ছবি : সংগৃহীত

প্রতিদিন জাতীয় দৈনিকে অসংখ্য খবর প্রকাশিত হয়। সেইসব খবর থেকে আলোচিত কিছু খবরের সংকলন করা হলো।

সদ্য ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সরকার ১৫ বছরের বেশি সময়ে দেদার ঋণ নিয়েছে। এ ঋণের বড় অংশই নেওয়া হয়েছে দেশি উৎস থেকে। এর মধ্যে আবার বেশি ঋণ নেওয়া হয়েছে দেশের ব্যাংকব্যবস্থা থেকে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে পাওয়া দেশি-বিদেশি ঋণের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, পদত্যাগের সময় শেখ হাসিনার সরকার ১৮ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ রেখে গেছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে এ ঋণ পরিশোধে এখন ব্যবস্থা নিতে হবে।

এর পাশাপাশি অন্যান্য খবরগুলো দেখে আসি—

প্রথম আলো

১৮ লাখ কোটি টাকা ঋণ রেখে গেছে আওয়ামী লীগ সরকার

অর্থ বিভাগ গত ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশি-বিদেশি ঋণের প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেছে। তাতে মোট ঋণের স্থিতি দেখানো হয়েছে ১৬ লাখ ৫৯ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। ঋণের হিসাব হালনাগাদ করা হয় তিন মাস পরপর। মার্চ ও জুনের হিসাব আরও কিছুদিন পর তৈরি করা হবে। অর্থ বিভাগ ধারণা করছে, চলতি বছরের জুন শেষে দেশি-বিদেশি ঋণ স্থিতি দাঁড়াবে ১৮ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকার মতো। এর মধ্যে দেশি অংশ হবে ১০ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা আর বিদেশি অংশ ৮ লাখ ১ হাজার কোটি টাকা।

কালবেলা

মাফিয়ায় ছিন্নভিন্ন আর্থিক খাত

মাফিয়া চক্রের ভয়াল থাবায় ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়েছে দেশের আর্থিক খাত। দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পুঁজিবাজার—সর্বত্র দেদার চলেছে লুটপাট। দফায় দফায় লুটে নেওয়া হয়েছে সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ। প্রতিটি ক্ষেত্রে লুটপাটকারীদের চেহারা উন্মোচিত হলেও বলতে গেলে কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি সরকার। কারণ তাদের প্রত্যেকেই ছিলেন ক্ষমতা কাঠামোর শক্তিশালী অংশীদার।

অর্থনীতিবিদদের মতে, জাতীয় অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড বা হার্ট হলো আর্থিক খাত। হৃৎপিণ্ড যেমন রক্ত পরিশোধন করে অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গে সরবরাহের মাধ্যমে মানবদেহকে সচল রাখে, তেমনি আর্থিক খাতও বিভিন্ন খাতে প্রয়োজনীয় অর্থ জোগান দিয়ে অর্থনীতিকে সচল রাখে। হৃৎপিণ্ডে রক্তসঞ্চালন স্বাভাবিক থাকলে যেমন শরীর ভালো থাকে, তেমনি ব্যাংক খাত ভালো থাকলে অর্থনীতিও ভালো থাকে। কিন্তু দেড় দশকের সীমাহীন লুটপাট দেশের আর্থিক খাত ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে।

প্রথম আলো

সারা দেশে দেড় হাজার ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভাঙচুর

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাজধানীসহ সারা দেশে প্রায় দেড় হাজার ভাস্কর্য, রিলিফ ভাস্কর্য, ম্যুরাল ও স্মৃতিস্তম্ভ ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও উপড়ে ফেলা হয়েছে। এসব ভাস্কর্য ও ম্যুরালের বেশির ভাগই ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের, স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক। ধ্বংস করা হয়েছে ময়মনসিংহের শশীলজের ভেনাসের মূর্তি, সুপ্রিম কোর্টের থেমিস ও শিশু একাডেমির দুরন্ত ভাস্কর্যটিও।

