ডিসেম্বরে সড়কে নিহত ৪৬৪ জন
২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪০২টি। আর এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪৬৪ জন ও আহত হয়েছেন ৫১৩ জন।
রোববার (৩ ডিসেম্বর) সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিসেম্বর মাসে এককভাবে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বেশি প্রাণহানি ঘটেছে। ১৩৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৪৭ জন। এই সময়ে ৫টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহত হয়েছেন। আর ১২টি রেলপথ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৯ জন, আহত ৪ জন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, নিহতদের মধ্যে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ১ জন, ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা ১ জন, পুলিশ সদস্য ৫ জন, সেনা সদস্য ২ জন, স্কুল-কলেজ-মাদরাসার শিক্ষক ১৩ জন, পল্লী চিকিৎসক ৩ জন, ডাক পিওন ১ জন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ১ জন, মানসিক প্রতিবন্ধী ৪ জন, স্থানীয় পত্রিকার সাংবাদিক ৩ জন, এনজিও কর্মকর্তা-কর্মচারী ১১ জন, ওষুধ ও বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী বিক্রয় প্রতিনিধি ১৮ জন, পোশাক শ্রমিক ৯ জন, ইটভাঙ্গা শ্রমিক ৩ জন, ট্যাংক লরি শ্রমিক ২ জন, স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন ব্যবসায়ী ৪২ জন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ৮ জন এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৬৯ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১২৪টি জাতীয় মহাসড়কে, ১২৯টি আঞ্চলিক সড়কে, ১০৪টি গ্রামীণ সড়কে, ৪২টি শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে (ফেরিঘাট, নদীর তীর) ৩টি সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৭৭টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৪৭টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১৩১টি পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেওয়া, ৩৮টি যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ৯টি অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন দেশে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে ১০টি বিষয় উল্লেখ করেছে।
সেগুলো হচ্ছে- ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; বেপরোয়া গতি; চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; তরুণ ও যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।
দুর্ঘটনা কমাবে ১০টি সুপারিশও জানিয়েছে ফাউন্ডেশনটি।
সেগুলো হচ্ছে- দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বাড়াতে হবে; চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে; বিআরটিএ’র সক্ষমতা বাড়াতে হবে; পরিবহনের মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা পার্শ্বরাস্তা তৈরি করতে হবে; পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে; গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে; রেল ও নৌ-পথ সংস্কার ও সম্প্রসারণ করে সড়ক পথের ওপর চাপ কমাতে হবে; টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে এবং সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
এইচএন/জেডএস