দেশের শিল্প যেন হাতছাড়া না হয়, সেজন্য শ্রমিক-মালিক-সরকার সবাই মিলে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। 

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সম্প্রতি দেশে চলমান শ্রমিক অসন্তোষের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিকপক্ষ এবং মালিকপক্ষের যৌথ বিবৃতি বিষয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। 

উপদেষ্টা বলেন, সরকার গঠনের পর থেকে দেশে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিটি সেক্টর থেকেই বৈষম্যের শিকার মানুষ তাদের দাবিগুলো নিয়ে আসছে। একইভাবে শ্রমিকেরাও তাদের দাবি নিয়ে এসেছে। এই সমস্যা দীর্ঘদিনের। বিগত সময়ে শ্রমিকদের সব দাবি দমিয়ে রাখা হয়েছে। ২০২৩ সালে তাদের আন্দোলনে হামলা করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, ন্যায্য দাবি পূরণে আমরা প্রথমদিন থেকেই কাজ করে যাচ্ছি। সব পক্ষের সঙ্গে বার বার আলোচনা হচ্ছে। ১৮টি দাবি আমরা আইডেনটিফাই করেছি। মালিক ও শ্রমিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে একটি সমাধানে পৌঁছানো গিয়েছে।

উপদেষ্টা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে আমরা বলতে চাই— আপনাদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। আপনাদের প্রতি আহ্বান থাকবে দেশের শিল্পকে বাঁচানোর জন্য, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য, রক্তের বিনিময়ে অর্জিত নতুন বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আপনারা নিজ নিজ কর্মস্থলে ফিরে যাবেন। আগামীকাল থেকে প্রতিটি কারখানা যেন চলমান থাকে, আমাদের ইন্ডাস্ট্রি যেন বেঁচে থাকে, আমাদের শিল্প যেন হাতছাড়া না হয়, সেজন্য শ্রমিক-মালিক-সরকার সবাই মিলে কাজ করব।

তিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান থাকবে— আপনার কর্মস্থলে ফিরে যাবেন, দেশের শিল্প না বাঁচলে শ্রমিকও বাঁচবে না. সরকারের প্রয়োজন হবে না, মালিকও বাঁচবে না। তাই আমাদের শিল্পকে বাঁচাতে হবে। আমাদের ইন্ডাস্ট্রি যেন আমাদের হাতে থাকে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। মালিকপক্ষের প্রতি আমাদের আবেদন শ্রমিকদের বকেয়া বেতন দ্রুত পরিশোধে আপনারা ব্যবস্থা নেবেন। 

ইন্ডাস্ট্রি অল বাংলাদেশ কাউন্সিলের সাবেক মহাসচিব কুতুব উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার যেসব ঘোষণা দিয়েছে, শ্রমিক ভাই-বোনেরা তা মেনে নিয়ে কাজে ফিরে যাবেন। প্রতিষ্ঠান বাঁচলে আমরা সবাই বাঁচব। আমরা শ্রমিক প্রতিনিধিরা সবসময় শ্রমিকদের পাশে থাকব। 

বিজিএমইএ সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, আশুলিয়ায় বড় কারখানাগুলো অনেক দিন ধরে বন্ধ আছে। সরকার, বিজিএমইএ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করার পরও এই সমস্যার সমাধান করতে পারিনি। সেখানে আমাদের শ্রমিক নেতারাও কাজ করছেন। অবশেষে সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় আমরা একটি সম্মিলিত সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি। দু-একটি পয়েন্টে আমাদের কষ্ট হলেও আমরা আলোচনার মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, শ্রমিক ভাই-বোনদের প্রতি আমার আহ্বান থাকবে তারা যেন যেকোনো আলোচনা ফ্যাক্টরিতে বসেই করেন। রাস্তা যেন বন্ধ না হয়, ভাঙচুর যেন না হয়।

এসএইচআর/এমজে