ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিজের এলাকা নারায়ণগঞ্জে অস্ত্র হাতে প্রতিরোধে নেমেছিলেন সাবেক এমপি শামীম ওসমান। গণ–অভ্যুত্থানের দুদিন আগেও দলের কার্যালয়ে প্রকাশ্যে দেখা গিয়েছিল তাকে। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সূচনা হলে আর দেখা যায়নি শামীম ওসমানকে। ইতোমধ্যে সাবেক এই এমপির বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা হলেও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। অবশেষে সব রহস্যের অবসান ঘটেছে একটি ভিডিও থেকে— শামীম ওসমানের দেখা মিলেছে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে হজরত নিজামউদ্দিনের দরগায়। শেখ হাসিনার জন্য নিজামউদ্দিন আউলিয়ার মাজারে দোয়া করিয়েছেন তিনি।

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের এক মাসের মাথায় নিজামউদ্দিনের দরগায় মনিরুল হক নামে এক ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফারের ক্যামেরায় ধরা পরেন শামীম ওসমান। চলতি মাসের শুরু দিকে করা ওই ভিডিওটি সংবাদ মাধ্যমের কাছে দিয়েছেন ফটোগ্রাফার ও নির্মাতা মনিরুল হক। 

ভিডিও সূত্রে জানা গেছে, মাজারে এক ব্যক্তিকে দিয়ে দোয়া করান শামীম ওসমান। ভিডিওর উর্দু ভাষার সেই দোয়া বাংলা করলে হয়, ‘শামীম ওসমান সাহেবকে সালাম পৌঁছানোর সামর্থ্য দাও। শেখ হাসিনা সাহেবাকে শানদার সাফল্য দান করে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার ভাগ্য দান করো।’

এদিকে সেদিনের দৃশ্য সংবাদ মাধ্যমের কাছে বর্ণনা করেছেন প্রত্যক্ষদর্শী ও ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার মনিরুল। তিনি জানান, ভারতের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য স্নাতকোত্তর চূড়ান্ত পরীক্ষা শেষ করে নিজামুদ্দিনের দরগায় ঘুরতে গিয়েছিলেন। এ সময় হঠাৎ ‘বাংলাদেশ’ শব্দ শুনে তাকালে দেখেন এক ব্যক্তি বাংলাদেশের নাম উচ্চারণ করে দোয়া করছেন। তখন সঙ্গে সঙ্গে মোবাইলের ক্যামেরা চালু করে ভিডিও করা শুরু করেন তিনি। 

মনিরুল জানান, তিনি সেখানে শামীম ওসমানকে দেখে অবাক হন। ওই সময় শামীম ওসমানের সঙ্গে তার পরিবারের সম্ভবত আরও তিনজন সদস্য ছিলেন। পরে তিনি শামীম ওসমানকে অনুসরণ করতে থাকেন। দরগাহের এক পাশে থাকা খাবার জায়গায় শামীম ওসমান ও তার পরিবারের সদস্যদের তবারক বিতরণ করতে দেখেন তিনি। এমনকি যিনি দোয়া পড়ছিলেন, তাকে টাকাও দিতে দেখেন।

শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালান শামীম ওসমান ও তার বাহিনী। ছবি- সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার গণ–অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর আওয়ামী লীগের অনেক নেতা ও এমপি-মন্ত্রী গোপনে দেশ ছাড়েন। এর মধ্যেই নারায়ণগঞ্জের আলোচিত নেতা শামীম ওসমান সপরিবার গোপনে দেশ ছাড়েন।  

এমএসএ