রাজধানীর রমনা এলাকা একটি বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনায় তিন গৃহকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির রমনা মডেল থানা পুলিশ। এ সময় চুরি হওয়া ৩১ ভরি ৪ আনা ৫ রত্তি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন- তানজিনা আক্তার ফারিয়া ও মোসা. কোহিনুর বেগম এবং মোছা নাজমা আক্তার ওরফে লাইজু।

শনিবার (১২ অক্টোবর) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. সারোয়ার জাহান।

ডিসি বলেন, গত ১৬ আগস্ট জনৈক রোখসানা মজুমদার ব্যাংকের লকারে গচ্ছিত স্বর্ণালংকার এনে নিজের ১১৬/এ, কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, ইস্কাটন গার্ডেন, রমনার বাসার আলমারিতে রাখেন। পরে গত ৮ অক্টোবর গহনা দেখার জন্য আলমারির মধ্যে থাকা ব্যাগ খুলে দেখেন যে, ব্যাগের মধ্যে থাকা ৪৪ ভরি স্বর্ণালংকার ও ডায়মন্ডের ৫টি আংটি নেই, যার মূল্য ৫২ লাখ টাকা। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) ভুক্তভোগী বাদী হয়ে রমনা মডেল থানায় একটি চুরির মামলা দায়ের করেন।

মামলায় বাসার স্থায়ী গৃহকর্মী তানজিনা আক্তার ফারিয়া ও মোসা. কহিনুর বেগম এবং অস্থায়ী গৃহকর্মী মোছা. নাজমা আক্তার ওরফে লাইজুকে এজাহার নামীয় আসামি করা হয়।

ডিসি সারোয়ার জাহান বলেন, মামলা হওয়ার পর রমনা থানা পুলিশ তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে কাকরাইল এলাকায় অভিযান চালিয়ে চুরির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গৃহকর্মী তানজিনা আক্তার ফারিয়া ও মোসা. কোহিনুর বেগমকে গ্রেপ্তার করে। তাদের দুজনকে শুক্রবার আদালতে পাঠানো হলে তানজিনা আক্তার ফারিয়া আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা অনুযায়ী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন যে, তিনিসহ গ্রেপ্তার কহিনুর বেগম ও নাজমা আক্তার লাইজু এ চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল। পরে আদালত কোহিনুর বেগমের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে আসামির দেখানো মতে বাদীর বাসার গৃহকর্মীদের শয়ন কক্ষ থেকে ৮ ভরি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়। 

পরে ১১০/এ, নিউ ইস্কাটন রোড, রমনার ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে শুক্রবার (১১ অক্টোবর) রাতে নাজমা আক্তার লাইজুকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার হেফাজত থেকে ১৬ ভরি ১৫ আনা ৪ রত্তি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়। অবশিষ্ট স্বর্ণ উদ্ধারের জন্য গ্রেপ্তার লাইজুকে নিয়ে কারওয়ান বাজারের স্বর্ণ মার্কেটে অভিযান পরিচালনা করা হয়। 

অভিযানকালে অনন্যা জুয়েলার্স থেকে গলিত অবস্থায় ২ ভরি ১২ আনা ৪ রত্তি এবং নুসরাত জুয়েলার্স থেকে গলিত অবস্থায় ৩ ভরি ৮ আনা ৩ রত্তি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। উল্লিখিত চুরির মামলায় রমনা মডেল থানা মোট ৩১ ভরি ৪ আনা ৫ রত্তি স্বর্ণ উদ্ধার করেছে।

অবশিষ্ট চোরাই স্বর্ণালংকার উদ্ধার এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্যদের গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান ডিসি।

জেইউ/জেডএস