স্বৈরাচার পতনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন সেক্টরে সংস্কার হলেও গণপরিবহন এখনো স্বৈরাচারী কায়দায় চলছে। এখনো প্রতি মুহূর্তে যাত্রীদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। গুণতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়াও। তাই জনতার সমর্থিত অন্তর্বর্তী সরকারকে বিশেষ নজর দিয়ে গণপরিবহনকে জনবান্ধব করতে হবে।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) যাত্রী অধিকার দিবস উপলক্ষ্যে গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এই দাবি জানান যাত্রী অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক কেফায়েত শাকিল ও যুগ্ম আহ্বায়ক অন্তু মুজাহিদ।

বিবৃতিতে তারা বলেন, বিগত স্বৈরাচারী সরকারের সময় গণপরিবহনের মালিক, কর্মচারী ও যাত্রী সবাই লুটেরা ও চাঁদাবাজদের কাছে জিম্মি ছিল। সড়কে চাঁদাবাজির কারণে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেও গাড়ির মালিক এবং শ্রমিকরা তাদের যোগ্য পাওনা পেত না। যা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে ফেলতো যাত্রীদের। একইসঙ্গে পরিবহন মালিক-শ্রমিক কেন্দ্রিক সংগঠনগুলো ছিল মাফিয়াতন্ত্রের অধীনে। তারা জনগণের অধিকার বলে কোনো কিছুকে তোয়াক্কা করতো না। এর কারণে জনবান্ধব গণপরিবহনব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। এসব নিয়ে কথা বলতে গেলে অধিকার কর্মীদেরও টুটি চেপে ধরা হতো।

তারা বলেন, স্বৈরাচার ব্যবস্থার পতনের পর দেশের যাত্রীসমাজ ন্যায্য ভাড়ায় স্বস্তিদায়ক এক মাধ্যম পাবে বলে আশাবাদী হয়েছিল। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের এক মাসেও জনবান্ধব গণপরিবহনব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। পরিবহন চলছে সেই পুরোনো স্বৈরাচারী কায়দায়। এখনো কিলোমিটারভিত্তিক ভাড়া না মেনে যাচ্ছেতাই ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। প্রতিবাদ করতে গেলে হয়রানির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। যা খুবই হতাশাজনক।

যাত্রী অধিকার আন্দোলনের দুই নেতা আরও বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমের আমরা দেখছি- স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর সড়কের চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। শুধু হাত বদল হয়েছে। আগে আওয়ামী লীগের নেতারা এখন বিএনপি নেতারা তুলছেন। যা খুবই দুঃখজনক। সম্প্রতি দেশে তেলের দাম কমেছে, সড়কের চাঁদাবাজি না থাকলে অবশ্যই গণপরিবহনের ভাড়া কমার কথা ছিল, কিন্তু আন্তঃজেলা বা নগর পরিবহন কোনোটিরই ভাড়া কমেনি। যা এসব খবরের সত্যতার ইঙ্গিত দিচ্ছে এবং পরিবহন সেক্টরের নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতার প্রমাণ দিচ্ছে। আমরা চাই পরিবহনকে সব ধরনের মাফিয়াতন্ত্র থেকে উদ্ধার করে জনবান্ধব করতে এই সরকার অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।

বিবৃতিতে তারা পরিবহন মাফিয়াদের সুযোগ করে দিতে তৈরি করা সড়ক পরিবহন আইনটি সংস্কার করে যাত্রীবান্ধব একটি আইন প্রণয়ন করা এবং পরিবহন সংশ্লিষ্ট সকল কমিটিতে যাত্রীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার দাবিও জানান।

এএসএস/এমএ