ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) বাতিলের দাবির মাধ্যমে পরিকল্পনাবিহীন উন্নয়নের পেছনে কাদের স্বার্থ রয়েছে তা অনুসন্ধানের দাবি জানিয়েছে পরিকল্পিত বাংলাদেশের জন্য ছাত্র সমাজ নামে একটি সংগঠন।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে পরিকল্পিত বাংলাদেশের জন্য ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে জনকল্যাণমূলক, গোষ্ঠীস্বার্থ ও বৈষম্যবিরোধী, পরিবেশবান্ধব নগর ও জনবসতির জন্য পরিকল্পনার নতুন ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে তারা এ দাবি জানান।

তারা বলেন, পরিকল্পনার নতুন ইশতেহারে সমগ্র দেশের পরিকল্পিত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে জাতীয় স্থানিক পরিকল্পনা তৈরি করার পাশাপাশি নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা আইন প্রণয়ন দাবি আমাদের।

আয়োজকরা বলেন, ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮, বেসরকারি আবাসিক প্রকল্পের ভূমি উন্নয়ন বিধিমালা ২০১৫ এর সংশোধনী, ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার ইতোপূর্বে নেওয়া বিভিন্ন সংশোধনী প্রভৃতি ক্ষেত্রে আবাসন সংশ্লিষ্ট মহল এবং গোষ্ঠীস্বার্থ সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীদের ভূমিকা তলিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান। অবৈধভাবে খোলা জায়গা, খাল, জলাশয় ও নদী ভরাটের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা, জলাভূমি, জলাশয় দখল করে যেসব আবাসন প্রকল্প গড়ে উঠেছে সেগুলোর ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে পরিকল্পনাবিদসহ সংশ্লিষ্টদের স্বাধীনভাবে কাজ করবার সুযোগ করে দেওয়ার দাবিও জানাচ্ছি।

তারা বলেন, স্বাধীনতার অর্ধ শতক পরেও বাংলাদেশের পরিকল্পনা ও উন্নয়নের সুফল দেশের সকল নগর কিংবা গ্রামীণ এলাকায় সুষমভাবে পৌঁছাতে পারেনি। নাগরিক সুবিধাদি, আবাসন, পরিবহন, পরিষেবা গণমানুষের জন্য সার্বজনীন হয়নি। নগর ও গ্রামীণ এলাকার সঠিক পরিকল্পনার অভাবে এবং স্বার্থান্বেষী মহলের আগ্রাসনের কারণে হয়েছে অপরিকল্পিত নগরায়ণ, পরিবেশ বিধ্বংসী শিল্পায়ন, জলাশয়-জলাভূমি ধ্বংস করে আবাসন, নির্বিচারে গাছ কাটা, কৃষিজমি উজাড় প্রভৃতি অপরিণামদর্শী কর্মকাণ্ড। স্বার্থগোষ্ঠীর চাপে মহাপরিকল্পনা কিংবা নগর উন্নয়ন ও ইমারত নির্মাণ সংক্রান্ত আইন-বিধিমালা বারংবার পরিবর্তিত হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশে এগুলো পুনরাবৃত্তির কোনো সুযোগ নেই। ফলে পরিকল্পিত, বৈষম্যহীন, সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ গড়তে জাতির প্রয়োজন পরিকল্পনার নতুন ইশতেহার।

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইয়াসির মোহাম্মদ আমিন, মিরাজ ছাড়াও পরিকল্পনাবিদ, প্রকৌশলী, পরিবেশবিদ, সমাজতত্ত্ববিদসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

এএসএস/এমএ