নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয় ও মাঠ পর্যায়ের পদায়নে বৈষম্য করছে বলে অভিযোগ করেছেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা। একইসঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতিতে পদোন্নতিপ্রাপ্তদের যথাযথ স্থানে পদায়নের দাবিও করেছেন ইসি কর্মকর্তারা।

ইসি সচিব শফিউল আজিমের কাছে তারা ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত লিখিত দাবি জমা দিয়েছেন।

এতে উল্লেখ করা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন স্তরে শূন্যপদে এ পর্যন্ত সকল পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। অতীব দুঃখের বিষয় বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে রাজনৈতিক প্রভাব ও আর্থিক সংশ্লিষ্টতার কারণে বিপুল সংখ্যক পদোন্নতি প্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিভিন্ন পদে যোগ্যতর স্থানে পদায়ন না করে জুনিয়র এবং নীচের গ্রেডের পদের কর্মকর্তাদেরকে উচ্চতর পদে পদায়ন করে চরম বৈষম্যমূলক অবস্থার সৃষ্টি করা হয়েছে। যা বর্তমান ছাত্র-জনতার বিপ্লবী সরকারের মূল চেতনার পরিপন্থি। উদাহরণ স্বরূপ মাঠ পর্যায়ের দশ অঞ্চলে চতুর্থ গ্রেডের দশজন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত কর্মকর্তা থাকা সত্ত্বেও খুলনা, রাজশাহী ও কুমিল্লা অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার পদে নিম্নতর ৫ম গ্রেডের কর্মকর্তাদের পদায়ন করা হয়েছে।

এতে আরো বলা হয়েছে, মাঠ পর্যায়ে ১৯টি ৫ম গ্রেডের সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার পদ রয়েছে। এর মধ্যে আটটি জেলা যথা- ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, সিলেট, বগুড়া, ঢাকা দিনাজপুর, কুষ্টিয়া ও খুলনা জেলায় সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার পদে জুনিয়র ৬ষ্ঠ গ্রেডের এবং অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন অফিসারদের দীর্ঘদিন যাবত পদায়ন করে রাখা হয়েছে। অথচ ওই সমস্ত পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত যোগ্যতর কর্মকর্তাদের দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যমূলকভাবে সচিবালয়ে দপ্তরবিহীনভাবে বসিয়ে রাখা হয়েছে।

মাঠ পর্যায়ে ৪৫টি ষষ্ঠ গ্রেডের জেলা নির্বাচন অফিসারের পদ রয়েছে এসব পদে পদায়ন করার ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতা তালিকা অনুসরণ না করে অনেক ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতা তালিকার নিচে থেকে এবং অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন অফিসারদের দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করে মাঠ পর্যায়ে এবং সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠতা তালিকার সিনিয়র কর্মকর্তাদের বঞ্চিত রাখা হয়েছে।

এজন্য নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও মাঠ পর্যায়ের অফিসসমূহে পদোন্নতি প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের যথাযোগ্য স্থানে পদায়ন নিশ্চিত করা, কোনো ক্ষেত্রে কোনো পদে যোগ্যতর কর্মকর্তার ঘাটতি দেখা দিলে জ্যেষ্ঠতা তালিকা অনুসারে পরবর্তী কর্মকর্তাকে পদায়ন করার দাবি জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির একাধিক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকার পতনের পর নির্বাচন কমিশনের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছে। সেই সাথে বিভিন্ন জায়গায় পদায়নেও নিয়মনীতি মানছেন না ইসি সচিব। কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের সুপারিশে দুইজন এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের সিন্ডিকেট প্রভাব খাটিয়ে পরবর্তীতে আরও তিনজন কর্মকর্তাকে ওএসডি করেছে। ইসি কর্মকর্তাদের এই সিন্ডিকেট বিএনপির বিভিন্ন নেতাদের দিয়ে ফোন দিয়ে সচিব শফিউল আজিমকে চাপে রাখছে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এজন্য বেশিরভাগ কর্মকর্তারা এক হয়ে সচিবকে বৈষম্যহীন পদায়নের জন্য চিঠি দিয়েছে। একতরফাভাবে পদায়ন করা হলে ভবিষ্যতে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে বলে জানান কর্মকর্তারা।

এসআর/পিএইচ