হাইকোর্টের ১২ জন বিচারপতিকে অবসরে পাঠানোর বিষয়ে কোনো নিয়মের ব্যত্যয় হয়নি বলে মনে করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

বিচার বিভাগের অস্থিরতা বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন বিচার বিভাগের অনেক সিদ্ধান্ত সেটেল করা হয়নি। কারণ রাজনৈতিক সরকারগুলো সব সময় তার ইচ্ছায় ব্যবহার করতে চেয়েছে, ফলে সেই বিষয়গুলো সেটেল করেনি। তাই সেগুলো সেটেলমেন্টের দায়িত্ব আমাদের কাঁধে এসেছে। প্রধান বিচারপতি বিচারপতিদের নিয়মের মধ্যে ছুটি দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে পরে সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান রিজওয়ানা হাসান।

সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের বিষয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বিচারপতিদের অপসারণ কে করতে পারবেন তা নিয়ে দেশে অনেক রাজনীতি হয়েছে। একদিকে মুখে বিচার বিভাগ স্বাধীনের কথা বলা হয়েছে, অন্যদিকে বিচারবিভাগ রাজনৈতিক সরকারের অবস্থান থেকে একচুলও না নড়তে পারে সেই পুরো ক্ষমতাটায় সংসদকে দেওয়া হয়েছে। আমরা চেষ্টা করব যে মামলাটা ঝুলে আছে, বন্ধের পর পর যেন সুরাহা হয়ে যায়। যার মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট সরকারের নিয়োগের বিচারকরা থাকতে পারবেন না, সেটার সমাধানের দিকে যাওয়া যাবে। তবে সেটা নিয়ম মেনে করা হবে।

যানজট নিরসনের সরকারের উদ্যোগ নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা হয়েছে বলে জানান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টে আমরা শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে যুক্ত করতে পারি কিনা, সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কারণ অপেক্ষা করা, সময় দেওয়ার সীমা আছে। আবার জনগণের ভোগান্তিটা নিরসন করতে হবে। প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থায় যুক্ত করার সুযোগ রয়েছে।

সাকিব আল হাসানের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি যেটুকু জানি উনি নিজেই বলেছেন নিরাপত্তার কারণে আসছেন না। সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিরাপত্তার কারণে আসবেন না, এমন কোন কথা বলা হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই।

তথ্য উপদেষ্টা বলেছেন, ‘সরকার বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা মনে করেন না’— এটা নিয়ে সরকারের অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন,এ বিষয়ে তথ্য উপদেষ্টা ডিটেইল বক্তব্য দিয়েছেন।

শিক্ষক আন্দোলন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রিজওয়ানা হাসান বলেন, যারাই আন্দোলন করছে তাদের মুখপাত্র আছে। কোনো আন্দোলনকারীর জন্য সরকার দরজা বন্ধ করেনি। তারা যদি মনে করে রাস্তায় আন্দোলন না করে সরকারের সঙ্গে বসে আলোচনা করবেন, সেটা আন্দোলনকারীদের জন্য দরজা খোলা আছে।

ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের দুশ্চিন্তার বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা চলছে বলে জানান পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, তাদের একটি পক্ষ থেকে আট দফা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সরকার সে দাবিগুলো বিবেচনায় নিচ্ছে। আমরা তাদের আশস্ত করতে চাই নতুন বাংলাদেশে ধর্মীয় পরিচয়ে, সংখ্যালঘু পরিচয়ে কারও অনিরাপদবোধ করার কারণ নেই।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করায় শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে কীনা— এমন প্রশ্নে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বিচারের প্রয়োজনে আমাদের আনতে হলে সেই উদ্যোগ গ্রহণ করব। যেহেতু ট্রাইব্যুনাল থেকে নির্দেশনা এসেছে, তাই বিচারের প্রয়োজন হয়েছে। সরকার নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবে।

এনএম/এসএম