শিক্ষার্থীদের জন্য মেট্রোরেলের ভাড়া অর্ধেক করার দাবি
বৈষম্যহীন দেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে মেট্রোরেলের বাড়তি ভাড়া আদায় এবং শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ পাস না রাখা নতুন ধরনের বৈষম্য তৈরি করছে। সে জন্য বাংলাদেশের মানুষের আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনা করে এবং প্রতিবেশী দেশের নগরীগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মেট্রোরেলের ভাড়া হ্রাস করা ও শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ পাস কার্যকর করার দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট।
বৃহস্পতিবার (১২ই সেপ্টেম্বর ) প্রেস ক্লাবের সামনে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট আয়োজিত এক সমাবেশে এই দাবি জানায় তারা।
বিজ্ঞাপন
সমাবেশে বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে আমরা দেখেছি দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে ছিল ঘুষ-দুর্নীতি-লুটপাট ও অর্থ পাচার। আমলাতন্ত্র ও বিচার বিভাগসহ রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় সরকার দেশের পরিবহন খাতকেও লুটপাট ও দুর্নীতির অভয়ারণ্যে পরিণত করেছিল। এর অন্যতম নজির ঢাকায় মেট্রোরেল প্রকল্প। এই প্রকল্পের অধীনে ২০৩০ সাল নাগাদ ঢাকায় মোট ৬টি রুটে মেট্রো লাইন নির্মাণের কথা হয়েছিল। এর মধ্যে ১টি, ডিএমআরটি-৬, যা উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত, সেটা চালু করা হয়েছে। শুরুতে (২০২২ সালে) লাইন-৬ এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ২২ হাজার কোটি টাকা (প্রায়)। পরবর্তীতে কাজে দীর্ঘসূত্রিতা করে এই প্রকল্পের ব্যয় আরও ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে প্রায় সাড়ে ৩৩ হাজার কোটি টাকায় কাজ শেষ করে এই লাইন উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত চালু করা হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোরেলের কিলোমিটার প্রতি নির্মাণ ব্যয় সাম্প্রতিককালে নির্মিত জাকার্তা ও লাহোর মেট্রোরেলে ব্যয়ের দ্বিগুণেরও বেশি। বাংলাদেশে যেকোনো প্রকল্প দীর্ঘসূত্রীটা করে বাজেট বৃদ্ধি করার নামে ব্যাপক দুর্নীতি ও অর্থ পাচার করার যে প্রাত্যহিক চিত্র- এ কারণেই শাসকশ্রেণি পরবর্তীতে জনগণের উপর বাড়তি ব্যয়ের বোঝা চাপিয়ে দেয়। ঢাকায় লাইন-৬ এর ২০ কিলোমিটার পথে মেট্রোরেলের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ ভাড়া ধরা হয়েছে ২০ টাকা ও ১০০ টাকা। এই ভাড়া রাজধানীর বেসরকারি বাস ভাড়ার দ্বিগুণ এবং ভারত ও পাকিস্তানের মেট্রোরেলের ভাড়ার চেয়ে ২ থেকে ৫ গুণ বেশি- যা দেশের একটা গুরুত্বপূর্ণ এগিয়ে থাকা জনগণের অংশ ছাত্র-ছাত্রী এবং গরিব নিম্নবিত্ত মানুষের সাধ্যের বাইরে। আজকের নতুন বৈষম্যহীন দেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে মেট্রোরেলের এই বাড়তি ভাড়া আদায় এবং শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ পাস না রাখা নতুন ধরনের বৈষম্য তৈরি করছে।
সংগঠনের সভাপতি অরূপ দাস শ্যাম, সাধারণ সম্পাদক সাইমা আফরোজসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।
ওএফএ/এসকেডি