ভোগান্তি কমাতে বাংলাদেশেই বিভিন্ন ইউরোপের সব দেশের দূতাবাস অথবা ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার চালুর দাবি জানিয়েছে ইউরোপগামী যাত্রী পরিষদ। তারা বলছেন, ভ্রমণ, পড়াশোনা, ব্যবসা এবং চিকিৎসার জন্য ইউরোপে যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশিদের ভিসার জন্য হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। দ্বিগুণ কিংবা তিনগুণ টাকা খরচ করেও অনেকে ভিসা পাচ্ছে না। দ্রুত এ সমস্যা সমাধানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে তারা এসব দাবি জানিয়েছেন।

মানববন্ধনে উপস্থিত ইউরোপগামী যাত্রী পরিষদের সদস্যরা বলেন, বাংলাদেশে ইউরোপীয় সব দেশের দূতাবাস অথবা ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার স্থাপনের দাবি সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাপকভাবে উত্থাপিত হচ্ছে। এই দাবি যৌক্তিক। কারণ, ইউরোপের বেশ কিছু দেশের ভিসা পাওয়ার জন্য প্রার্থীদের ভারতে বা অন্য দেশে গিয়ে আবেদন করতে হয়, যা সময় ও অর্থের অপচয়। অনেক সময় ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতার কারণে ভ্রমণ বা অন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজও বিঘ্নিত হয়। আবার বর্তমানে বেশিরভাগ ইউরোপীয় দেশ তাদের ভিসা অ্যাপ্লিকেশন প্রসেসিং আউটসোর্স করেছে। এতে আবেদনকারীরা সরাসরি দূতাবাস থেকে সেবা পেতে ব্যর্থ হন। দূতাবাস এবং ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার বাংলাদেশে স্থাপিত হলে আবেদনকারীরা সহজে এবং দ্রুত সেবা পাবেন।

মানববন্ধনে উপস্থিত রবিউল আলম নামের একজন বলেন, বাংলাদেশ থেকে শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী এবং পেশাজীবীদের মধ্যে ইউরোপে যাওয়ার আগ্রহ বেড়েছে। এতে করে ভিসা প্রক্রিয়ার সুবিধা বাড়ানো দরকার, যাতে বৈধভাবে ভ্রমণ ও অভিবাসন সহজ হয় এবং অবৈধ উপায়ে ইউরোপে যাওয়ার প্রবণতা হ্রাস পায়। এক্ষেত্রে বর্তমান সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আন্তরিকতাই যথেষ্ট। তিনিই ইউরোপীয় দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের আরও উন্নতি ঘটানোর জন্য দূতাবাস স্থাপনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে পারেন। এতে করে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের সুযোগ বাড়বে।

শাহজালাল নামের এক ভিসাপ্রত্যাশী বলেন, ভারতের খামখেয়ালির কারণে প্রতিনিয়ত হাজার-হাজার ইউরোপের ভিসাপ্রত্যাশী বাংলাদেশিদের চরম বিপত্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। শুধুমাত্র ভারতীয় ভিসা না পাওয়ার কারণে কয়েক হাজার বাংলাদেশি ইউরোপের অ্যাম্বাসি ফেস করতে পারছেন না। ফলে বাংলাদেশিরা ইউরোপের ভিসা পাচ্ছেন না। অন্যদিকে, দেশ বিশাল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আবার ভিসার জন্য অ্যাম্বাসি ফেস করতে যাওয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের গড়ে জনপ্রতি এক-দেড় লাখ টাকা খরচ হচ্ছে। অথচ বাংলাদেশে দূতাবাস বা ভিসা সেন্টার থাকলে এই বাড়তি খরচ হতো না। কারো ইচ্ছা বা অনিচ্ছায় ওপর আমাদের ভিসা পাওয়া না পাওয়া নির্ভর করতো না।

তিনি আরও বলেন, ভিসা প্রক্রিয়া সহজতর হলে দেশও বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারতো। তাই এই মুহূর্তে আমাদের একটাই চাওয়া যেন, বাংলাদেশে ইউরোপীয় দেশগুলোর দূতাবাস বা ভিসা সেন্টার চালুর ব্যবস্থা নেওয়া হয়। দাবি বাস্তবায়ন হলে শুধু ভিসা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নয় বরং ইউরোপীয় দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার নতুন দ্বার খুলতে পারে।

আরএইচটি/কেএ