নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে দিল্লি বৈঠক না চাইলে ঢাকার পক্ষে জোর করে দেখা করার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, তারা যদি চায় যে, আমাদের সঙ্গে দেখা করবে না, আমাদের তো জোর করে দেখা করার কিছু নেই।

রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

চলতি মাসের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে মোদি-ইউনূসের মধ্যে বৈঠক চেয়ে ঢাকার অনুরোধে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি দিল্লি- এমন খবর প্রকাশ করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস। প্রকাশিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এক সাংবাদিক।

জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, এটা নিয়ে আমি এখনও কিছু বলতে চাই না। কারণ আমাদের কাছে কোনো নিশ্চয়তা নেই যে, হচ্ছে অথবা হচ্ছে না। বস্তুত মোদি যে যাচ্ছেন, এটার শতভাগ নিশ্চয়তা আমরা এখনও পাইনি। একটা সম্ভবনা আছে যে, উনি (মোদি) যাবেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এটার একটা পদ্ধতি আছে। আমরা সে অনুযায়ী এগোবো। এমন না যে, আমরা দেখা করতে চাই তোমাদের সঙ্গে, তোমরা দেখা করবে কি না। এটা নরমাল যে পদ্ধতি আছে সেই অনুযায়ী আগাবে। তারা যদি চায় আমাদের সঙ্গে দেখা করবে না, আমাদের তো জোর করে দেখা করার কিছু নেই।

সফরসঙ্গীর তালিকায় ইউনূসকন্যার নাম নিয়ে যা বললেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা  

চলতি মাসের ২২ তারিখ জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেবেন অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. ইউনূস। তার সঙ্গে সফরসঙ্গী হিসেবে তালিকায় নাম রয়েছে ইউনূসকন্যা দিনা আফরোজ ইউনূস। এ নিয়ে নানা সমালোচনা হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।

এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে এক সাংবাদিক প্রশ্ন রাখেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জাতিসংঘ অধিবেশনে সফরসঙ্গীর তালিকায় রয়েছে ইউনূসকন্যা দিনা আফরোজ ইউনূসের নাম। তাহলে আমরা কি আগের অবস্থানে যাচ্ছি কি না, ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে তাদের পরিবারের সদস্যরা যাবে?

জবাবে তৌহিদ বলেন, এটার সঙ্গে পরিবারের কোনো সম্পর্ক নেই। এ নিয়ে এই মুহূর্তে বেশি অনুমান না করলে আমি খুশি হব।

নিউইয়র্কে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী সম্পর্কে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সংখ্যাটা খুবই কম। ধরুন কোনো অবস্থাতেই ১০-১২ জনের বেশি হবে না। একেবারে লিমিট রাখার চেষ্টা করছি। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের তালিকা দেখে অনেকে জানতে চেয়েছেন- আমি যাচ্ছি না? আমি যাব।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, স্বাভাবিকভাবে যেকোনো দেশ যে কাউকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে পারে। দেওয়া উচিত কি না এক্ষেত্রে এটা দেখার বিষয়, সেটা আমরা দেখব।

শেখ হাসিনার ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নিশ্চিত হলে বাংলাদেশ প্রতিবাদ জানাবে কি না জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সেই পরিস্থিতি এলে আপনারা প্রশ্ন করবেন আমি উত্তর দেবো। এটা ভালো হয়।

এনআই/পিএইচ