ঢাকা মহানগর এলাকার ১৫টি স্থানে ১২২টির বেশি ভাস্কর্য, ম্যুরাল ও রিলিফ ভাস্কর্য ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও উপড়ে ফেলা হয়েছে। শেখ মুজিবুর রহমানের পরিপূর্ণ অবয়ব কাঠামোর ভাস্কর্য ধ্বংস করা হয়েছে ৭টি। ঢাকা বিভাগে ২৭৩টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ২০৪, রাজশাহীতে ১৬৬, খুলনায় ৪৭৯, বরিশালে ১০০, রংপুরে ১২৯, সিলেটে ৪৯ ও ময়মনসিংহ বিভাগে ৯২টিসহ মোট ১ হাজার ৪৯২টি ভাস্কর্য, রিলিফ ভাস্কর্য, ম্যুরাল ও স্মৃতিস্তম্ভ ভেঙে, উপড়ে ফেলে এবং আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

সংবাদ

অস্ত্র ঠেকিয়েই অধিকাংশ ব্যাংক দখল করেছে এস আলম গ্রুপ

গত এক দশকে আইনের শাসনের যে কত বড় অবক্ষয় হয়েছে তা সহজে আঁচ করা যায় এস আলম গ্রুপের ব্যাংক দখলের কাহিনীতে। এই কাহিনী যেন সিনেমার গল্পকেও হার মানায়। কোনো ধরনের আইনের তোয়াক্কা না করে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার সহযোগিতায় ব্যাংকের মূল মালিকের মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ব্যাংক দখল করেছে এস আলম গ্রুপ। ব্যাংক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বা কেন্দ্রীয় ব্যাংক শুধু চেয়ে চেয়ে দেখেছে কিন্তু কিছু করেনি। অন্যভাবে বললে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারাই এত বড় অনিয়মকে সহযোগিতা করেছে।

ইসলামী ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বিদায়ী আওয়ামী সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংককে ‘জামায়াতমুক্ত’ করার উদ্যোগ হিসেবে এর মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা পরিবর্তন করা হয়। মালিকানা দেয়া হয় এস আলম গ্রুপকে। তৎকালীন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অন্যায়ভাবে ইসলামী ব্যাংকের তৎকালীন শীর্ষ কর্মকর্তাদের একটি হোটেলে নিয়ে অস্ত্র তাক করে ব্যাংকটির মালিকানা পরিবর্তন করে।

দেশ রূপান্তর

পঞ্চদশ সংশোধনী সংবিধানের সঙ্গে কেন সাংঘর্ষিক নয়

নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল-সংক্রান্ত সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইন (২০১১) কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, জানতে চেয়ে রুল দিয়েছে উচ্চ আদালত। জনস্বার্থে করা একটি রিট আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে গতকাল সোমবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল দেয়। আগামী ১০ দিনের মধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলেছে হাইকোর্ট।

২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয়। একই বছরের ৩ জুলাই রাষ্ট্রপতি তাতে অনুমোদন দেন। এ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া এ সংশোধনীতে জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন সংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করাসহ সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা পুনর্বহাল করা হয়। এ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি সংযোজন করা হয়।

সমকাল

তছনছ স্থানীয় সরকারে আ’লীগের সাম্রাজ্য

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এবার স্থানীয় সরকারের আওয়ামী লীগের সাজানো সাম্রাজ্যও তছনছ হয়ে গেছে। গতকাল সোমবার প্রায় সব পর্যায়ের শীর্ষ ১ হাজার ৮৭৭ জনপ্রতিনিধিকে একযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে। দেশের ইতিহাসে এ ঘটনা নজিরবিহীন। দ্রুততার সঙ্গে আইন সংশোধন করে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে অপসারণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে স্থানীয় সরকার বিভাগ।

গতকাল সোমবার আলাদা আদেশে ৪৯৪ উপজেলা পরিষদের ১ হাজার ৪৮২ জন চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান; ৬০ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ৩২৩ পৌরসভার মেয়রকে অপসারণ করা হয়। একই সঙ্গে বিভাগীয় পর্যায়ের জেলা পরিষদে বিভাগীয় কমিশনার, বাকিগুলোতে ডিসিদের প্রশাসকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ আদেশ জারির কিছু সময় পর স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে দেশের ১২ সিটি করপোরেশনের মেয়রকে বরখাস্ত করা হয়।

