সংবাদপত্রের আলোচিত খবর
নকশার ভুলে ৮০০ কোটি
প্রতিদিন জাতীয় দৈনিকে অসংখ্য খবর প্রকাশিত হয়। সেইসব খবর থেকে আলোচিত কিছু খবরের সংকলন করা হলো।
পুরো জামালপুরে তাঁর কথার বাইরে যাওয়ার সাহস ছিল না অন্য কোনো সংসদ সদস্য (এমপি), দলীয় নেতা-কর্মী, প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ কারও। সরকারি দপ্তরের ঠিকাদারি, জমি দখল, দলীয় মনোনয়ন, দলীয় পদপদবি পাওয়া না–পাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
তিনি মির্জা আজম। তিনি জামালপুর-৩ (মেলান্দহ-মাদারগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। ১৬ বছরের ব্যবধানে তিনি বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন। ১৬ বছর ধরে ‘চুপ’ থাকা মানুষগুলো এখন মুখ খুলতে শুরু করেছেন, বের হতে শুরু করেছে তাঁর রাজত্বের নানা অন্যায় ও অনিয়মের তথ্য।
এর পাশাপাশি অন্যান্য খবরগুলো দেখে আসি—
প্রথম আলো
জামালপুর চলত আওয়ামী গডফাদার মির্জা আজমের ইশারায়
মির্জা আজম তাঁর স্ত্রী, সন্তান, পাঁচ ভাইসহ পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের নামে-বেনামে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ গড়ে তুলেছেন কোটি কোটি টাকার সম্পদ।
কালবেলা
সাবমেরিন কেবলসের আয় কর্তারাই ভাগ করে খান
প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলসে (বিএসসি-পিএলসি) চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক উভয় পদেই পরিবর্তন হয়েছে ছয়বার। কোম্পানির বিভিন্ন পর্যায়ে নিয়োগ পেয়েছেন ২০ জনের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী। ব্যান্ডউইথের দাম কমেছে কয়েক দফা।
চালু হয়েছে সিমিউই-৫ সাবমেরিন কেবল। শুরু হয়েছে সিমিউই-৬-এর কাজ। এমন অনেক পরিবর্তনই এসেছে বিএসসিপিএলসিতে। শুধু পরিবর্তন আসেনি কোম্পানির নিজস্ব কর্মকর্তাদের ভাগ্যে এবং কোম্পানির উন্নতিতে। কোম্পানির আয়-উন্নতি না হলেও নানা কৌশলে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রেষণে আসা কর্মকর্তারা অর্থ ভাগবাটোয়ারা করে তাদের পকেট ভারী করছেন।
আজকের পত্রিকা
অর্থাভাবে ডেঙ্গু প্রতিরোধক টিকায় পিছিয়ে বাংলাদেশ
এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু মূলত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রোগ। শতাধিক দেশে এটি ছড়িয়েছে। অন্যান্য ডেঙ্গুপ্রবণ দেশের তুলনায় রোগী শনাক্তের হার কম হলেও বাংলাদেশে এতে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। বিশ্বের অন্তত ২০টি দেশে ডেঙ্গুর টিকা দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি একটি টিকার দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা হয়েছে।
তবে অর্থাভাবে হয়নি তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা। এতে ওই টিকাপ্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার হারানোর শঙ্কা তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের (এনআইএইচ) আবিষ্কৃত টিভি-০০৫ (টেট্রাভেলেন্ট) এক ডোজের ডেঙ্গু টিকার প্রথম পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল (মানবদেহে পরীক্ষা) হয় যুক্তরাষ্ট্রে। দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের জন্য বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে এনআইএইচ। বাংলাদেশে এটি নিয়ে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভার্মন্ট বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে কাজ করেছে। কারিগরি সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়।
দেশ রূপান্তর
