বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের দেখতে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে গেছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম। এ সময় চিকিৎসাধীন একজনের অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় বিদেশে নেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।

শনিবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, হাসপাতালে বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা ৬৭ জন চিকিৎসা নিয়েছেন, তারা অনেকে চলে গেছেন আবার হয়তো ফলোআপে আসবেন। বর্তমানে ১৪ জন বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন আছেন, এর মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাকে এখানে আর চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠানো হবে। এজন্য আমরা রাশিয়া অস্ট্রেলিয়া জাপানসহ কয়েকটি দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আপনারা তো বুঝতে পারছেন, এখানে চিকিৎসার ব্যাপারে অনেক ব্যয় ছিল, সেগুলো নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা এই চিকিৎসার টাকা নেবে না বলে আমাদের জানিয়েছেন। দেশের বাইরে আমাদের তাকে পাঠানোর আলোচনা চলছে, তবে কোন দেশে পাঠানো হবে সে বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। 

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, আপনারা জানেন কয়েকদিন আগে চীনের একটি চিকিৎসক দল বাংলাদেশে এসেছিল, তাদের কয়েকজনের ব্যাপারে অবজারভেশন ছিল, তারা আবার সেটি চীনে গিয়ে আমাদের জানাবে। চীনের চিকিৎসক দল জানিয়েছে, বাংলাদেশের চিকিৎসকরা তাদেরকে ভালোমানের চিকিৎসা দিয়েছে। নেপালের ৩ সদস্যের একটি চক্ষু চিকিৎসক দল আমাদের দেশে আছে। 

আন্দোলনে অনেকে আহত হয়েছে তারা তাদের চিকিৎসার টাকা পাচ্ছে না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার মনে হয় এই কথাটি ঠিক নয়। আমরা ৮ তারিখে (আগস্ট) দায়িত্ব নেওয়ার পর ঘোষণা দিয়েছি অর্থাৎ সরকার বলেছে আপাতত সব চিকিৎসার ব‍্যয় সরকার নেবে। আমরা সব হাসপাতাল থেকে তালিকা নিয়েছি এবং সেই তালিকা অনুযায়ী আহত রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। তাদের কাছে জিজ্ঞেস করুন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় কারো কোনো টাকা পয়সা দিতে হয়েছে কিনা। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে এমন কোনো কমপ্লেইন নেই, যদি কোনোন কমপ্লেইন থাকে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

ডেঙ্গু প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা স্থানীয় সরকার বিভাগের সঙ্গে কথা বলেছি এবং কয়েক দফা বৈঠক করেছি। এখানে দুটি বিষয় আছে, একটি হচ্ছে চিকিৎসা সেবা দেওয়া, আরেকটি হচ্ছে সচেতনতা। কুর্মিটোলা হাসপাতাল, ডিএনসিসি হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে শয্যার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে এবং এখানে অতিরিক্ত চিকিৎসকও দেওয়া হয়েছে। এখানে কয়েকটি টিম করে দেওয়া হয়েছে। 

জনগণ যদি সচেতন হয় তাহলে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে জানান তিনি।

স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাজমুল হোসেন বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ গতবছরের তুলনামূলক কম। এই বছর মৃত্যুর সংখ্যাও বেশ কম। তবে কোনো মৃত্যুই কাম্য না। আমরা মৃত্যুর সংখ্যা কীভাবে রোধ করা যায় সেই ব্যাপারে কাজ করছি। সব হাসপাতালে আমরা ডেঙ্গুর চিকিৎসায় যেসব প্রয়োজনীয় চিকিৎসাপত্র দেওয়া দরকার সেগুলো পাঠিয়ে দিয়েছি। আরো লাগলে সেগুলো দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এসএএ/জেডএস