ছবি : সংগৃহীত

প্রতিদিন জাতীয় দৈনিকে অসংখ্য খবর প্রকাশিত হয়। সেইসব খবর থেকে আলোচিত কিছু খবরের সংকলন করা হলো।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভেঙে পড়া পুলিশি ব্যবস্থা এখনো স্বাভাবিক হয়নি। আগের সরকারের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আত্মগোপনে চলে গেছেন। কয়েকজনকে অব্যাহতি ও অনেককে বদলি করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে বদলি, পদায়ন, পদোন্নতি এবং এই ক্ষেত্রে বিগত সময়ে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের দৌড়ঝাঁপের কারণে একধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।

এর পাশাপাশি অন্যান্য খবরগুলো দেখে আসি—

প্রথম আলো

পদোন্নতি–পদায়ন নিয়ে পুলিশে অস্থিরতা

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপি সমর্থক হিসেবে চিহ্নিত করে শেখ হাসিনা সরকারের সময় পদোন্নতিবঞ্চিত বা কোণঠাসা করে রাখা পুলিশ কর্মকর্তাদের একটা অংশ পুলিশ সদর দপ্তরে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন। তাঁরা কাকে কোথায় বদলি করা হবে, কারা পদোন্নতি পাবেন; এ ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বঞ্চিত এবং আওয়ামী লীগের কট্টর সমর্থক কর্মকর্তাদের ব্যাচভিত্তিক তালিকা তৈরি করেছে একাধিক পক্ষ। এর ফলে পেশাদার কর্মকর্তাদের অনেকে অস্বস্তি ও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

কালবেলা

দেশে-বিদেশে কী নেই হারুনের

টাকা পাচারের পথ সহজ করতে নিজেই চালু করেন মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান। সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্বও আছে তার। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সম্পত্তি দখল ও দেখাশোনার জন্য আছে তিন সদস্যের স্টিয়ারিং কমিটি। নামে-বেনামে অন্তত তিনটি রিসোর্টের মালিকানা আছে তার। রয়েছে একাধিক আবাসিক হোটেল। আরও অন্তত ১০টি কোম্পানির মালিক তিনি। শুধু ঢাকায়ই আলিশান বাড়ি করেছেন দুই ডজনেরও বেশি। এর বাইরে আছে অগণিত প্লট ও ফ্ল্যাট।

বিধিমালার তোয়াক্কা করেননি। যখন যেখানে দায়িত্ব পালন করেছেন, সেখানেই নানান অনিয়মে জড়িয়েছেন। প্রতিটি ধাপে প্রতারণা ও উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ডে জড়ালেও তাকে কখনো শাস্তি পেতে হয়নি। বরং পদায়ন করা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সব ইউনিটে। ঘুষ, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, জিম্মি করে অর্থ আদায়, মারধর, জমি দখল, বাড়ি দখল, প্লট দখল, ফ্ল্যাট দখল, গুম, খুন, হত্যা, অর্থ পাচার, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি, আটকে রেখে নির্যাতন, নিয়োগ বাণিজ্য, নারী কেলেঙ্কারিসহ এহেন কোনো অপরাধ নেই, যার সঙ্গে জড়াননি হারুন। তবুও বছর বছর পেয়েছেন পদোন্নতি। এসব অনিয়ম আর দুর্নীতির মাধ্যমে হাতিয়েছেন হাজার হাজার কোটি টাকা। রাজধানীর উত্তরা, গাজীপুর ও কিশোরগঞ্জ ঘুরে ডিবি হারুনের অন্তত হাজার কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে।

কালের কণ্ঠ

ডিআইজির স্ত্রী ৬ হাজার কোটির মালিক

পূর্বাচলের পাশে বিস্তীর্ণ জমিজুড়ে গড়ে উঠছে ‘আনন্দ পুলিশ হাউজিং সোসাইটি’। এই প্রকল্পের সঙ্গে পুলিশ বাহিনীর সম্পৃক্ততা নেই। স্থানীয়দের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করে, ভয় দেখিয়ে কিংবা রিমান্ডে নিয়ে জমি লিখে নেওয়া হয়েছে। আবার কারো জমি হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে নামমাত্র মূল্যে। এই অপকর্মের মূল হোতা অতিরিক্ত ডিআইজি গাজী মো. মোজাম্মেল হক। রূপগঞ্জ ছাড়াও কুমিল্লার মেঘনা ও সুনামগঞ্জে অন্তত তিন হাজার ৫৩০ বিঘা জমির মালিক। সম্পদের প্রায় সবই কৌশলে মালিকানা দিয়েছেন স্ত্রীকে। কালের কণ্ঠ’র অনুসন্ধানে মিলেছে তাঁদের দুর্নীতির আদ্যোপান্ত।

