টিকা নিয়ে দুশ্চিন্তা নেই, আসতে পারে যুক্তরাষ্ট্র থেকেও
দেশের মানুষকে করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে দুশ্চিন্তা না করার অনুরোধ জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। শনিবার (৮ মে) এক ভিডিও বার্তায় এ অনুরোধ জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, টিকা নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ নেই। আমরা চীন এবং রাশিয়া থেকে টিকা আনছি। তাছাড়া আমেরিকা থেকেও টিকা আনার যথেষ্ট সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আমার সঙ্গে আমেরিকান সরকারের আলাপ হয়েছে, তারাও আন্তরিকতার সঙ্গে আমাদের টিকা দেওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
মন্ত্রী বলেন, আমার বিশ্বাস আমরা খুব শিগগিরই যথেষ্ট টিকা আনব। কারও এ ব্যাপারে দুশ্চিন্তার কারণ নেই। যথাসময়ে টিকা আসবে এবং সবাই তা পাবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের সঙ্গে তার দফতরে সাক্ষাৎ করেন। রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে মোমেন সাংবাদিকদের জানান, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২০ মিলিয়ন ডোজ করোনার টিকা চেয়েছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, জরুরি ভিত্তিতে চাওয়া হয়েছে ৪ মিলিয়ন টিকা। আর স্বাভাবিক অবস্থায় ১০ থেকে ২০ মিলিয়ন টিকা চাওয়া হয়েছে বলে জানান মোমেন। বৈঠকে রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশকে টিকা পাইয়ে দিতে আন্তরিক চেষ্টা করছেন বলেও জানান তিনি।
সম্প্রতি, ওয়াশিংটন থেকে টিকা পেতে কূটনৈতিক পত্র দিয়েছে ঢাকা। সেই পত্রে অনুদান হিসেবে জরুরি ভিত্তিতে ৪ মিলিয়ন টিকা চেয়েছে বাংলাদেশ। যদি তা না হয়, তবে ওয়াশিংটনের কাছ থেকে তা কিনতেও বাংলাদেশ রাজি আছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
দেশে ভারতের টিকা দিয়েই টিকাদান কার্যক্রম চালানো হয়। কিন্তু ভারতে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিলে দেশটি বাংলাদেশকে টিকা দেওয়ার আশ্বাস দিলেও তারা চুক্তি অনুযায়ী টিকা পাঠাচ্ছে না। দেশে ভারতের টিকা আসার আগে অবশ্য রাশিয়া ও চীন বাংলাদেশকে তাদের টিকা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে টিকা পাচ্ছে মর্মে বিষয়টি আমলে নেয়নি বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে উঠে এসেছে।
রাশিয়া ও চীন থেকে শুরু থেকে টিকা না আনার ব্যাখ্যা দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, আপনারা প্রশ্ন করতে পারেন রাশিয়ান এবং চীনেরটা কেন আগে আনলাম না। আমাদের দেশের যারা পণ্ডিত বা বৈজ্ঞানিক রয়েছেন, তারা বলেছেন, রাশিয়ান এবং চীনের টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন দেওয়া হয়নি। অনুমোদন দেওয়া হয়নি বলে আমাদের মঙ্গলের জন্য আমরা আনিনি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী টিকা আনার জন্য অনুমোদন দিয়েছেন। চীন এবং রাশিয়ান টিকা এখনও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদন করেনি। কিন্তু এখন জাতীয়ভাবে জরুরি, তাছাড়া আমরা দেখি; চাইনিজ টিকা প্রায় ১০০ মিলিয়ন লোক…ওদের লোকজন নিয়েছেন, ৬৩ দেশের সরকারপ্রধান, রাষ্ট্রপ্রধান নিয়েছেন। কারও কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়নি। যে কোনো সময় এগুলো দেশে চলে আসবে।
আগামী ১২ মে চীনের উপহারের ৫ লাখ টিকা দেশে আসছে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ভারত ছাড়া অন্যান্য দেশের টিকা বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো দেশ থেকে টিকা আনতে কত খরচ হয় তাও ভিডিও বার্তায় বলেন মোমেন। তিনি জানান, ভারত থেকে চার ডলারে টিকা এনেছে সরকার, সঙ্গে এক ডলার ট্রান্সপোর্ট খরচ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে টিকা নিতে গেলে লাগবে ৮০ ডলার। আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো থেকে আনতে গেলে লাগবে ২০ থেকে ২৫ ডলার।
বাংলাদেশের মানুষ ভাগ্যবান উল্লেখ করে মোমেন বলেন, আপনারা ভাগ্যবান জাতি। প্রধানমন্ত্রী সবাইকে বিনা পয়সায় টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী কয়েক হাজার কোটি টাকা টিকা আনার জন্য বরাদ্দ দিয়ে রেখেছেন।
এনআই/আরএইচ