পাহাড়ে যে অন্যায়, অত্যাচার ও নির্যাতন হয়েছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। পাহাড়ে বসবাসরত সবাই বাংলাদেশি। আমাদের সবচেয়ে বড় পরিচয় আমরা বাংলাদেশের নাগরিক। পাহাড় ও সমতলে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। পাহাড়ের সমস্যা শিগগিরই সমাধান করতে হবে। একই সঙ্গে সারাদেশে ধর্ষণ, গণধর্ষণ, নির্যাতন বন্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে।

শনিবার ( ২১ সেপ্টেম্বর) প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের নেতৃবৃন্দ।

বক্তারা বলেন, দেশব্যাপী যে মব কিলিং চলছে তা বন্ধ করতে হবে। আমরা চেয়েছিলাম, এমন বাংলাদেশ যেখানে সবাই হাতে হাত রেখে এক সঙ্গে থাকবে। হিংসা বিদ্বেষ ভুলে একে অপরের বিপদে সহযোগিতা করবে। কিন্তু তা হচ্ছে না। আজকে মাত্র ৪০ দিনের ব্যবধানে আমাদের এখানে দাঁড়াতে হয়েছে। কারণ দেশব্যাপী অন্যায় অত্যাচার ও জুলুম নিপীড়ন আগের মতো শুরু হয়েছে। দেশে এখনো ফ্যাসিস্ট আচরণ বিদ্যমান রয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, শুধু নারীদের পর্দা আছে, পুরুষের পর্দা নেই? যেখানে সেখানে নারীদের অপমান অপদস্থ করা হচ্ছে। নারী যদি কোনো অপরাধ করে থাকে তাহলে দেশে আইনের শাসন আছে। দেশে নিয়মনীতি আছে। সেই অনুযায়ী তার বিচার হবে। কিন্তু কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার সেই ক্ষমতা কাউকে দেওয়া হয়নি। নারীরা আজও অবহেলিত। আপনারা লক্ষ্য করবেন, সমন্বয়ক থেকে শুরু করে সব জায়গায় নারীদের পেছনে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। অথচ জুলাই বিপ্লবে নারীরা সবসময় পুরুষের ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জুলাই বিপ্লবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী না মরার কারণ হচ্ছে নারীরা ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। শত শত মানুষের রক্তের বিনিময়ে এই দেশে নতুন করে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। অথচ আজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মব কিলিং হচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা ছাত্রলীগ কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। দেখা গেলো কে মেরেছে সমন্বয়ক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা নিরপরাধ মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কে মেরেছে? দেখা গেলো সমন্বয়ক। তাহলে আমাদের এই স্বাধীনতা কি বিতর্কিত হচ্ছে না? 

মানববন্ধনে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত বলেন, মব কিলিং, সাইবার বুলিংয়ের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দিতে হবে। এই রাষ্ট্র প্রতিটি নাগরিকের অধিকার ও জীবন ব্যবস্থা নিশ্চিতের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র সংস্কার ও পরিচালনার দায়িত্বে যারা আছেন তাদের প্রতি আমার অনুরোধ একটা সাম্যের রাষ্ট্র গঠন করুন। নাগরিকদের অধিকার নিশ্চিত করুন। নারীদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হোন। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. স্নিগ্ধা রেজওয়ানা, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের সাংগঠনিক সম্পাদক তাসলিমা আক্তার বিউটি, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সুস্মিতা রায় প্রমুখ।

ওএফএ/এসকেডি