পুলিশের সহকারী কমিশনার পদে ১৭তম বিসিএসে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ১৯৯৭ সালে চাকরিজীবন শুরু করেন গাজী মো. মোজাম্মেল হক। বর্তমানে তিনি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে অতিরিক্ত ডিআইজি পদে কর্মরত। পাশাপাশি নিযুক্ত রয়েছেন একটি আবাসন প্রকল্পের পরিচালক হিসেবে। ‘আনন্দ পুলিশ পরিবার বহুমুখী সমবায় সমিতির’ নাম প্রচার করে গড়ে তোলা আবাসন প্রকল্পটির বর্তমান বিক্রয়যোগ্য সম্পদের পরিমাণ প্রায় ছয় হাজার ৬৫০ কোটি টাকা।

দেশ রূপান্তর

‘আয়নাঘরের’ সেই ১৫ কর্তা

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নিখোঁজ থাকার পর তিনজন ফিরে এসেছেন, যাদের দীর্ঘদিন কোনো হদিস ছিল না। এরপরই আবার আলোচনায় আসে ‘আয়নাঘর’। এর আগেই এই ‘আয়নাঘর’ আলোচনায় এসেছে। কিন্তু এটা বাস্তবে আছে কি না, তা নিয়ে তখন অনেকেরই সংশয় ছিল। কিন্তু ফিরে আসা ব্যক্তিরা গণমাধ্যমে মুখ খোলার পর জানা গেল, বাস্তবে ‘আয়নাঘর’ আছে, যেখানে গুম করে রাখা হয় এবং নির্যাতন করা হয়।

এর মধ্যে ‘আয়নাঘর’কাণ্ডে সমালোচিত সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে তাকে বাহিনী থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তিনি নিজেও আট দিন আয়নাঘরে ছিলেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন। পুলিশের ওই সূত্রটি বলেছে, ‘আয়নাঘর’ মূলত তৈরি হয়েছে ২০০৯ সালে। এর পেছনে কলকাঠি নেড়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী দলের নেতাদের অপহরণ করে বছরের পর বছর ধরে ‘আয়নাঘরে’ রাখত।

কালের কণ্ঠ

ছাত্র আন্দোলনে দৃষ্টিহারা চার শর বেশি মানুষ

রাজধানীর শেরেবাংলানগরে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল। এর ৪৫২ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি রোগী তিনজন। প্রত্যেকেরই চোখসহ বিভিন্ন অঙ্গ পুলিশের ছররা গুলিতে আহত। কার চোখের দৃষ্টিশক্তির যে কী অবস্থা হবে সেই ভাবনাতেই দিন কাটছে তাদের।

গতকাল রবিবার দুপুরে হাসপাতালে গেলে দেখা যায়, গায়ে গামছা জড়িয়ে চোখে কালো চশমা পরে বিছানায় বসে আছেন। পাশে বসে থাকা তাঁর ভাই খাবার তুলে দিচ্ছেন। কাছে গিয়ে জানতে চাইলে আখতারুজ্জামান বলেন, থানার সামনে গিয়ে স্লোগান দিতেই পুলিশ গুলি করে। তাঁর মাথা ও বুকে অনেক ছররা গুলি লেগেছে।

সমকাল

ইসলামী ব্যাংকে এস আলমের ৭৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ

সেঞ্চুরি ফুড প্রডাক্ট, ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্স এবং মুরাদ এন্টারপ্রাইজ ইসলামী ব্যাংকের চট্টগ্রামের তিনটি শাখার গ্রাহক। এসব প্রতিষ্ঠানের নামে গত জুলাই শেষে ব্যাংকের ঋণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১২৫ কোটি টাকা। ঋণের কাগজপত্রে চট্টগ্রামের আসাদগঞ্জের যে ঠিকানা ব্যবহার করে এসব ঋণ নেওয়া হয়েছে, সেখানে পাওয়া গেছে আবাসিক ভবন ও ঢেউটিনের দোকান।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গতকাল পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংকের মোট ঋণস্থিতি রয়েছে দেড় লাখ কোটি টাকা। মোট আমানত রয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা। এসব ঋণের মধ্যে এখন পর্যন্ত এস আলম গ্রুপের সুবিধাভোগী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে ৭৪ হাজার ৯৭২ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের অর্ধেক। সরাসরি এস আলম গ্রুপের সাত প্রতিষ্ঠানের নামে রয়েছে ১৪ হাজার ৪২৭ কোটি টাকা।

