সিন্ডিকেটের একচেটিয়া দাপটে কাজ পাচ্ছেন না বাবুর্চিরা। এতে করে বাধ্য হয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন তারা। এ অবস্থায় ঢাকার সরকারি-বেসরকারি কমিউনিটি সেন্টার, হল এবং ক্লাবে অসাধু সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে সাধারণ বাবুর্চিদের জন্য উন্মুক্ত কাজের সুযোগ করে দেওয়াসহ পাঁচ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ বাবুর্চি ঐক্য পরিষদ।

সোমবার (১৪ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে সংগঠনটি। এতে প্রায় শতাধিক বাবুর্চি অংশ নেন।

তারা বলেন, কমিউনিটি সেন্টারে সাধারণ বাবুর্চিরা কাজ পান না। এর আগেই অসাধু সিন্ডিকেট সেই কাজ বাগিয়ে নেন। পরে সাধারণ বাবুর্চিদের তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত দাম দিয়ে কিনে কাজ নিতে হয়। এতে মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভবান হন।

বাবুর্চি ঐক্য পরিষদের নেতারা দাবি করেন, বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি কমিউনিটি সেন্টার, হল ও ক্লাবে সিন্ডিকেটের কারণে সাধারণ বাবুর্চিরা বঞ্চিত। সিন্ডিকেটের কারণে তাদের কাজ না পেয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন পার করতে হচ্ছে।

এ সময় সরকারের কাছে সব ধরনের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার দাবি জানিয়ে পাঁচ দফা দাবি জানান তারা। দাবিগুলো হলো:

১. ঢাকা শহরে সরকারি-বেসরকারি যত কমিউনিটি সেন্টার, হল এবং ক্লাবে বাবুর্চিদের সিন্ডিকেট আছে, তা ভেঙে দিয়ে বাবুর্চিদের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে।

২. যারা অবৈধ টাকার জোরে সিন্ডিকেট তৈরি করে, তারা প্রকৃতপক্ষে বাবুর্চি নন। তাদের টাকার উৎস কী? প্রকৃত বাবুর্চিরা ৪০-৫০ বছর কাজ করেও ১০ লাখ টাকা জোগাড় করতে পারেন না। অথচ তারা কোটি-কোটি টাকা কোথায় পেলেন, তার উৎস তদন্ত করে বের করতে হবে।

৩. এই সিন্ডিকেট ভোক্তাদের জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে ফায়দা লুটেছে। ভোক্তাদের স্বাধীনতা দিতে হবে, যাতে তারা পছন্দমতো বাবুর্চি নিয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন। নামে-বেনামে অবৈধ কেটারিং ব্যবসায়ী সরকারি কমিউনিটি সেন্টার, হল ও ক্লাবের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসূত্রে এসব কাজ করে। তারা প্রকৃত বাবুর্চিদেরর কাজের সুযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে হবে।

৪. প্রকৃত বাবুর্চি এবং তাদের পরিবার কাজ না পেয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। সব কমিউনিটি সেন্টার, হল ও ক্লাবের সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে তাদের সাধারণ জীবনযাপনের সুযোগ করে দিতে হবে।

৫. বাংলাদেশ বাবুর্চি ঐক্য পরিষদের প্রায় ৫০-৬০ হাজার বাবুর্চি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারসহ এই শিল্প রক্ষার্থে সিন্ডিকেট ভেঙে সব সরকারি-বেসরকারি কমিউনিটি সেন্টার, হল, ক্লাব ও কনভেনশন সেন্টারকে উন্মুক্ত করে দেওয়ার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে হস্তক্ষেপ করতে হবে।

ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে আরও বক্তব্য দেন সোহরাব বাবুর্চি, মোতালিব বাবুর্চি, এবাদুল বাবুর্চি, বাবু বাবুর্চি ও আলমগীর বাবুর্চিসহ অন্যরা।

আরএইচটি/কেএ