হঠাৎ শাটডাউনের ঘোষণায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে বন্ধ রয়েছে সব ধরনের স্বাস্থ্যসেবা। তবে আগে থেকে হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে শাটডাউন কর্মসূচির কারণে চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কোনো রোগী ভর্তি করানো হচ্ছে না। গুরুতর আহত রোগীদেরও ফেরত পাঠাচ্ছেন চিকিৎসকরা। এতে করে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা এবং তাদের স্বজনরা। বাধ্য হয়ে তারা নগরের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে সেবা নিতে যাচ্ছেন। উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতিতে চমেক হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. তছলিম উদ্দিন খান। তিনি রোগীর ভোগান্তির কথা চিন্তা করে মানবিক বিবেচনায় কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। যদিও ঢাকা থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না এলে কর্মসূচি প্রত্যাহারের সম্ভাবনা কম বলে জানান চিকিৎসকরা।

এর আগে শনিবার (৩১ আগস্ট) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের তিন চিকিৎসককে মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দোষীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের আলটিমেটাম দেন চিকিৎসকরা। অন্যথায় ২৪ ঘণ্টা পর তারা কর্মবিরতিতে যাবেন বলে ঘোষণা দেন। যদিও আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার আগেই রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ঘোষণা দেন সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসকরা।

এ ঘোষণার পর চমেক হাসপাতালে ঢাকার কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে আন্দোলনে নামেন। তারা সব ধরনের চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দিলে চট্টগ্রামের বৃহত্তম এ হাসপাতালে আসা রোগীরা ভোগান্তিতে পড়েন।

হাসপাতালে সেবা নিতে আনোয়ারা উপজেলা থেকে আসা নুর আলমের ছেলে মো. হানিফ বলেন, বাবা গাছ কাটতে গিয়ে নিচে পড়ে মাথায় আঘাত পেয়েছেন। তাকে চমেক হাসপাতালে আনা হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসকরা তাকে ভর্তি করাননি। এ কারণে আমরা অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি।

চমেক হাসপাতালে আন্দোলনরত এক চিকিৎসক জানান, কথায় কথায় চিকিৎসকদের ওপর হামলা অপ্রত্যাশিত। একজন চিকিৎসক যদি ঢাকা মেডিকেলের মতো হাসপাতালে নিরাপদ না হন, তাহলে আমরা যাব কোথায়। এর আগেও একাধিকবার এরকম ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সঠিকভাবে ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে বারবার একই রকম ঘটনা ঘটছে।

চমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) রাজিব কুমার পালিত বলেন, চিকিৎসকরা নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে আন্দোলন করছে। তাদের পরিচালকের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। চিকিৎসকরা কর্মবিরতি পালন করছে। এতে হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা বিঘ্নিত হচ্ছে।

এমআর/এসএসএইচ