বণিক বার্তা

শেখ হাসিনার আমলে সম্পন্ন সব প্রকল্প ও চুক্তিই বহাল থাকবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির

সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সম্পন্ন হওয়া সব প্রকল্প ও চুক্তি বহাল রাখার ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। পাশাপাশি যেসব প্রকল্প চলমান ও যাচাই-বাছাই পর্যায়ে রয়েছে, সেগুলো সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। খাতসংশ্লিষ্টরা অবশ্য বলছেন, এরই মধ্যে যেসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে, সেগুলোর কারণে একদিকে যেমন ভোক্তার ওপর ভয়াবহ চাপ বেড়েছে অন্যদিকে সরকারের রাজস্ব শৃঙ্খলাও ভেঙে পড়েছে। বর্তমান প্রকল্পগুলোর চুক্তি সংশোধন ছাড়া বিদ্যুতের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।

বিদ্যুৎ খাতে সক্ষমতা বাড়াতে গিয়ে ২০১০ সাল থেকে আওয়ামী লীগ সরকার বিশেষ আইনের আওতায় ১৪ দফায় বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। ভোক্তা পর্যায়ে দাম বেড়েছে ১৮৮ শতাংশ। এরপরও ২০০৮-০৯ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিক্রি করে ৭০ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বেশি লোকসান করেছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। পাশাপাশি সরকারি কোষাগার থেকে সংস্থাটিকে ভর্তুকি হিসেবে দেয়া হয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।

যুগান্তর

৬০ হাজার কোটি টাকা লোপাট

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক মালয়েশিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) থেকে ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা) লোপাট করেছেন। শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিভিন্ন দেশের সামরিক ও প্রতিরক্ষা খাতে দুর্নীতির অনুসন্ধানকারী গ্লোবাল ডিফেন্স করপোরেশন।

‘আউস্টেড বাংলাদেশ’স প্রাইম মিনিস্টার শেখ হাসিনা, হার সান সজীব ওয়াজেদ জয় অ্যান্ড নিস টিউলিপ সিদ্দিক এমবেজেলড ৫ বিলিয়ন ডলার্স ফ্রম ওভারপ্রাইজড ১২.৬৫ বিলিয়ন ডলার্স রূপপুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট থ্রো মালয়েশিয়ান ব্যাংকস’ শিরোনামে গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা রাশিয়ার রোসাটম মালয়েশিয়ার ব্যাংকের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে এ অর্থ আত্মসাতের সুযোগ করে দিয়েছে। এতে মধ্যস্থতা করেছেন ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক।

বণিক বার্তা

হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই মৃত্যু হয় দুই-তৃতীয়াংশের

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতির মধ্যে সংঘাত-সহিংসতায় দেশে অর্ধসহস্রাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এর ৭১ শতাংশেরই মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে পৌঁছানোর আগে। এ ধরনের মৃত্যু সবচেয়ে বেশি হয় ঢাকা বিভাগে, ১৭১ জনের। 

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ১৫ জুলাই থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত দেশের জেলা, উপজেলা, মেডিকেল কলেজ ও বিশেষায়িত হাসপাতাল থেকে তারা হতাহতদের তথ্য সংগ্রহ করেছে। এতে দেখা গেছে, সারা দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে ৪০৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই মৃত্যু হয় (ব্রট ডেথ) ২৯০ জনের, যা মোট নিহতের ৭১ দশমিক ২৫ শতাংশ। আর ভর্তি হওয়ার পর বা চিকিৎসাধীন অবস্থায় (অ্যাডমিটেড ডেথ) মারা যায় ১১৭ জন।

এছাড়া এমপিসহ আ.লীগের ৫৩৫ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা; প্রশাসন ছাড়াই খুলেছে ভার্সিটি; রংপুরে সাঈদ হত্যায় সাবেক আইজিপিসহ আসামি ১৭—সংবাদগুলো বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।