বাঁ থেকে নুরুজ্জামান আহমেদ, মাহবুব আলী ও আকতারুজ্জামান বাবু / ছবি : সংগৃহীত

অনিয়ম, দুর্নীতি ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করে নিজ, স্ত্রী ও পরিবারের নামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী এবং খুলনা-৬ এর এমপি মো. আকতারুজ্জামান বাবুর বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশন থেকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দুদকের ঊর্ধ্বতন সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে অর্থপাচার, প্রকল্পে অনিয়মসহ দেশে-বিদেশে বিপুল অবৈধ সম্পদ গড়ার অভিযোগ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দুদকের গোয়েন্দা ইউনিটের তথ্য আমলে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

মাহবুব আলীর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনৈতিক কার্যক্রমসহ নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে তার নিজ নামে, স্ত্রী ও পরিবারের নামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। সাবেক এই সংসদ সদস্য তার আত্মীয়-স্বজনের নামে সিন্ডিকেট তৈরিপূর্বক এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে ঢাকায় সম্পদ অর্জন করেছেন। এছাড়াও তার দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদকের গোয়েন্দা ইউনিট।

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে প্রায় ১ লাখ ভোটের ব্যবধানে মো. মাহবুব আলী পরাজিত হন স্বতন্ত্রপ্রার্থী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের কাছে। এর আগে ২০১৪ সালে অ্যাডভোকেট মো. মাহবুব আলী প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে এমপি নির্বাচিত হয়ে তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।

আকতারুজ্জামান বাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ক্ষমতা অপব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনৈতিক কার্যক্রমসহ নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে রাজধানীসহ বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি, ফ্ল্যাট ক্রয়সহ স্ত্রী ও নিজ সন্তানদের নামে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন। সংসদ সদস্য হয়েও স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে নিজ নামীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জামান এন্টারপ্রাইজ এর নামে কাজ করে দেশের আইন লঙ্ঘন করেছেন। 

অন্যদিকে সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি-নিয়োগ বাণিজ্য, ভুয়া রোগী সাজিয়ে সরকারি অনুদানের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। করোনাকালে প্রশিক্ষণ না করিয়ে বিল উত্তোলন, কাজ না করেই টিআর, কাবিখার মতো বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। মায়ের নামে ‘করিমপুর নূরজাহান-সামসুন্নাহার মা ও শিশু বিশেষায়িত হাসপাতাল' নির্মাণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনৈতিক কার্যক্রমসহ নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে তার নিজ নামে, স্ত্রী ও পরিবারের নামে দেশে বিদেশে কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ উপজেলা) আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য। একাদশ ও দ্বাদশ নির্বাচনে তিনি লালমনিরহাট ২ আসন থেকে জয় লাভ করেন। ২০১৯ সালে তিনি সমাজকল্যাণমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।

আরএম/কেএ/এমএ