দুর্নীতি ও অর্থপাচারের কার্যকর জবাবদিহির অনুকরণীয় উদাহরণ স্থাপনে দুদক, বিএফআইইউ, এনবিআর, সিআইডি ও অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়কে সম্পৃক্ত করে স্থায়ী টাস্কফোর্স গঠনের দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

বুধবার (২৮ আগস্ট) টিআইবির ধানমন্ডির কার্যালয়ে ‘নতুন বাংলাদেশ : গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের করণীয়’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি ওই সুপারিশ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতি ও অর্থপাচারের কার্যকর জবাবদিহির অনুকরণীয় উদাহরণ স্থাপনে দুদক, বিএফআইইউ, এনবিআর, সিআইডি ও অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের সমন্বয়ে স্থায়ী টাস্কফোর্স গঠন করা জরুরি। একই সঙ্গে জনপ্রতিনিধিত্ব ও সরকারি কার্যক্রমে ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থতা, স্বজনপ্রীতি ও অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধে স্বার্থের দ্বন্দ্ব আইন প্রণয়ন করার সুপারিশ করছি।

তিনি বলেন, আমদানি-রপ্তানি, হুন্ডি, আর্থিক খাতে জালিয়াতি ও বেনামি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কৃত সকল অর্থ পাচার বন্ধ করতে হবে; বিশেষ করে বিএফআইইউ, এনবিআর, বাংলাদেশ ব্যাংক, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, দুদক, সিআইডি, বাংলাদেশ পুলিশ ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের সক্ষমতা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করে আমদানি-রপ্তানির আড়ালে চালান জালিয়াতি নির্ভর অর্থপাচারের প্রক্রিয়া রুদ্ধ করা জরুরি। সকল প্রকার সরকারি ক্রয়, প্রকল্প পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ভ্যালু ফর মানি অর্জনে অন্তরায় ও অনিয়ম-দুর্নীতির সুযোগ সৃষ্টি করে এমন আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতাসমূহ চিহ্নিত করে সংস্কার করা প্রয়োজন।

দুদকের সংস্কার প্রসঙ্গে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুদকের স্বাধীনতা ও সক্ষমতা নিশ্চিত করার জন্য দুদকের প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতাসহ জনবল নিয়োগ, পদায়ন ও বদলির ক্ষমতা দুদক সচিবের কাছ থেকে সরিয়ে কমিশনের হাতে ন্যস্ত করতে হবে। দুদকে পরিচালক হতে ঊর্ধ্বতন পদসমূহে প্রেষণের মাধ্যমে পদায়ন বন্ধ করতে হবে এবং দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচার বিষয়ে তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণে দুদকের ক্ষমতাকে নিশ্চিত করা জরুরি।

তিনি বলেন, সকল পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী এবং সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের প্রধান/চেয়ারম্যান ও সদস্যসহ সব পর্যায়ের কর্মীদের প্রতি বছর তাদের আয় ও সম্পদের বিবরণ প্রকাশ করতে হবে। ব্যক্তিখাতের অধীন প্রতিষ্ঠানসমূহে মালিকানার স্বচ্ছতা নিশ্চিতে এবং খেলাপি ঋণ ও অর্থপাচার রোধে মালিকানার স্বচ্ছতা আইন (বেনিফিসিয়াল ওনারশিপ ট্রান্সপারেন্সি অ্যাক্ট) প্রণয়ন করতে হবে। পাশাপাশি দুর্নীতি প্রতিরোধে জনসম্পৃক্ততা জোরদার করার লক্ষ্যে গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

জাতীয় বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাতিল করারও দাবি জানিয়েছে টিআইবি।

আরএম/এমএসএ