কেউ বলেন রাজনৈতিক মাছ, কেউ আবার বলেন কূটনৈতিক মাছ। কারণ, বেশ কিছু ইস্যুতে মাছটি রয়েছে আলোচনায়। এ নিয়ে যেন মানুষের ভাবনার অন্ত নেই। প্রতিবেশী দুই দেশ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ইলিশ নিয়েও রয়েছে নানা রাজনীতি ও কূটনীতি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও দেখা যায় এর প্রতিফলন।

ভারতীয় বাঙালিদের মধ্যে চাহিদা তুঙ্গে থাকলেও বাংলাদেশি জিআই পণ্যখ্যাত ইলিশ মাছের রপ্তানিতে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। তবুও দুর্গাপূজা, পহেলা বৈশাখ এবং জামাইষষ্ঠীর সময় পশ্চিমবঙ্গে ইলিশ পাঠাতেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মূলত শারদীয় দুর্গা পূজাকে ঘিরে ভারতে সুস্বাদু ইলিশ মাছের চাহিদা আরও বেড়ে যায়। গত বেশ কয়েক বছর ধরে প্রতিবছরই দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ভারতে পাঠানো হতো বাংলাদেশের ইলিশ। কিন্তু টানা দেড় দশক ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখা নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়। কারণ, ইলিশ নিয়ে দেশের মানুষের রয়েছে চাপা ক্ষোভ। দামের কারণে এমনিতেই মাছটি সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে থাকে। এর ওপর আবার রপ্তানির সিদ্ধান্ত যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা!

মূলত শারদীয় দুর্গা পূজাকে ঘিরে ভারতে সুস্বাদু ইলিশ মাছের চাহিদা আরও বেড়ে যায় / ঢাকা পোস্ট

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বিখ্যাত ইলিশ কূটনীতির অংশ হিসেবে আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ভারতে বার্ষিক ইলিশ রপ্তানির সুবিধা দিতেন। ২০১২ সাল থেকে অন্যান্য দেশে রপ্তানি বন্ধ থাকলেও ভারতে মাছ বিক্রির অনুমতি দিত হাসিনার সরকার। গত বছরও চার হাজার মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়।

ভারতের চেয়ে দেশের জনগণকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আসার আগে থেকেই বাংলাদেশে ভারতবিরোধী বাতাস বইতে শুরু করেছিল। তবে গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর সেই বাতাস কি ইলিশের উপরেও পড়বে? এসবসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা ছিল তুঙ্গে। এর মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের এক বক্তব্য নতুন করে আলোচনার জন্ম দেয়। উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি ঘোষণা দেন— আগে দেশের মানুষ ইলিশ খাবে তারপর রপ্তানি। 

সেসময় তিনি বলেন, এবারের দুর্গোৎসবে বাংলাদেশের হিন্দুধর্মাবলম্বীসহ অন্যান্য নাগরিকরা যেন ইলিশ খেতে পারেন সেটি নিশ্চিত করা হবে। ভারতের চেয়ে দেশের জনগণকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার / ফাইল ছবি

গত ১৩ সেপ্টেম্বর ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ-১৮-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মৎস্য উপদেষ্টা আরও বলেন, “আমরা ক্ষমা চাচ্ছি, কিন্তু আমরা ভারতে কোনো ইলিশ পাঠাতে পারব না। এটি দামি মাছ। আমরা দেখেছি আমাদের দেশের মানুষই ইলিশ খেতে পারেন না। কারণ, সব ভারতে পাঠানো হয়। যেগুলো থাকে সেগুলো অনেক দামে খেতে হয়। আমরাও দুর্গোৎসব পালন করি। আমাদের জনগণও এটি উপভোগ (খেতে) পারবে।”

বন্ধুত্বের নজির হিসেবে দুর্গাপূজার সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪ হাজার টন ইলিশ ভারতে পাঠাতেন। হাসিনার এই উদ্যোগেরও সমালোচনা করেন মৎস্য উপদেষ্টা। বলেন, ইলিশ নিয়ে ভারতের কোনো ইস্যু সৃষ্টি করার দরকার নেই। যদি তারা বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায় তাহলে তাদের তিস্তার পানি বণ্টনের সমস্যার সমাধার করা উচিত।

ইলিশ রপ্তানি বন্ধ মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের শামিল, বলছেন ভারতীয়রা

মূলত দুর্গাপূজার সময় ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বাড়ে ইলিশের চাহিদা। ইলিশকে পূজার অন্যতম অনুষঙ্গ হিসেবেও বিবেচনা করেন অনেকে। আগেও বাংলাদেশ ইলিশ রপ্তানি বন্ধ করলেও দুর্গাপূজার সময় ইলিশ পাঠাতেন হাসিনা। যা ‘ইলিশ কূটনীতি’ নামে পরিচিত ছিল। তবে নতুন সরকারের ঘোষণার পর সেই কূটনীতিতে ধাক্কা লাগে। বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখান দেশটির সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ব্যক্তিরাও। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুই দেশের নেটিজেনদের মধ্যে এক ধরনের বাদানুবাদও দেখা যায়।

