ভদ্র মাসের শেষ দিনে স্থল নিম্নচাপের প্রভাবে ঝরছে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। এতে কিছুটা ছন্দপতন হয়েছে রাজধানীবাসীর স্বাভাবিক জনজীবনে। সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে অফিস কিংবা কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে সকাল থেকে যারাই বের হয়েছেন তারা কোনো না কোনো ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হয়েছে।

তবে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন ভিন্ন। কোথাও কোথাও গাড়ির চাপ বেশি থাকায় যানজট তৈরি হলেও অনেক জায়গায় গণপরিবহনের তীব্র সংকট। ফলে ছাতা মাথায় কিংবা বৃষ্টিতে ভিজেই গাড়ির জন্য দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে দেখা যায় মানুষজনকে।

রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে রাজধানীর উত্তরা, মিরপুর, ইসিবি, বিশ্বরোড, কুড়িল, নর্দা এলাকা ঘুরে এমন চিত্র চোখে দেখা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর উত্তরা এলাকার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গাড়ির তীব্র চাপ। ফলে তৈরি হয়েছে দীর্ঘ যানজটের। প্রতিটি সিগন্যাল পার হতে যাত্রীদের আগের তুলনায় অতিরিক্ত সময় লাগছে। আবার অনেক মিনিবাস মূল সড়কে দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছে। এতে এর পেছনে তৈরি হচ্ছে গাড়ির সারি।

মিরপুর, ইসিবি চত্বর, কুড়িল এলাকার চিত্র আবার কিছুটা ভিন্ন। সড়ক খালি থাকলেও ছিল গাড়ির সংকট। অনেকক্ষণ পরপর গাড়ি আসার কারণে দীর্ঘসময় বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থেকেও যাত্রীরা বাসে উঠতে পারছিলেন না। প্রতিটি গাড়িই ছিল যাত্রীতে ঠাসা।

বাসের জন্য অপেক্ষায় থাকা মাহমুদুল হাসান নামের এক যাত্রী বলেন, ২০ মিনিট ধরে বাড্ডা রোডের গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছি। প্রতিটি গাড়ির গেট পর্যন্ত মানুষজন ঝুলে দাঁড়িয়ে আছে। একদিকে বৃষ্টি, অপরদিকে অফিস। ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই। যেভাবেই হোক অফিসে পৌঁছাতে হবে। অন্যদিনের তুলনায় আজ গাড়ি অনেক কম মনে হচ্ছে।

এ অবস্থায় বেশি সমস্যায় পড়েছেন নারী যাত্রীরা। রাবেয়া আক্তার নামের এক যাত্রী বলেন, এমনিতেই বাস পুরোপুরি ভরে আসছে। তারপর এখানে থামলেও পুরুষরা উঠতে পারছে। নারীরা অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছি।

বৃষ্টির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন রিকশা চালক, ফুটপাতের ভাসমান দোকানি এবং নিম্ন আয়ের মানুষেরাও। জীবন-জীবিকার তাগিদে বৃষ্টিতে ভিজেই রিকশা চালাতে দেখা গেছে অধিকাংশদের।

অপরদিকে শিগগিরই আবহাওয়ার এমন অবস্থার উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমান জানান, স্থল গভীর নিম্নচাপটি পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে এগিয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে। এ ছাড়া মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিত অংশ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, গভীর স্থল নিম্নচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

এই আবহাওয়াবিদ জানান, এর প্রভাবে রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় বৃষ্টি এবং দেশের অনেক জায়গায় ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে।

আরএইচটি/এসএসএইচ