কাগজপত্র ঘাটতির অভাবে প্রবাসীদের কোনো এনআইডি আবেদন বাতিল করা যাবে বলে নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কাগজপত্র ঘাটতি থাকলে বাধ্যতামূলকভাবে প্রবাসীদের শুনানি নিতে হবে বলে জানিয়েছে ইসি। প্রয়োজনে আত্মীয়স্বজনের সাথে যোগাযোগ করে কাগজপত্র সংগ্রহের জন্য বলেছে সংস্থাটি। 

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছে, একজন প্রবাসীর পক্ষে সবসময় সকল দলিলাদি সংযুক্ত করা সম্ভব হয় না। ফলে মাঠ কর্মকর্তারা তাদের আবেদন সাধারণ নির্দেশনাবলীর ধারাবাহিকতা বাতিল করে দেন। এতে অনেক ভোগান্তির শিকার হন তারা। এ ছাড়া সময় ও অর্থের অপচয় হয়। অন্যদিকে জরুরি সেবা থেকেও বঞ্চিত হন তারা। এ বিষয়টি নিয়ে অনেকের দাবির প্রেক্ষিতে প্রবাসীদের সেবা সহজ করার লক্ষ্যে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অণুবিভাগের মহাপরিচালক মো. মাহবুব আলম তালুকদার ইতোমধ্যে নির্দেশনাটি মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছেন।

এতে বলা হয়েছে, প্রবাসীদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সেবা প্রদান করতে হবে। তাদের নিবন্ধনের ক্ষেত্রে আবেদনের সাথে ডকুমেন্ট সংযুক্ত না থাকলে আবেদনকারীর শুনানি ছাড়া আবেদন বাতিল করা যাবে না। প্রয়োজনে আত্মীয়-স্বজনের সাথে যোগাযোগ করে ডকুমেন্ট সংগ্রহ করতে হবে।

এ বিষয়ে ইসি সচিব শফিউল আজিম বলেছেন, এনআইডি সেবা সহজ করার লক্ষ্যে সকল উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। প্রবাসী ভোটার সাতটা দেশে চলমান আছে। যেখানে প্রবাসী আনুপাতিক হারে বেশি সেখানে আস্তে আস্তে চালু করবো। শিগগিরই কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় চালু হবে এই সেবা। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যে লন্ডনের পর এবার বাকিংহামেও চালু হচ্ছে এই সেবা।

বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, ইতালি, কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব ও মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার হিসেবে নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইতালি, কুয়েত, কাতার, যুক্তরাজ্য ও মালয়েশিয়ায় স্মার্টকার্ড বিতরণ উদ্বোধনও হয়েছে। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে ওমান, বাহরাইন, জর্দান, সিঙ্গাপুর, লেবানন, লিবিয়া, অস্ট্রেলিয়া, মালদ্বীপে এনআইডি কার্যক্রম হাতে নেওয়ার কথা রয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা পেয়ে কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১৯ সালে প্রবাসে এনআইডি সরবরাহের উদ্যোগটি হাতে নেয়। এরপর ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের অনলাইনের ভোটার করে নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করে ইসি। এর আগে ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসীদের মাঝে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়। তার আগে একই বছর ৫ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় অবস্থারত বাংলাদেশিদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি এবং স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার অংশ হিসেবে অনলাইনে আবেদন নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। এরপর সৌদি আবর, সিঙ্গাপুর ও মালদ্বীপে থাকা বাংলাদেশিদের জন্যও এ সুযোগ চালু করা হয়। 

সে সময় অনলাইনে আবেদন নিয়ে সেই আবেদন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপজেলা থেকে যাচাই করে সত্যতা পেলে সংশ্লিষ্ট দেশে দূতাবাস থেকে এনআইডি সরবরাহের পরিকল্পনা ছিল। এরপর করোনা মহামারির কারণে থমকে যায় দূতাবাসের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা।

কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন সম্প্রতি পদত্যাগী কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর সেই কার্যক্রমকে ফের উজ্জীবিত করেন। এ ক্ষেত্রে আগের আবেদনগুলো পাশ কাটিয়ে নতুন করে কার্যক্রম শুরু করেন তারা।

এসআর/এনএফ