সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন স্টাফ আলোচিত জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে অনুসন্ধান শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনের ব্যক্তিগত স্টাফ হিসেবে নিয়োগ পান জাহাঙ্গীর আলম। যার কাজ ছিল সুধা সদনে খাবার পানি সরবরাহ করা। এ কারণে তার নাম হয় পানি জাহাঙ্গীর। পরবর্তীতে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হলে সে নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে পরিচয় দেওয়া শুরু করে। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মচারী পরিচয় ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের পদ, চাকরি নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য করেন জাহাঙ্গীর। বাগিয়েছেন নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির পদ, গড়েছেন কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ।

তিনি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মচারী পরিচয় ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে তিনি ৪০০ কোটি টাকার মালিকসহ গাড়ি-বাড়ির মালিক হয়েছেন। এ ছাড়া, গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি নোয়াখালী-১ আসন (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন।

বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জানা যায়, জাহাঙ্গীরের স্ত্রী কামরুন নাহারের নামে রয়েছে ৭ কোটি ৩০ লাখ টাকার সম্পদ। যার মধ্যে ধানমন্ডিতে ২৩৬০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, একটি গাড়ি, বিভিন্ন ব্যবসায় মূলধন ৭৩ লাখ টাকা এবং ব্যাংকে এক কোটি ১৭ লাখ টাকার তথ্য পাওয়া যায়।

জাহাঙ্গীরের নিজের নামে তার এলাকায় চার কোটি টাকার কৃষি ও অকৃষি জমি, মোহাম্মদপুর ও নিউমার্কেটে দুটি দোকান, মিরপুরে ৭ তলা ভবন ও দুটি ফ্ল্যাট, গ্রামের বাড়িতে একতলা ভবন এবং  চাটখিলে পৈতৃক ভিটায় চারতলা বাড়ি রয়েছে বলে জানা যায়। এ ছাড়া, তার পরিবারের একটি আটতলা বাড়ি রয়েছে নোয়াখালী শহর মাইজদীর হরিনারায়নপুর এলাকায়। যার ১৯টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ১৮টি ভাড়ায় দেওয়া আছে।

সিআইডির মুখপাত্র বলেন, অস্থাবর সম্পদ হিসেবে তার নগদ ও ব্যাংক মিলিয়ে দুই কোটি ৫২ লাখ দুই হাজার ৪৩০ টাকা, ডিপিএস দুই লাখ ৭৫ হাজার টাকা, এফডিআর এক কোটি ৩০ লাখ ৫৫ হাজার ৯৬৮ টাকা এবং তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবের স্থিতি ২৭ লাখ ৯৭ হাজার ৪৫৫ টাকা, ডিপিএস ১৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং অংশীদারি ফার্মে মূলধন ৬ কোটি ২৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকার তথ্য পাওয়া যায়। জাহাঙ্গীর আলম এ কে রিয়েল এস্টেট লিমিটেড নামের একটি ডেভেলপার কোম্পানির মালিক এবং হুন্ডির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেছেন।

এমএসি/এমজে