ছবি : সংগৃহীত

প্রতিদিন জাতীয় দৈনিকে অসংখ্য খবর প্রকাশিত হয়। সেইসব খবর থেকে আলোচিত কিছু খবরের সংকলন করা হলো।

ব্যাংক দখলের জন্য দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের আরও ১০ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। যার পরিমাণ ১ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা। চট্টগ্রামের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের তদন্তে ভ্যাট ফাঁকির এই তথ্য পাওয়া গেছে। গত সপ্তাহে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়েছে।

এর পাশাপাশি অন্যান্য খবরগুলো দেখে আসি—

প্রথম আলো

এস আলমের ১২ প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট ফাঁকি ৫০০০ কোটি টাকা

এস আলমের যেসব প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ মিলেছে, সেগুলো হলো এস আলম স্টিলস, চেমন ইস্পাত, এস আলম রিফাইন্ড সুগার, এস এস পাওয়ার, এস আলম পাওয়ার প্ল্যান্ট, এস আলম প্রোপার্টিজ, এস আলম কোল্ড রি-রোলিং মিলস, মাসুদ প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, এস আলম ব্যাগ ম্যানুফ্যাকচারিং মিলস, এস আলম সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ।

কালবেলা

জামাই-শ্বশুর মিলে সোনালী লাইফের ৩৫৩ কোটি লুট

সোনালী লাইফের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব ও পেটি ক্যাশ (খুচরা নগদান বই) থেকে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক দুই চেয়ারম্যান তাদের পরিবার ও ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (সিইও) অন্যান্য কর্মকর্তা অন্তত ৩৫৩ কোটি টাকা তছরুপ করেছেন। এসব অর্থের মধ্যে প্রায় ৪৪ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে।

এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটিকে পারিবারিক সম্পত্তি হিসেবে ব্যবহার করেছেন সাবেক চেয়ারম্যান নুর-ই-হাফসা, ভাগিনা মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস ও তার জামাতা ভারপ্রাপ্ত সিইও মীর রাশেদ বিন আমান। আমানের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির ভাইস চেয়ারম্যান ফৌজিয়া কামরান তানিয়ার বিবাহবিচ্ছেদের পর তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এরপর একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললে কয়েকটি সংস্থা প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। এতে বেরিয়ে আসে সোনালী লাইফের সব অনিয়মের খবর। সর্বশেষ আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) পরিদর্শন প্রতিবেদনেও প্রতিষ্ঠানটির লুটপাটে কুদ্দুস পরিবারের সংশ্লিষ্টতা উঠে আসে।

প্রথম আলো

জেলে না গিয়ে বঙ্গভবনে শপথ নিলাম: ড. ইউনূস

ছাত্রনেতাদের সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ ছিল না। পত্রিকায় টেলিভিশনের নিউজে তাঁদের দেখছিলাম। বরাবর যেভাবে আন্দোলন হয়, এভাবেই দেখছিলাম। আমি তখন বিদেশে ছিলাম যখন এই আন্দোলন ঘনীভূত হচ্ছিল। প্যারিস অলিম্পিকে একটা দায়িত্ব পালন করছিলাম। ওটার ডিজাইনিংয়ে আমি ইনভলভড ছিলাম। এ সময়ে আন্দোলন তুঙ্গে ওঠে। সেই সময় প্যারিসের একটা রাস্তার নাম আমার নামে নামকরণ করা হয়েছিল, সেটার উদ্বোধন করেছিলাম। কাজেই আমি এদিকে দেখছি, ওই দিকেও দেখছি, দূরের দৃশ্য হিসেবে।

