কক্সবাজারের পেকুয়ায় এক যুবলীগ নেতার নির্যাতন থেকে বাঁচতে অনশন কর্মসূচি পালন করছে ভুক্তভোগী পরিবার। মিথ্যা মামলা, জমি দখল ও গুলিবর্ষণের প্রতিকার চেয়ে বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সকাল থেকে পেকুয়া উপজেলার শহীদ মিনারে অনশন শুরু করে পরিবারের সদস্যরা। 

তারা সবাই উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের জালিয়াকাটা এলাকার মৃত মুকতার আহমদের পরিবারের সদস্য।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা বলছেন, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বারেক, কৃষকলীগ নেতা মামুন ও অস্ত্রধারী ছাত্রলীগের ক্যাডার আমিনুর রশিদদের নেতৃত্বে তাদের পরিবারের সদস্যদের হয়রানি করা হচ্ছে। মিথ্যা মামলা ফাঁসানো, আদালতের আদেশ তোয়াক্কা না করে জমি দখল ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণের মতো ঘটনা ঘটেছে।

গত বছর ২৬ ডিসেম্বর অস্ত্রহাতে গ্রেপ্তার হয় ছাত্রলীগ ক্যাডার আমিন। পরে আওয়ামী লীগের ক্ষমতার দাপটে জামিনে বেরিয়ে আসে আমিন। এরপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়তে থাকে। তাদের হামলা-মামলায় পরিবারের ২১ সদস্য ঘরছাড়া হয়ে যায়।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য উম্মে কুলসুম বলেন, ‘যুবলীগ নেতা বারেক ও তার ক্যাডারদের অত্যাচারে আমার পরিবার ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ শাসনামলে ক্ষমতার দাপটে তিনি এসব করেছে। নামে-বেনামে আমার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও আমাদের বসতভিটা দখল করতে গুলি করেছে। আমরা তার নির্যাতন থেকে বাঁচতে চাই।’

ভুক্তভোগী পরিবারের আরেক সদস্য মো. নাজিম উদ্দীন বলেন, ‘আমরা আমাদের ঘরে নিরাপদে ফিরতে চাই। আর তাদের বিরুদ্ধে আদালতের নিষেধাজ্ঞার বাস্তবায়ন চাই। আদালত ২০১৮ সালের ৫ নভেম্বর তাদের বিরুদ্ধে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। তারা পরবর্তীতে জেলা আদালতে নিষেধাজ্ঞার আদেশ বাতিল চেয়ে মিস আপিল মামলা করে। জেলা জজ আদালত ২০২১ সালে ২১ অক্টোবর ওই মামলা খারিজ করেন এবং নিষেধাজ্ঞা আদেশ বহাল রাখেন। এতে তারা বার বার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জায়গা দখলের চেষ্টা করে। আমাদের পরিবার বিষয়টি আদালতকে অবগত করলে আদালত গত ৩ মার্চ পেকুয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার জন্য আদেশ দেন। পেকুয়া থানা গত ২ এপ্রিল তাদের নোটিশ জারি করে। এর জের ধরে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে সংঘবদ্ধভাবে গত ১১ আগস্ট সংঘবদ্ধ হয়ে আমাদের ঘরে গুলি ছুঁড়ে, ভাঙচুর ও লুটপাঠ করে এবং জায়গা দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে। আমরা এর প্রতিকার চাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা বলেন, ‘বিষয়টি আমরা জেনেছি। তবে লিখিতভাবে কেউ কিছু জানায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে জানতে পেকুয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বারেককে একাধিকবার কল দেওয়া হলে তার নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

আরএমএন/এমএ