আগামী শনিবারের মধ্যে আরএমজি এবং নন-আরএমজি সেক্টরের শ্রম অসন্তোষ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম। একই সঙ্গে এই সময়ে প্রায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ অর্ডার অন্য দেশে চলে গেছে বলেও জানান তিনি।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আরএমজি এবং নন-আরএমজি সেক্টরের শ্রম অসন্তোষ পরিস্থিতি পর্যালোচনাপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সভাপতিত্বে সভায় অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জে. (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, আজ কারখানাগুলো সুন্দরভাবে চালু হয়েছে। কিন্তু একটি বড় প্রতিষ্ঠানের গতকাল বেতন দেওয়ার কথা ছিল। দিতে না পারায় আজ দুপুর থেকে ওই কারখানার শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। এতে আশপাশের কিছু কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সন্ধ্যার মধ্যে সেই কারখানার শ্রমিকরা বেতন পেয়ে যাবেন বলে আশা করছি। আগামী শনিবার থেকে সব কারখানা নিরবিচ্ছিন্নভাবে স্বাভাবিকভাবে চলতে পারবে।

শ্রমিক অসন্তোষে কতগুলো কারখানা আক্রান্ত হয়েছে— এমন প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, আশুলিয়া, জিরাবো, জিরানী জোনে ৪০৮টি কারখানা রয়েছে। গত কয়েক দিনের শ্রমিক অসন্তোষে এ সমস্ত এলাকার ৪০ থেকে ৬০টি কারখানা বন্ধ আছে। কিছু বন্ধ রেখেছে ইচ্ছাকৃত আর কিছু শ্রমিক অসন্তোষের জন্য।

তিনি বলেন, গত পরশুদিন আমরা আশুলিয়ার কারখানা মালিক ও শ্রমিকসহ একটি সভা করেছি। সেখানে শ্রমিকরা চারটি বিষয়ে সমাধানের কথা বলেছে। মালিকপক্ষ তা তখনই সমাধান করে দিয়েছে। তার মধ্যে কারখানায় চাকরির ক্ষেত্রে একটি দাবি উঠেছিল পুরুষদের ৭০ শতাংশ এবং নারীদের ৩০ শতাংশ নিয়োগ দিতে হবে। অথচ বায়ার বলেছে নারীদের বেশি দিতে হবে। তখন আমরা বলেছি দক্ষতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে। এটা তারা মেনে নিয়েছে। এরপর ছিল টিফিনের দাবি এবং উপস্থিতির বোনাস দাবি, তাও মেনে নেওয়া হয়েছে।

রপ্তানিতে কেমন প্রভাব পড়তে পারে— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রপ্তানিতে তো প্রভাব অবশ্যই পড়বে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মালিক-শ্রমিকের সমর্থন ছিল, কারখানাগুলো বন্ধ ছিল। এরপর বন্যার কারণে চট্টগ্রামে পণ্য শিপমেন্ট করতে পারেনি। এতে অনেক কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা বায়ারদের অনুরোধ করেছি যাতে ক্ষতির পরিমাণ মিনিমাম রাখা যায়। তারপরও অনেক বড় গ্যাপ হওয়ায় ক্ষতি হয়েছে।

তিনি বলেন, গার্মেন্টস খাত সিজনাল ব্যবসা, আজ ঠিক করা হয় তিন মাস পর কোন পণ্যটা বাজারে আসবে। তাই এই একটা সিজনে সমস্যার কারণে বায়াররা অন্য স্থান থেকে সোর্সিং করছে। এতে করে আমাদের প্রায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ অর্ডার অন্য দেশে চলে গেছে। অবশ্যই আমরা এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে পারব।

এমএম/এমজে