অভ্যুত্থানে সক্রিয় ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে মামলা গ্রেপ্তার নয়
গত ১৫ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত ‘গণ-অভ্যুত্থানে’ সক্রিয় ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করতে নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গতকাল সোমবার মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের মাধ্যমে বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ার পথে এক নবযাত্রা সূচিত হয়েছে। এই গণ-অভ্যুত্থানকে সাফল্যমণ্ডিত করতে যেসব ছাত্র-জনতা সক্রিয়ভাবে আন্দোলনের মাঠে থেকে এর পক্ষে কাজ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ১৫ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সংগঠিত জুলাই গণ- অভ্যুত্থান সংশ্লিষ্ট ঘটনার জন্য কোনো মামলা, গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা হবে না।’
আরও পড়ুন
বণিক বার্তা
বাংলাদেশে অলৌকিক ব্যাংকিং ব্যবসা
দেশের ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকট মেটাতে গত বছরজুড়ে লাখ লাখ কোটি টাকা ধার দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বছরের শুরুতে তথা ফেব্রুয়ারিতে এ ধারের পরিমাণ ছিল ৮৪ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা। যদিও বছর শেষে ডিসেম্বরে তা ৩ লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। রেপো, বিশেষ রেপো ও অ্যাশিউরড লিকুইডিটি সাপোর্ট (এএলএস) হিসেবে স্বল্পমেয়াদি এ ধার দেয়া হয়। দেশের ব্যাংক খাতের ইতিহাসে এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এত পরিমাণ ধার দেয়ার নজির নেই।
আবার তারল্যের ক্ষেত্রে দেউলিয়াত্বের বছরেই রেকর্ড নিট মুনাফা দেখায় দেশের ব্যাংকগুলো। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দেশের ব্যাংকগুলো ১৪ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা নিট মুনাফা দেখিয়েছে। এত পরিমাণ নিট মুনাফাও দেশের ব্যাংক খাতে অতীতে কখনো দেখা যায়নি। এ নিট মুনাফার অর্থের বড় অংশই আবার ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে লভ্যাংশ হিসেবে বণ্টন করা হয়েছে।
দেশ রূপান্তর
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে যেসব মেগা প্রকল্পের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তার একটি সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উন্নয়নকাজ। ২০২০ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালে। কিন্তু নকশায় ত্রুটি থাকার কারণে কয়েক দফায় নকশায় পরিবর্তন করতে হয়।
এতে মূল বাজেটের চেয়ে খরচ বেড়ে গেছে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। এতে ক্ষুব্ধ হয় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এ নিয়ে গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হাবিবুর রহমানসহ কয়েকজনের গাফিলতির বিষয়টি। তবে তত্ত্ব¡াবধায়ক প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
সমকাল
তেজি বাজারে ক্রেতার নিঃশব্দ হাহাকার
কোথাও পণ্যের কমতি নেই, তবু দামের চোটে ক্রেতার নিঃশব্দ হাহাকার। কোনো টোটকাতেই বাগে আসছে না নিত্যপণ্যের বল্গাহীন বাজার। সদাই করতে গিয়ে রীতিমতো নাকানি-চুবানি খাচ্ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। আর পারছেন না তারা। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও বাজার ছিল নিয়ন্ত্রণহীন। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া মানুষের আশা ছিল– সিন্ডিকেট বন্ধ হবে, দামের তেজ কমবে। তবে সেই আশাতেও যেন গুড়ে বালি!
