চট্টগ্রাম নগরীর ২নং গেট এলাকায় মো. শাহাদাত হোসেন নামে এক যুবকের দুই হাত স্টিলের পাইপের সঙ্গে বেঁধে তাকে গানের তালে তালে মারধর করে হত্যার ঘটনায় আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-৭।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মেহেদী হাসান সাগর (২৮) ও মো. শান্ত (২৮)।

সোমবার (৭ অক্টোবর) র‍্যাব-৭ এর বিবৃতির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

বিবৃতিতে জানা যায়, রোববার (৬ অক্টোবর) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে নগরীর ডোবারপাড় থেকে সাগরকে এবং জামতলা এলাকা থেকে শান্তকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার মেহেদী হাসান সাগর খুলশী থানাধীন এমএস ‍দুলালের ছেলে এবং মো. শান্ত খুলশী থানাধীন জামতলার নুর ইসলামে ছেলে।

সাগরের দেওয়া তথ্যে খুলশী থানার জামতলা এলাকা থেকে আসামি মো. শান্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তারা ভিকটিম মো. শাহাদাত হোসেনকে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।

গত ১৩ আগস্ট আসামি মেহেদী হাসান সাগর ভিকটিম শাহাদাত হোসেনকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে যান এবং পরে তাকে অপহরণ করে ভিকটিমের স্ত্রীর কাছে মুক্তিপণ দাবি করেন। জিজ্ঞাসাবাদে সাগর বিষয়টি স্বীকার করেন। এছাড়াও জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার মো. শান্ত ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার কথা স্বীকার করে।

একই ঘটনায় ২৪ সেপ্টেম্বর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকা ফরহাদ আহমেদ চৌধুরী (৪২), মো. সালমান (১৬) ও আনিসুর রহমান ইফাতকে (১৯) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

সেদিন যা ঘটেছিল

২০ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ২০ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক মিলে একটি ছেলেকে একটি গোল চত্বরের দুটি স্টিল পোলের সাথে বেঁধে রেখেছেন।

যুবকদের কয়েক জনের হাতে লাঠি। প্রায় অন্ধকার সড়কের মাঝখানে ওই গোলচত্বরে বেঁধে রাখা যুবককে ঘিরে গান গাইছেন যুবকেরা।

মধু কই কই বিষ খাওয়াইলা শিরোনামের গান গাইতে গাইতে ওই যুবকদের মধ্যে দু-তিনজন ভিডিও করছিল। বেঁধে রাখা যুবকের মাথা বারবার ঝুঁকে পড়ছিল। দুজনকে গিয়ে তার মাথা তুলে দিতেও দেখা গেছে।

বেঁধে রাখা ওই যুবকের পরনে ছিল আকাশি রঙের টি-শার্ট এবং ছাই রঙা প্যান্ট। নিহত শাহাদাতকে যেখানে বেঁধে রাখা হয় তার পিছনে একটি ফ্লাইওভারের অংশবিশেষ দেখা যাচ্ছিল।

পুলিশ জানায়, ১৩ আগস্ট নগরীর ২ নম্বর গেট এলাকায় সড়কের মাঝখানে গোল চত্বরে স্টিল পোলের সঙ্গে দুহাত বেঁধে পেটানো হয় শাহাদাত হোসেনকে।

পেটানোর ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বদনা শাহর মাজার গেট এলাকায় পরদিন ১৪ আগস্ট রাতে শাহাদাতের মরদেহ উদ্ধারের পর ১৫ আগস্ট নগরীর পাঁচলাইশ থানায় শাহাদাতের পরিবার অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছিল।

১৪ আগস্ট রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে শাহাদাতের মরদেহ শনাক্ত করেন তার স্ত্রী শারমীন আকতার।

২১ সেপ্টেম্বর ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর শাহাদাতের স্ত্রীকে থানায় এনে সেই ভিডিওটি দেখিয়ে অভিযুক্তদের শনাক্ত করার পর পুলিশ বলছে, ১৩ আগস্ট রাতে মারধরের শিকার ব্যক্তি এবং ১৪ আগস্ট রাতে উদ্ধার হওয়া মরদেহ একই ব্যক্তির অর্থাৎ শাহাদাত হোসেনের।

আরএমএন/পিএইচ