কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় বন্যার্তদের উদ্ধারে সেনাবাহিনীর নবীন অফিসার লেফটেন্যান্ট মো. বায়েজিদ বোস্তামী সাম্প্রতিক বন্যা মোকাবিলায় ব্যাপক অবদান রেখেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২২ আগস্ট কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় বন্যার্তদের উদ্ধারকার্যে নিয়োজিত হয়ে নিজ হাতে তিনি এখন পর্যন্ত ৩৫০ জন এর অধিক বন্যার্তদের উদ্ধার করেন। এদের মধ্যে ছিলেন শিশু,  অসুস্থ ব্যক্তি, অন্তঃসত্ত্বা নারী, বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিসহ অনেকেই।

আরও জানা যায়, বাল্যকাল থেকেই দক্ষ সাঁতারু লেফটেন্যান্ট বায়েজিদ প্রশিক্ষণ চলাকালীন সময়ে নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত সাঁতারের উচ্চতর প্রশিক্ষণ 'ফ্রগম্যান কোর্স' সম্পন্ন করেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত এই অফিসার গত ২০ জুন কুমিল্লা সেনানিবাসে অবস্থিত একটি পদাতিক ব্যাটালিয়নে যোগদান করেন।  এরপর তিনি বুড়িচং উপজেলায় বন্যার্তদের উদ্ধারকার্যে নিয়োজিত হন। এ সময় তার ইউনিট অধিনায়ক তাকে সাঁতারের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে দেশের প্রয়োজনে এগিয়ে আসার নির্দেশ প্রদান করেন। বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও ইউনিট অধিনায়কের নির্দেশে দেশপ্রেমিক তরুণ লেফটেন্যান্ট বায়েজিদ বন্যায় আটকে পড়া মানুষের উদ্ধারে জীবন বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

তরুণ লেফটেন্যান্ট বায়েজিদ এর মতোই দেশের জন্য নিবেদিত প্রাণ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রত্যেক সদস্য কাজ করে যাচ্ছে বন্যার্তদের সেবায়। তারুণ্যের এই সহমর্মিতা ও মানবতাবোধ হোক ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রেরণার উৎস।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, নেত্রকোণার আটপাড়া উপজেলার সন্তান লেফটেন্যান্ট বায়েজিদ ২০২০ সালে ঢাকার রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ৮৬ তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের সঙ্গে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন। প্রশিক্ষণ চলাকালীন সময়ে ২০২২ সালে তার বাবা মো.কামাল হোসেন (পরিদর্শক, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, আটপাড়া) পরলোক গমন করেন।

মৃত্যুর আগে তিনি তার পুত্রকে সেনাবাহিনীর একজন অফিসার হয়ে দেশ সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার উপদেশ প্রদান করেন। পরলোক গমনকারী বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়নে লেফটেন্যান্ট বায়েজিদ সেনাবাহিনীর কঠোর প্রশিক্ষণ সফলতার সঙ্গে সমাপ্ত করেন।

এমএসি/এসকেডি