সেই সঙ্গে ভারতের বাজারে এই মাছটির দামও বাড়ে লাফিয়ে লাফিয়ে। আবার অবৈধপথে ভারতে যাওয়া কিছু মাছ আবার বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। লেখিকা ও সাংবাদিক টিনা দাস বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ইলিশ রপ্তানি বন্ধ করে ভারতের বাঙালিদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করেছে। কারণ, পূজার অন্যতম বড় উপকরণ হলো পদ্মার ইলিশ।

দুর্গাপূজার সময় ভারতে বাড়ে ইলিশের চাহিদা, ইলিশকে পূজার অন্যতম অনুষঙ্গ হিসেবেও বিবেচনা করেন অনেকে / ফাইল ছবি

রনি কুমার ভৌমিক নামে আরেক ভারতীয় বলেন, মৌসুমি মাছ হওয়ায় ইলিশ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তাদের জন্য আরও দুঃখের খবর। কারণ, তারা সবাই ইলিশ খেতে এই মৌসুমের জন্য অপেক্ষা করেন। আর মৌসুমটির সঙ্গে মিলে যায় দুর্গাপূজার সময়টি। এছাড়া মানুষ ইলিশ মাছ দিয়ে দেবী লক্ষ্মীর পূজা করেন। অনেকে ইলিশ ছাড়া লক্ষ্মী পূজাকে অপূর্ণ মনে করেন। এছাড়া এই মাছ পশ্চিমবঙ্গে বিয়েরও একটি অনুষঙ্গ। বিয়ের সময় বরের পক্ষ থেকে কনেকে ইলিশ উপহার দেওয়া হয়।

বৃহত্তর স্বার্থে এবং সর্বোচ্চ মহলের সিদ্ধান্তে ভারতে ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্ত

এ পরিস্থিতির মধ্যেই ভারতের ফিস ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন ইলিশ রপ্তানির জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন জানায়। বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের কাছে চিঠি পাঠিয়ে আবেদন করে ফিস ইমপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন। পরবর্তীতে দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে সরকার সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার ভারতে ইলিশ রপ্তানির বিষয়ে এবার নেতিবাচক মন্তব্য করলেও গত ২১ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেয়। পরদিন রোববার অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, ‘বৃহত্তর স্বার্থে এবং সর্বোচ্চ মহলের সিদ্ধান্তে ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানি করা হচ্ছে। ভারতে ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্তে বাহবা পেয়েছি। অনেক জায়গা থেকে বলা হয়েছে, ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

ওই দিন বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বছরে উৎপাদন হয় ৫ লাখ ৩০ হাজার টন ইলিশ। তিন হাজার টন ইলিশ চাঁদপুর ঘাটের এক দিনের পরিমাণের চেয়ে কম। তাছাড়া, ইলিশ রপ্তানিতে বাণিজ্যিক সুবিধাও আছে। বৈদেশিক মুদ্রা আসবে। রপ্তানি না করলে চোরাচালান হয়।

অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ / ফাইল ছবি

পরদিন ২২ সেপ্টেম্বর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এ প্রসঙ্গে বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ভারতের বিশেষ অনুরোধে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। এতে তার মন্ত্রণালয়ের কিছু করার নেই।

উপদেষ্টা বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় স্বাধীনভাবে এটা (রপ্তানির অনুমোদন) দিয়েছেন। তারা একটা অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এ অনুমোদন দিয়েছেন। দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ভারতের বিশেষ অনুরোধ ছিল। সে অনুযায়ী তারা করেছেন। এর সঙ্গে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। আমাদের কমিটমেন্ট এখনো আগের মতোই আছে। আমরা বাংলাদেশের মানুষের জন্য ইলিশের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে চাই। 

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করেই ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও সেসময় সূত্রে জানা যায়।

ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ করতে হাইকোর্টে রিট

দ্বিমুখী এ ঘটনার মধ্যেই গত ২৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক ভারতে তিন হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতির বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিট পিটিশনে ভারতে তিন হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি বাতিলসহ বাংলাদেশের পদ্মা, মেঘনা ও নদীর ইলিশ মাছ রপ্তানির বিরুদ্ধে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়।

হাইকোর্ট / ফাইল ছবি

সেখানে বলা হয়, বাংলাদেশের রপ্তানি নীতি ২০২১-২৪ অনুযায়ী, ইলিশ মাছ মুক্তভাবে রপ্তানিযোগ্য কোনো পণ্য নয়। এই মাছ রপ্তানি করতে চাইলে যথাযথ শর্ত পূরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করেনি। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সুস্পষ্ট অনুমোদন ছাড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এককভাবে এই ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমোদন দিতে পারে না। এটা এখতিয়ারবহির্ভূত কাজ। এক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সচিব বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থবিরোধী কাজ করেছেন এবং বাংলাদেশের সংবিধানের ২১(২) অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করেছেন। 

রিটে বাণিজ্যসচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পররাষ্ট্রসচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আমদানি-রপ্তানি কার্যালয়ের প্রধান নিয়ন্ত্রককে বিবাদী করা হয়েছে।

কেন ভারতে ইলিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত?

মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর আগে দেশের মানুষ ইলিশ খাবে তারপর রপ্তানি— এমন ঘোষণা দিয়েছিলেন ফরিদা আখতার। কিন্তু ২১ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, তিন হাজার মেট্রিক টন ইলিশ বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে তারা। আর এই সিদ্ধান্তের পর বাংলাদেশে দেখা দেয় বিরূপ প্রতিক্রিয়া। তবে কি বাংলাদেশের মানুষ আগে ইলিশ খাবে তারপর রপ্তানি হবে— এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলো সরকার? এমন প্রশ্ন সামনে আসে।

এ বিষয়ে উপদেষ্টা ফরিদা আফতার বলেন, যদি এমন হতো... আমরা বলতাম যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এখন যথেষ্ট উৎপাদন করছে বিধায় আমরা এখন রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিচ্ছি, এরকম কি কোনো ঘোষণা আমরা দিয়েছি? এরকম ঘোষণা তো আমরা দেইনি। কাজেই আমাদের এটা সরে আসার বিষয় না। এটা হলো যে, বিশেষ অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যে সিদ্ধান্ত নেয়, সেখানে আমরা কিভাবে বাধা দেবো? সরে আসা বললে এটা ভুল হবে। প্রথমত দেশের মানুষ খাবে, সে খাওয়ার পর্যায়ে আমরা এখনও কাজ করে যাচ্ছি। ওরা হয়তো একটু বেশি রিকোয়েস্ট করছে, সে কারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় হয়তো এটা করছে, সেটার সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততা নেই। 

বছরে দেশে উৎপাদন হয় ৫ লাখ ৩০ হাজার টন ইলিশ / ঢাকা পোস্ট

৩ হাজার টন নয়, ভারতে রপ্তানি হচ্ছে ২৪২০ টন ইলিশ

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রথমে ভারতে তিন হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তা থেকে সরে এসে শেষ পর্যন্ত ২ হাজার ৪২০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে মন্ত্রণালয়। গত ২৬ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে ৬৮০ টন ইলিশ কম রপ্তানির কথা জানানো হয়।

সেখানে বলা হয়, আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রথমে ভারতে তিন হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তা থেকে সরে এসে তারা শেষ পর্যন্ত ২ হাজার ৪২০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। এ অনুমতি দেওয়া হয়েছে ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে। এর মধ্যে ৪৮টি প্রতিষ্ঠান ৫০ টন করে ২ হাজার ৪০০ টন, আর একটি প্রতিষ্ঠান ২০ টন ইলিশ রপ্তানি করবে। 

মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রপ্তানি হয়েছিল প্রায় ৬৬৫ টন। এর আগের অর্থবছরে (২০২২-২৩) এর পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৩৭৬ টন। এছাড়া ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ হাজার ২১১ এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ১ হাজার ৮৮০ টন ইলিশ রপ্তানি হয়।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রপ্তানি হয়েছিল প্রায় ৬৬৫ টন / নোনা ইলিশ / ঢাকা পোস্ট

বাংলাদেশের সোনার খনি হচ্ছে ইলিশ সম্পদ : ফরিদা আখতার

সর্বশেষ গত ৫ অক্টোবর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, বাংলাদেশের সোনার খনি হচ্ছে ইলিশ সম্পদ। তাই দেশের মানুষকে সচেতন করে নিষিদ্ধ সময়ে ইলিশ ধরা থেকে জেলেদের বিরত রেখে এই সম্পদ রক্ষা করতে হবে।

জেলেদের সঙ্গে এক সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, আমাদের মানুষ দামের কারণে ইলিশ খেতে পায় না, আমরা চেষ্টা করব মানুষ যেন ইলিশ খেতে পারেন। এই অন্যায় বন্ধ করতে আমাদেরকে চেষ্টা করতে হবে। যদি নিষিদ্ধ সময়ে আপনারা ইলিশ ধরা বন্ধ করেন, তবে ইলিশ বৃদ্ধি পেয়ে বাজারে ইলিশের দাম কমে যাবে। দাম কমলে সাধারণ মানুষ ইলিশ খেতে পারবে। দেশের ইলিশ বৃদ্ধি করতে আমাদের পক্ষ থেকে যা করা দরকার, তা আমরা করব।

প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ত্রিপুরা ও আসামেও যায় বাংলাদেশের ইলিশ। বছরজুড়ে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বাংলাদেশের ইলিশের জন্য মুখিয়ে থাকেন। বাংলাদেশ থেকে আমদানি হওয়া ইলিশের সিংহভাগই পেয়ে থাকে পশ্চিমবঙ্গ। প্রতি বছর সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বাংলাদেশ থেকে ইলিশ যায় ভারতে।

এমজে