সমকাল

বিপুল জায়গা হাতছাড়া মহাপরিকল্পনা আটকা

সংকটের গ্যাঁড়াকলে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক হলগুলোতে এক সিটে ঘুমান দুই শিক্ষার্থী। পড়ার টেবিলও দু’জনের একটি। এটাই প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক আবাসিক শিক্ষার্থীর যুগ যুগের নিয়তি। ছাত্রছাত্রীরা এমন ক্লেশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন পার করলেও কারও যেন দৃষ্টিপাত নেই। 
তবে নতুন আবাসিক হলসহ অবকাঠামোর বিষয়ে কর্তৃপক্ষ মহাপরিকল্পনা নিলেও বাস্তবায়ন বহুদূর। ঢাবি প্রশাসনের মহাপরিকল্পনায় বড় বাধা ভবন নির্মাণে জায়গার স্বল্পতা। এর মধ্যে আবার বিশ্ববিদ্যালয়েরই ১২ একরের বেশি জমি হাতছাড়া হয়ে আছে। ঢাবির এস্টেট অফিসের অবহেলার কারণে এসব জমি নিয়ন্ত্রণেও নেওয়া যাচ্ছে না বলে আছে অভিযোগ। ফলে ১৯২১ সালে ৬৫০ একর জমি নিয়ে যাত্রা শুরু করা বিশ্ববিদ্যালয়টির মানচিত্র এখন ২৭৪ একরে এসে ঠেকেছে। 
ঢাবির জমিতে যেসব প্রতিষ্ঠান পোদ্দারি করে যাচ্ছে এর মধ্যে রয়েছে–  পরমাণু শক্তি কেন্দ্র, শিক্ষা প্রকল্প ও উন্নয়ন গবেষণা ফাউন্ডেশন (ফ্রেপড), নীলক্ষেত উচ্চ বিদ্যালয়, এশিয়াটিক সোসাইটি ও এর সংলগ্ন বঙ্গবাজারের কিছু অংশ, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সাবস্টেশন, নীলক্ষেত ও বাবুপুরা পুলিশ ফাঁড়ি উল্লেখযোগ্য।

কালবেলা

বাগমারার ‘দুষ্ট জমিদার’ সাবেক এমপি এনামুল

রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সাবেক সংসদ সসদ্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের আচরণ ছিল আগের আমলের দুষ্ট জমিদারদের মতো। সুযোগ পেলেই ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে দখলে নিতেন অন্যের জমি। ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে এলাকায় শত শত বিঘা জমি দখলের পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় নিয়োগ-বাণিজ্যের মাধ্যমে এনামুল হক হাতিয়ে নিয়েছেন হাজার কোটি টাকা।

ভূমি দখল, বিভিন্ন পুকুর খনন প্রকল্প, সরকারি-বেসরকারি চাকরি দেওয়া, তাহেরপুর পৌরসভার যে কোনো বরাদ্দ হলেই তাকে নির্দিষ্ট হারে কমিশন দিতে হতো। বাগমারা উপজেলার বরাদ্দকৃত সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বাজেট থেকেও ১০ শতাংশ কমিশন নিতেন তিনি।

বাংলাদেশ প্রতিদিন

দাপট লুটপাটে লতিফ অদ্বিতীয়

এম এ লতিফ নবম সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হলেও বাগিয়ে নেন আওয়ামী লীগের টিকিট। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি তাকে। চট্টগ্রাম-১১ আসনে টানা চারবারের এমপি হয়ে সবকিছুই নেন নিজের নিয়ন্ত্রণে। এ নির্বাচনি এলাকায় রয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর, কাস্টমস হাউস, ইপিজেড, বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম চেম্বার, তেল শোধনাগারসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।

এ এলাকাকে দেশের অর্থনীতির হৃৎপি- বলা হয়। ১৫ বছর এ হৃৎপিন্ডে একচ্ছত্র দাপট দেখিয়েছেন এম এ লতিফ। গত দেড় দশকে স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠেছিলেন সুযোগসন্ধানী এই ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ। এর বাইরেও বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্কিত লতিফ এখন একাধিক মামলায় কারাগারে।

যুগান্তর

নিয়ন্ত্রণ ঠিকাদারের হাতে

বাংলাদেশের নাগরিকদের ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরির কাজ ২০০৭ সালে শুরু করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বর্তমানে ভোটার তালিকায় নাম আছে সোয়া ১২ কোটি নাগরিকের। ভোটারদের ৪৬ ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে তথ্যভান্ডার বা ডেটা সেন্টার গড়ে তুলেছে ইসি।

