আমার দেশ পত্রিকার সাবেক সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে আনা মামলা প্রত্যাহার এবং তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে ইনকিলাব মঞ্চ। 

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে। 

এ সময় শিক্ষার্থীরা, ‘সাহসের অপর নাম, মাহমুদুর রহমান,’ ‘জেলের তালা ভাঙব, মাহমুদ ভাইকে আনব,’ ‘ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। 

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ইসলাম হাদী বলেন, মাহমুদুর রহমান প্রথম ব্যক্তি যিনি ফ্যাসিস্ট সরকারকে নৈতিকতার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন। তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি একজন সাংবাদিক হিসেবে, একজন সম্পাদক হিসেবে ফ্যাসিবারের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন। তিনি একাই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়ে গেছেন। তিনি বলেছিলেন, শাহবাগে ফ্যাসিবাদের সূচনা হচ্ছে। এই কারণে ফ্যাসিবাদের দোসররা তার বিরুদ্ধে প্রতিটি জেলায় জেলায় মিথ্যা মামলা দিয়েছে। এরপর তাকে গ্রেপ্তার করে টানা ৩৯ দিন রিমান্ডে নিয়ে নির্মম নির্যাতন করেছে।

তিনি বলেন, সরকার তাকে আটকের পর দুইটি দাবি জানিয়েছিল। প্রথমত, তিনি যেন নির্বাহী বিভাগের কাছে ক্ষমা চান। কিন্তু তিনি অন্যায়ভাবে কোনো সুবিধা না নিয়ে বলেছিলেন, আমি ফ্যাসিবাদের কাছে মাথানত করলে আমার বিরুদ্ধে এমন শাস্তি নেমে আসতো না। তাই আমি কখনো ক্ষমা চাইব না। আমরা মাহমুদুর রহমানকে আদর্শ হিসেবে ধারণ করে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন, লড়াই চালিয়ে যাব।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনিরুজ্জামান বলেন, মাহমুদুর রহমান ভাই ছিলেন অকুতোভয় নির্ভীক সৈনিক, যিনি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার ছিলেন। যখনই তিনি ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লেখা শুরু করলেন, ঠিক তখনই তার বিরুদ্ধে স্বৈরাচারের পক্ষ থেকে মামলা দেওয়া শুরু হয়। একপর্যায়ে তিনি কুষ্টিয়ার আদালতে মামলার হাজিরা দিতে গেলে তার ওপর হামলা করে স্বৈরাচারের দোসররা। সিএমএম কোর্ট চাইলে তার শাস্তি মওকুফ করতে পারতেন, কিন্তু সেটি না করে তার শাস্তি বহাল রাখেন। আমরা আজকের মানববন্ধন থেকে মাহমুদুর রহমানের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাই।

আমার দেশ পত্রিকার বার্তা সম্পাদক জায়েদ চৌধুরী বলেন, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সবসময় সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে আধিপত্যবাদীদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী ভূমিকা রেখেছিলেন। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে সাহস জুগিয়ে এসেছেন। স্বৈরাচারী সরকারের মদদে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে রাজধানীর সাতরাস্তা ও কুষ্টিয়ায় হামলা করা হয়েছিল। এরপর তাকে বাধ্য হয়ে দেশের বাইরে নির্বাসনে যেতে হয়। এরপর দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে তিনি ফিরে এসে আত্মসমর্পণ করলে তাকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। মাহমুদুর রহমানকে যদি মুক্তি না দেওয়া হয়, তাহলে আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে মুক্ত করা হবে। 

মানববন্ধনে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য ও ঢাবি শিক্ষার্থী ফাতিমা তাসনিম, সাংবাদিক আবদুল আনোয়ার ঠাকুর, জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষে আতিক মুজাহিদ, ঢাবি শিক্ষার্থী মাসুদুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। 

কেএইচ/কেএ