খুলনা জেলায় জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন থেকে ২৪ শতাংশ সার্ভিস চার্জে ৯৫ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেছিলেন ফরিদুল হক মিঠু নামে এক ভুক্তভোগী। ২ বছরের মধ্যে সার্ভিস চার্জসহ ঋণ পরিশোধ করলেও মামলা হয় এবং ২০২৩ সালে ১৭ দিন জেল খাটতে হয় মিঠুকে।

ওই ঘটনায় ঋণ গ্রহীতা মিঠু প্রতিকার চেয়েও পাননি। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে উদ্যোগ নেয় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। কমিশন বেঞ্চ-২ মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি, জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন ও অভিযোগকারীকে নিয়ে ত্রিপক্ষীয় শুনানির উদ্যোগ নেয়। শুনানিতে সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ৫ লাখ টাকার জরিমানা করা হয় জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনকে।  

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বলছে, অন্যায়ভাবে ১৭ দিন জেল হাজতে থাকা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এভাবে জেল খাটায় ভুক্তভোগীকে সামাজিক, আর্থিক, মানসিক ও পারিবারিকভাবে যে ক্ষতির শিকার হতে হয়েছে তা অপূরণীয়। কোনোক্রমেই সে ক্ষতি পূরণ সম্ভব নয়। তবে ভুক্তভোগীর ক্ষতি কিছুটা লাঘবের জন্য ৫ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইউশা রহমান জানান, খুলনা জেলার মো. ফরিদুল হক মিঠু নামের এক ব্যক্তি ২০১৯ সালে জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন থেকে ২৪ শতাংশ সার্ভিস চার্জে ৯৫ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। ২০২১ সালে সার্ভিস চার্জসহ সমুদয় ঋণ পরিশোধ করা সত্ত্বেও তার বিরুদ্ধে মামলা হয় এবং তিনি ২০২৩ সালে ১৭ দিন জেল খাটেন। পরে ঋণ গ্রহীতা জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনের মামলা কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলামকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে মামলা থেকে জামিন ও খালাস পান। বর্তমানেও জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনের নিকট তার চারটি ফাঁকা চেক জমা রয়েছে। 

এ বিষয়ে ক্ষতিপূরণ ও প্রতিকার চেয়ে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি বরাবর আবেদন করেও ভুক্তভোগী ঋণগ্রহীতা কোনো প্রতিকার না পেয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ করেন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বেঞ্চ-২ মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি, জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন ও অভিযোগকারী ত্রিপক্ষীয় শুনানি গ্রহণ করে। শুনানিতে সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে যথাযথ পর্যালোচনাপূর্বক এটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয় যে, ২০২১ সালে চড়া সুদে নেওয়া ঋণের সমুদয় টাকা পরিশোধ করেও প্রায় দুই বছর পর ২০২৩ সালে ভুক্তভোগীকে অন্যায়ভাবে ১৭ দিন জেল হাজতে থাকতে হয়েছে যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন এবং এভাবে জেল খাটায় ভুক্তভোগীকে সামাজিক, আর্থিক, মানসিক ও পারিবারিকভাবে যে ক্ষতির শিকার হতে হয়েছে তা অপূরণীয়।

জেইউ/এনএফ