ফাইল ছবি

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে সুপারিশ করে সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে এ বিষয়ে গঠিত কমিটি। বয়সসীমা পুরুষের ক্ষেত্রে ৩৫ ও নারীর ক্ষেত্রে ৩৭ বছর করার সুপারিশ করেছে এ কমিটি।

সোমবার (১৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে কমিটির প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী এ তথ্য জানান।

প্রবল গণআন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। এরপর থেকে নানা দাবিতে বিভিন্ন সংগঠনের কর্মসূচির মধ্যে বয়সসীমা নিয়ে আন্দোলনকারীরাও মাঠে নামেন।

একপর্যায়ে তারা প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের বাসভবনের সামনে জমায়েত হলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে পরামর্শ নিতে কমিটি গঠন করে সরকার। কমিটির প্রধান করা হয় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরীকে।

পুরুষদের ক্ষেত্রে চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর প্রযোজ্য হবে জানিয়ে আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, নারীদের জন্য আমরা দুই বছর বাড়িয়ে ৩৭ বছর সুপারিশ করেছি। এটা করেছি কারণ আরও বেশি সংখ্যক নারী যেন অংশগ্রহণ করতে পারে, আসতে পারে, পরীক্ষা দিতে পারে, চাকরিবাকরি করতে পারে।

তিনি বলেন, আমরা ছাত্রদের সঙ্গেও কথা বলেছি। আমরা পার্শ্ববর্তী দেশগুলোও দেখেছি। বিভিন্ন দেশে যে বয়সসীমা আছে সেটার সঙ্গে আমাদের সুপারিশ সংগতিপূর্ণ হয়েছে। কাজেই বাংলাদেশ পৃথিবী থেকে আলাদা কিছু নয়।

নারীদের প্রবেশে বয়স বেশি বাড়ানোর পেছনে যুক্তি হিসেবে আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেন, মেয়েদের আমরা এ কারণে দিয়েছি যে মেয়েদের ছেলেদের মতো ওই বয়সে পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয় না। ফ্যামিলি অব্লিগেশন্স থাকে, বিয়ে হয়ে যায়, বাচ্চা-কাচ্চা হয়। তাই তারা যেন আসতে পারে। এ ছাড়া আমাদের নারী কর্মকর্তার সংখ্যা তুলনামূলক কম। কোটা আছে কিন্তু অতটা ফুলফিল হয় না এখনও। সেজন্য আমরা এ সুপারিশ দিয়েছি, যেন নারীরা এ সুবিধাটা পায়, তারা আসতে পারে।

কমিটির প্রধান বলেন, আমি শুনেছি উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হবে, এ বিষয়ে ওনারাই সিদ্ধান্ত নেবেন। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে এমন সুবিধা আছে, সেজন্য আমরা এটা করেছি। আমরা নতুন কিছু আবিষ্কার করিনি।

অবসরের বিষয়ে সুপারিশ নেই

সরকারি চাকরিজীবীদের অবসরের বিষয়ে কমিটি কোনো সুপারিশ করেনি বলেও এসময় জানান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী।

তিনি বলেন, এখন যাদের বিষয়ে সুপারিশ করলাম, তারা চাকরি করে অবসরে আসতে অনেক সময়। এর মধ্যে অনেক কিছু চিন্তা করে সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।

কমিটি প্রধান বলেন, এখন যারা অবসরে যাবেন, তারা আগের বয়স অনুসারে চাকরিতে ঢুকেছেন, তাদের অবসরের ক্ষেত্রে তো কোনো অসুবিধা নেই। আগামী ৮-১০ বছর পর্যন্ত তো তারাই অবসরে যাবেন। এটা নিয়ে এখনই চিন্তার কোনো কারণ নেই। এখন চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়ানোর কারণে তাদের ওপর কোনো প্রভাব পড়ছে না। যাদের বয়সের সুপারিশ আমরা করেছি তারা এখনও চাকরিতে ঢোকেইনি, জন্মই গ্রহণ করেনি। তারা চাকরিতে ঢোকার পর চাকরি করলে তখন কী করতে হবে, সেটা নিয়ে সরকার সেই সময় সিদ্ধান্ত নেবে।

এসএইচআর/এসএসএইচ