গেল এক মাসে, বিশেষ করে সবজির দামে ক্রেতার চোখ কপালে ঠেকেছে! পাশাপাশি ডিম-মুরগিসহ সবকিছুর দামই লাফিয়ে বাড়ছে। ফলে নির্দিষ্ট আয়ের সাধারণ মানুষ জীবন চালাতে খেই হারাচ্ছেন। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর দফায় দফায় বৈঠক করছে। জেলায় জেলায় হয়েছে বিশেষ টাস্কফোর্স; নিয়মিত তদারকিও হচ্ছে। সিন্ডিকেট ধরতে চলছে অভিযান-জরিমানা। দেশের বাইরে থেকে আসছে পণ্য। স্বয়ং বাণিজ্য উপদেষ্টা নিজেই বাজার তদারকিতে মাঠে নেমেছেন। সরকারের এতসব পদক্ষেপের যোগফল ‘শূন্য’।
কালের কণ্ঠ
ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরে ১৭ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সড়ক ও সেতু, বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতের হাজার হাজার প্রকল্পে অনিয়ম, দুর্নীতি আর লুটপাট হয়েছে সীমাহীন। প্রভাবশালীদের ইচ্ছায় অপ্রয়োজনীয়, কমিশননির্ভর এবং অপচয়ের এসব প্রকল্পের একটি বড় অংশই গেছে স্বার্থান্বেষী মহলের পেটে। সড়ক ও সেতু বিভাগের ওপর করা টিআইবির একটি গবেষণার তথ্য ধরলেও গড়ে এই অনিয়ম, লুটপাট ও দুর্নীতির অঙ্ক কমবেশি চার লাখ কোটি থেকে সাত লাখ কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
যুগান্তর
গত চার অর্থবছরে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে মেয়রের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে উন্নয়ন, পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে কমিশন বাবদ ৩২০০ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে তৎকালীন মেয়র-কাউন্সিলর ও রাজনীতিবিদ এবং প্রকৌশলীসহ সংস্থার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা জড়িত ছিলেন । খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
জানা গেছে, দরপত্রে অটোমেশন হলেও প্রতিটি কাজ ভাগবাটোয়ারা হতো মেয়রের নির্দেশে। সমঝোতার ভিত্তিতে দরপত্রে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ পেয়েছে। এর বিনিময়ে তারা কমিশন হিসাবে সর্বনিম্ন ২৫ শতাংশ পর্যন্ত দিয়েছেন। আর পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে কমিশন আদায় হয়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ। বিপুল পরিমাণ এই টাকা গেছে অসাধু রাজনীতিবিদ ও শাসক দল সমর্থিত আমলাদের পকেটে। আর এই সুযোগে নিম্নমানের কাজ এবং মালামাল সরবরাহ করে অঙ্কের মুনাফা নিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে নগর পরিকল্পনাবিদ এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান যুগান্তরকে বলেন, বিগত সরকারের সময় সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার দরপত্র ভাগাভাগি এবং কমিশন বাণিজ্যের কথা সবাই জানত। তবে এসব নিয়ে কেউ প্রশ্ন করার সাহস পেতেন না।
কালের কণ্ঠ
কোটি টাকার ঝুট, মাদক সাম্রাজ্য, স্কুল-কলেজ-মাদরাসায় নিয়োগ, পদ বাণিজ্য, দখলদারি, ঠিকাদারি—সব কিছুতেই জড়িয়ে তাঁর নাম। বিচার-সালিস থেকে শুরু করে ডিশ, ইন্টারনেট, ফুটপাত, ট্রাকস্ট্যান্ড, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশায় চাঁদাবাজিসহ যেখানেই টাকার গন্ধ সেখানেই মতি চাচা।
অপরাধজগতের নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে ব্যবসার কথা বলে এবং সিটি নির্বাচনে কাউন্সিলর বানানোর আশ্বাস দিয়ে বিপুল অঙ্কের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও। অভিযোগ রয়েছে কিশোর গ্যাং ও ক্যাডার বাহিনী পালনের।
এছাড়া গর্বের আয়রন ডোম নিয়ে দর্পচূর্ণ ইসরায়েলের; শিক্ষক নিবন্ধনে পাস করেছেন আবু সাঈদ; বিচারপতি গোলাম মর্তুজাকে প্রধান করে ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন; সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক গ্রেপ্তার; দাম জটিলতায় ঢাকা-চট্টগ্রামে আড়তে ডিম বিক্রি বন্ধ; শীতের আমেজে উত্তরাঞ্চল—সংবাদগুলো বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।