রিমান্ডে থাকা অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা হাজী সেলিম। তাকে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক)।

মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২ টায় অসুস্থ অবস্থায় তাকে ঢামেক হাসপাতালের নতুন ভবনে ভর্তি করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক‍্যাম্পের ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া। তিনি বলেন, অসুস্থ হাজী সেলিমকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়েছে। পরে তাকে নতুন ভবনের ১০৭ নম্বর কেবিনে ভর্তি দিয়েছেন চিকিৎসক।

এর আগে ডিবি সদস্যরা হাজী সেলিমকেকে কাঁধে করে হাসপাতালের নতুন ভবনে নিয়ে আসেন।

জানা যায়, আইডিয়াল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র খালিদ হাসান সাইফুল্লাহ হত্যা মামলায় হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তবে দীর্ঘ ৮ বছর ধরে বাকশক্তি হারানোয় কথা বলতে পারেন না তিনি। রিমান্ডে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবির বিশেষ অফিসারদের ডাকা হয়েছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল। এসব অফিসাররা সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ বা ইশারা ভাষা বুঝতে পারদর্শী। তারা হাজী সেলিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।

হত্যা মামলার আসামি হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগের ঢাকা বধির হাইস্কুলের জমি দখলসহ বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।

প্রসঙ্গত, বিএনপির কর্মী হিসেবে রাজনীতি শুরু করা হাজী সেলিম পুরান ঢাকায় ‘তালা হাজী’ নামে বেশি পরিচিত। স্থানীয়রা জানান, কয়েকবছর বিএনপির রাজনীতির পর তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ১৯৯৬ সালে এমপি হওয়ার পর এলাকায় সালিশ-বিচারের নামে ভুক্তভোগী পরিবারের ঘরে তালা লাগিয়ে দিতেন। কারও জমিজমার সমস্যা সমাধান করতে গেলে সমাধানের পর নিজেই ভুক্তভোগীর কাছ থেকে জোর করে জমি কিনে নিতেন।

পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারের অগ্রণী ব্যাংকের একটি জায়গা দখল করে স্ত্রী গুলশান আরার নামে জাল দলিল করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ২০২০ সালে হাজী সেলিমের স্ত্রীর নামে একটি জিডি হয়েছিল চকবাজার থানায়। এরপর হাজী সেলিমের লোকজন মৌলভীবাজার শাখার অগ্রণী ব্যাংকের  কর্মকর্তাদের হত্যার হুমকি দেন। ৩ জন কর্মকর্তা সেসময় ভয়ে এই শাখা ছেড়ে স্বেচ্ছায় বদলি হয়ে যান।

২০১৯ সালে হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে পুরান ঢাকার চকবাজারে ঈদের দিন রাতে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ‘জাহাজ বাড়ি’ ভেঙে ফেলে হাজী সেলিমবাহিনী। এই ঘটনায় চকবাজার থানায় একটি জিডি হয়েছিল। তবে তদন্ত আর আলোর মুখ দেখেনি।

এসএএ/এমজে