অভয়ারণ্যে বন্যপ্রাণীর জন্য অনিরাপদ রেলপথ চালু রাখায় উদ্বেগ
অভয়ারণ্যে বন্যপ্রাণীর জন্য অনিরাপদ রেলপথ চালু রাখা এবং ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে প্রাণীদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন পিপল ফর এনিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন (প ফাউন্ডেশন)।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সংবাদ মাধ্যমে প ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান স্থপতি রাকিবুল হক এমিলের পাঠানো বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
বিজ্ঞাপন
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১৩ অক্টোবর আনুমানিক রাত সাড়ে ৮টায় চট্টগ্রামের চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য স্পেশাল-১০ ট্রেনের ধাক্কায় একটি হাতি শাবক গুরুতর আহত হয় এবং ১৫ অক্টোবর বিকেল ৫টায় ডুলাহাজরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাতিটির মৃত্যু হয়। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ১২৮ কিলোমিটার রেলপথের প্রায় ২৭ কিলোমিটার পথ চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, ফাইস্যাখালী বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে ও মেধাকচ্ছপিয়া ন্যাশনাল পার্কের মধ্যে দিয়ে গেছে।
এতে বলা হয়, এডিবির এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্টের (ইআইএ) তথ্য মতে এই ২৭ কিলোমিটার রেলপথের ওপর দিয়ে ১১টি হাতি চলাচলের পথ অতিক্রম করেছে। প্রকল্পে তিনটি স্থানে ওভারপাস তৈরির সিদ্ধান্ত থাকলেও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ মাত্র একটি ওভারপাস তৈরি করে। হাতির সুরক্ষায় এলিফ্যান্ট ব্যারিয়ার ফেন্সিং, সাউন্ড ব্যারিয়ার ও সেন্সর সিস্টেম ইত্যাদির শর্তে সংরক্ষিত বনের ভূমি ডি-রিজার্ভ ঘোষণাপূর্বক বরাদ্দ প্রদান করা হয়। উদ্বোধনের ১১ মাস পরও এসব শর্ত পূরণ হয়নি, যার ফলস্বরূপ মহাবিপন্ন হিসেবে চিহ্নিত এশিয়ান হাতি শাবকটির মৃত্যু ঘটে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এ অবস্থায় অভয়ারণ্যের ভেতর দিয়ে ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে অঙ্গীকার করা শর্তাবলি বাস্তবায়ন, ট্রেনের গতিসীমা নির্ধারণ, রেলপথের দুই পাশের পর্যাপ্ত সেন্সর, ট্রেন থেকে ক্যামেরা মনিটরিং সুবিধা, পর্যাপ্ত ওভারপাস, আন্ডারপাস, পূর্ণাঙ্গ সাইডওয়াল ইত্যাদি নির্মাণসহ প্রয়োজনীয় সব সতর্ক ব্যবস্থা নিশ্চিত না করে এ রুটে ট্রেন চলাচল চালু রাখা এবং উপরন্তু ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি করায় আমরা বন্যপ্রাণী বিশেষত হাতির সুরক্ষায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
এতে আরও বলা হয়, আমরা পিপল ফর এনিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন গভীর উদ্বেগের সঙ্গে জানাতে চাই, প্রকল্পে উল্লিখিত শর্তাবলি বাস্তবায়নের পূর্বে রেল চলাচল বন্ধ রাখতে হবে এবং অভয়ারণ্যের সুরক্ষায় এখনই সব ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। অভয়ারণ্যের সুরক্ষায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয় নাগরিক সমাজের আকাঙ্ক্ষা ও উদ্বিগ্নতা বিবেচনা করে অতিসত্বর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আমরা আশাবাদী।
এমএইচএন/এসএসএইচ