থা গড়ে তোলা সত্যিই অসম্ভব। এমন বাস্তবতায় উপদেষ্টা পরিষদে ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যবসা খাতের প্রতিনিধির অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি এ খাতের স্বচ্ছতা নিশ্চিতে ব্যবসায় শুদ্ধাচার কৌশল প্রণয়নে কমিশন গঠন করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন
স্বাস্থ্য, গণমাধ্যম, শ্রমিক ও নারী অধিকার-বিষয়ক চারটি সংস্কার কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এক্ষেত্রে আমাদের মনে রাখতে হবে, আমাদের দেশে কর্তৃত্ববাদ বিকাশের অন্যতম স্তম্ভ ছিল ব্যক্তি মালিকানাধীন খাতের একাংশের হাতে নীতিকাঠামো দখলসহ রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক যোগসাজশে অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থপাচারসহ ব্যবসায়ী ক্ষমতার জবাবদিহিহীন অপব্যবহার। যার বিচার নিশ্চিত করা যেমন অপরিহার্য, তেমনি বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্নপূরণে একটি গুরুত্বপূর্ণ খাতের অংশগ্রহণ উপেক্ষা করে কার্যকর ফলাফল পাওয়ার আশা সত্যিই অসম্ভব। এ পরিস্থিতি সামাল দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যবস্থায় এ খাতের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা জরুরি।’
তিনি বলেন, ‘পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকার ও ব্যক্তি মালিকানাধীন খাতের একাংশ পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে যে লুটেরা তন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল, তা একদিকে যেমন পুরো অর্থনীতির সম্ভাবনাকে গলা টিপে ধরেছিল, তেমনি ব্যক্তি খাতের স্বাভাবিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করছিল। ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবং একটি টেকসই অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ব্যক্তি মালিকানাধীন ব্যবসা খাতে শুদ্ধাচার চর্চার কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের পথরেখা নির্ধারণ অপরিহার্য। প্রয়োজনে বিশেষ কমিশন গঠন করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রে যেন আর কর্তৃত্ববাদের জন্ম বা পুনরুত্থান না ঘটে, সে লক্ষ্যে আর্থিক, সামাজিক, রাজনৈতিক কাঠামো সংস্কারের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। একইসঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যক্রমকে আরও বেগবান করতে উপদেষ্টা পরিষদের কলেবর বৃদ্ধির চিন্তা সাধুবাদ পাবে। তবে আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, রাষ্ট্র সংস্কার কার্যক্রমে দেশের কর্মসংস্থানের সবচেয়ে বড় অংশীদার ব্যক্তি মালিকানাধীন খাত পুরোপুরি উপেক্ষিত। অথচ ব্যক্তি মালিকানাধীন খাতে সংস্কার এবং চলমান সংস্কার কার্যক্রমে এ খাতের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা অনস্বীকার্য। নয়তো বাজার ব্যবস্থার নৈরাজ্য থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সুদূর পরাহত হবে।’
আরএম/এসএসএইচ