ডেটা সেন্টারের সার্ভারের প্রযুক্তিগত নিয়ন্ত্রণ নেই নির্বাচন কমিশনের। বেসরকারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টাইগার আইটির হাতে মূলত নিয়ন্ত্রণ। ডেটা সেন্টারের ক্রেডেনসিয়াল, সোর্স কোড, নেটওয়ার্ক ডায়াগ্রাম, সিস্টেম আর্কিটেকচারসহ সবকিছুই ওই প্রতিষ্ঠান এবং এর সহযোগী আইবিসিএস প্রাইমেক্স সফটওয়্যার নামের প্রতিষ্ঠানের কাছে। নিয়ন্ত্রণ না পাওয়া পর্যন্ত ডেটাবেজের নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে চিন্তায় আছে সরকার ও নির্বাচন কমিশন। নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

ইত্তেফাক

পূর্বাঞ্চলে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা: সিপিডি

দেশের পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যায় কৃষি ও বনায়নে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এ বন্যায় ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরসহ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। যা জিডিপির দশমিক ২৬ শতাংশ। এরমধ্যে কৃষি ও বন খাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ ৫ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা।

যুগান্তর

ফজলে করিমের কথা ছাড়া নড়ত না ‘গাছের পাতাও’

চট্টগ্রামে ১৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে চট্টগ্রাম-৬ রাউজান সংসদীয় আসনটি ছিল একেবারেই ব্যতিক্রম। এ আসনে কখনো ভোটে, কখনো বিনা ভোটে নির্বাচিত পাঁচবারের সংসদ-সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ছিলেন সর্বেসর্বা। তার কথা ছাড়া যেন এখানে ‘গাছের পাতাও’ নড়ত না। বিএনপি-জামায়াত-মুনিরিয়াসহ ভিন্নমতের লোকজন তো বটেই; নিজ দলের লোকজনও তার অনুগত না থাকলে কিংবা কোনো কারণে বিরোধিতা করেছেন মনে হলে তাকে এলাকাছাড়া করেছেন ফজলে করিম। নিজ দলের লোক নির্বাচন করে মেয়র নির্বাচিত হলেও একদিনের জন্যও মেয়রের চেয়ারে বসতে পারেননি।

আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় অনেক নেতা রয়েছেন, যাদের বাড়ি রাউজানে। কোনো একদিন যদি প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠেন, সেজন্য তাদের এলাকায় যেতে দেননি ফজলে করিম। ভিন্নমতের অনেক চিকিৎসকের চেম্বার বন্ধ করে দিয়ে এলাকাছাড়া করার নজিরও রয়েছে। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের অন্তত ২০০ শিক্ষককে বাধ্য করেছেন পদত্যাগে। আবার তার মন জয় করে অনেকে লুটে নিয়েছেন সুযোগ-সুবিধা। রাউজান নোয়াপাড়া কলেজের এক শিক্ষিকার জন্য সরকারি টাকায় কলেজে ‘বাসভবন’ গড়েছেন। গ্যাসের আবাসিক সংযোগ বন্ধ থাকায় ওই বাসভবনে নিয়েছেন ইন্ডাস্ট্রিয়াল সংযোগ। সেই শিক্ষিকা নিজের স্বামীকেও দিয়েছেন ডিভোর্স। সালসাবিল চৌধুরী নামে ওই শিক্ষিকা ফজলে করিমের ‘বান্ধবী’ হিসাবেই এলাকায় পরিচিত।

এছাড়া পাহাড়ে এবার হচ্ছে না কঠিন চীবর দান উৎসব; বরিশালের ‘সৈয়দ ব্রাদার্স’ সব আমলেই বেপরোয়া; কাঁচামরিচ ৪০০, সবজিতে আগুন; মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়াচ্ছে কার ব্যর্থতায়; স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা / কোনো ঝুঁকি নেই শান্তিপূর্ণভাবে পূজা হবে; ৫০০ কোটির যন্ত্রাংশ বিক্রি ৬৮ কোটিতে; গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রতিশোধ নিতে ‘জুলাই হত্যা’ মামলায় নাম; ডিসি নিয়োগে দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদকে আবেদন; আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ৩৩ শতাংশ ঋণই খেলাপি—সংবাদগুলো বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।