কালের কণ্ঠ

ঋণখেলাপির শঙ্কায় ভালো উদ্যোক্তারা

বৈশ্বিক মন্দার প্রভাবে দেশে দীর্ঘদিন ধরে অর্থনৈতিক সংকট চলছে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাসহ নানামুখী চাপে ব্যবসা-বাণিজ্যে নেমে এসেছে স্থবিরতা। মুনাফার বিপরীতে ব্যয়ের বোঝা বেড়ে যাওয়ায় সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে। এই পরিস্থিতি সামলাতে না পেরে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে পারছেন না।

উদ্যোক্তারা জানান, করোনা মহামারিতে দেশে ও বিদেশে দীর্ঘদিন লকডাউনের কারণে ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ফলে আর্থিক ক্ষতিতে পড়ে ব্যাংক ঋণ পুনঃ তফসিলের মাধ্যমে নিয়মিত করলেও ঋণের বোঝা বাড়তে থাকে। এর পরই শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের কারণে বহির্বিশ্বে কাঁচামালের দাম বেড়ে যায় এবং জ্বালানি তেলের দাম ওঠানামার কারণে দেশের ব্যবসা আরও সংকটে পড়ে যায়।

আজকের পত্রিকা

রূপপুরের নির্মাণ ব্যয় এশিয়ায় সর্বোচ্চ

পাবনার রূপপুরে রাশিয়ার ভিভিইআর ১২০০ প্রযুক্তিতে দুই ইউনিটের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণব্যয় এশিয়া মহাদেশের অন্য দেশগুলোর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণব্যয়ের তুলনায় বেশি। শুধু তা-ই নয়, নির্মাণ-ব্যয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, জাপান, ফিনল্যান্ড, স্লোভাকিয়া রিপাবলিক, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, ভারত, এমনকি রাশিয়াকেও পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ।

আন্তর্জাতিকভাবে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণব্যয় মূলত হিসাব করা হয় প্রতি ১ হাজার ওয়াট (১ কিলোওয়াট) বিদ্যুৎ উৎপাদনে কত মার্কিন ডলার ব্যয় হচ্ছে তার ভিত্তিতে। একে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে প্রতি ইউনিট কেন্দ্র নির্মাণব্যয় বা ওভারনাইট কষ্টও বলে। অর্থাৎ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ব্যয়কে মোট উৎপাদন সক্ষমতা (কিলোওয়াট হিসাবে) দিয়ে ভাগ করলে যা পাওয়া যায়, সেটাই প্রতি ইউনিট কেন্দ্র নির্মাণব্যয়।

প্রথম আলো

আমরা বাংলাদেশেরই দালাল, অন্য কোনো দেশের নয়

প্রথম আলো: এবার যেমন সংখ্যালঘুদের প্রতি হামলা হয়েছে, তেমনি সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের মানুষকে তাদের বাড়িঘর ও উপাসনালয় পাহারা দিতেও দেখেছি।

রানা দাশগুপ্ত: আমরা এই উদ্যোগের প্রশংসা করি। সেই সঙ্গে আমি বলতে চাই, পাহারা দিতে হবে কেন? প্রথম কথা হলো আমি আক্রান্ত হব কেন? আমার ঘরবাড়ি ভেঙে দেওয়া হবে কেন? এই বাংলাদেশের জন্য তো আমরা যুদ্ধ করিনি। হামলা কিন্তু কেবল হিন্দুদের ওপর হয়নি। বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টানদের ওপরও হয়েছে। পাহাড় ও সমতলের আদিবাসীদের ওপর হয়েছে। এখনো হুমকি চলছে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিন্দু শিক্ষকদের যোগ দিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। সংখ্যালঘুরা একধরনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এটা তো পাহারা দিয়ে সমাধান হবে না। আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে।

এছাড়া ‘বঞ্চনার’ আওয়াজ সব দপ্তর সংস্থায়; হাসিনার সঙ্গে এবার গণহত্যার আসামি ইনু মেনন মঞ্জু; রেলের দুর্নীতি বন্ধে এবারও ব্যর্থ হলে ভয়ানক পরিণতি; সাত জেলায় সাবেক এমপি-মন্ত্রীসহ ১২৪৪ জনের নামে মামলা—সংবাদগুলো বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।