সরকারি হওয়ার আগের বেতন স্কেল বহাল রাখা এবং নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগ বঞ্চিত না করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কলেজ শিক্ষক পরিষদ।

বুধবার (৯ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব দাবি জানানো হয়েছে।

সংগঠনের সভাপতি কে এম দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক হোসেন মৃধা, সিনিয়র সহ-সভাপতি আনিসুর রহমান, সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, আগে থেকেই থাকা সরকারি কলেজ বাদেও প্রতিটি উপজেলায় একটি করে নতুন কলেজ সরকারিকরণ করা হয়েছে। আগের সরকারের আমলে শিক্ষক স্বার্থবিরোধী, বৈষম্যমূলক আত্মীকরণ বিধিমালা ২০১৮ এর কালো বিধির কারণে আত্তীকৃত শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকারি কলেজে চাকরি করেও বৈষম্যের শিকার ও সুবিধা হতে বঞ্চিত। শিক্ষক কর্মচারীদের আত্তীকরণে আগের মূলনীতি ও ধারাবাহিকতা অনুসরণ না করে আত্তীকরণ বিধিমালা ২০১৮-এ ভিন্ন নিয়ম চালু হয়েছে, যা বৈষম্যমূলক ও মানবাধিকার পরিপন্থি। 

এই বিধিতে একটি অদ্ভুত পদসোপান তৈরি করা হযেছে, যা সরকারি কলেজে বিদ্যমান নেই এবং এনাম কমিটির সুপারিশ পরিপন্থি। এতে শিক্ষক-কর্মচারীদের কোনো পদোন্নতির বিধান রাখা হয়নি। অন্যদিকে সরকারি কলেজে সপ্তম গ্রেডে কর্মরত প্রভাষক, সপ্তম গ্রেডে কর্মরত লাইব্রেরিয়ান, নবম গ্রেডে কর্মরত প্রদর্শক ও শরীর চর্চা শিক্ষক, দশম গ্রেডে কর্মরত সহকারী লাইব্রেরিযানদের বেতন অবনমন করে পদের প্রারম্ভিক ধাপে নির্ধারণ করা হয়েছে, ফলে তাদের সবার বেতন আগের চেয়ে কমে গেছে।

তারা আরো বলেন, অনার্স-মাস্টার্স পর্যায়ে নিয়োগপ্রাপ্ত সেমিনার সহকারী সহায়ক কম্পিউটার অপারেটর পদগুলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাটার্নভুক্ত থাকা সত্ত্বেও তাদের আত্মীকরণের বিধান রাখা হয়নি, বেসরকারি আমলের চাকরিকাল গণনার বিষয়টি সুকৌশলে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।

বৈষম্য ও সমস্যাগুলো সমাধানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে তাদের দাবিগুলো হলো :

১. সরকারি কলেজে আত্তীকৃত শিক্ষকদের জন্য দ্রুত পদসোপান তৈরিসহ পদোন্নতির নীতিমালা প্রণয়ন করে প্রভাষক হতে সহকারী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক হতে সহযোগী অধ্যাপক এবং সহযোগী অধ্যাপক হতে অধ্যাপক পদে এনাম কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী দ্রুত পদোন্নতি দিয়ে বদলি ব্যবস্থা চালু করা। অবিলম্বে বকেয়া বেতন পরিশোধ এবং নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অতি দ্রুততম সময়ে চাকরি স্থায়ীকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

২. টাইম স্কেল প্রাপ্ত/সপ্তম গ্রেডধারী শিক্ষকদের সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি ও আর্থিক অবনমন রোধ করে বেসরকারি আমলে বিদ্যমান স্বীয় গ্রেডে, স্বীয় স্কেলের চলমান ধাপে বেতনভাতা চালু রাখা এবং শতভাগ চাকরিকাল গণনাসহ জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করা।

৩. অবিলম্বে নন-ক্যাডার রিক্রুটমেন্ট রুলস অ্যান্ড কম্পোজিশন তৈরি করে সে অনুযায়ী শূন্য পদের বিপরীতে পিএসসির মাধ্যমে নন-ক্যাডার শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে শূন্য পদ পূরণ করা। নন-ক্যাডার শূন্য পদে ক্যাডার পদ হতে অধ্যক্ষ/উপাধ্যক্ষ/সহকারী অধ্যাপক/প্রভাষকসহ কোনো পদে প্রেষণে কিংবা ডেপুটেশনে নিয়োগ প্রদান না করা।

৪. বেসরকারি আমলে কর্মরত কোনো শিক্ষক-কর্মচারীকে প্যাটার্ন অথবা অন্য কোনো অজুহাতে বঞ্চিত না করা এবং অনার্স/ মাস্টার্স নিয়োগপ্রাপ্ত সেমিনার সহকারী, সহায়ক, কম্পিউটার অপারেটর আত্মীকরণ করার ব্যবস্থা করা।

৫. প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণের তারিখ থেকে কল্যাণ ট্রাস্টে এমপিও হতে কেটে রাখা অর্থ ফেরত দেওয়া।

ওএফএ/কেএ