চাকরি ফিরে পেতে পুলিশ সদর দপ্তরের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্যরা। এর ফলে ভবনের ভেতরে অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছেন আইজিপিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

গত ১৫ বছরের বিভিন্ন সময়ে চাকরি হারানো হাজারো পুলিশ সদস্য রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুর থেকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। এ সময় তারা নির্বাহী আদেশে চাকরি ফেরত দেওয়ার দাবি জানিয়ে নানা স্লোগান দেন।

বিকেল থেকে পুলিশ সদর দপ্তরের সামনের সড়কের দুই লেন বন্ধ করে বিক্ষোভ ও অবস্থান করলেও এখনো দেখা মেলেনি পুলিশ প্রধান ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের।

সরেজমিনে দেখা যায়, হাজারো চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্য পুলিশ সদর দপ্তরের দুটি গেট বন্ধ করে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। তাদের মুখে স্লোগান- আমার পোশাক ফিরিয়ে দে, নইলে বিষ কিনে দে, কেউ পাবে, কেউ পাবে না, তা হবে না তা হবে না, নির্বাহী আদেশ দিতে হবে দিতে হবে। এক দফা এক দাবি মানতে হবে মানতে হবে। হই হই রই রই, বেনজির গেলো কই, হই হই রই রই, মামুন গেলো কই; হই হই রই রই, হারুন গেলো কই, হই হই রই রই বিপ্লব-বাতেন গেলো কই। স্বাধীন বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা কনস্টেবল ফরহাদ বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, ২০২১ সালে বগুড়া জেলায় আমাকে ডোপ টেস্টের নামে চাকরিচ্যুত করা হয়। আদালতে মামলা করি। আদালত থেকে আমি নির্দোষ প্রমাণিত হলেও এসপি সুদীপ কুমার চক্রবর্তী আমাকে যোগদান করতে দেননি।

তিনি বলেন, এ রকম হাজারো পুলিশ সদস্য হাহাকার নিয়ে এখানে উপস্থিত হয়েছেন। আমাদের দাবি একটাই, নির্বাহী আদেশে চাকরি ফেরত দেওয়া হোক।

আন্দোলনরত পুলিশ সদস্যরা বলছেন, বিগত সময়ের বিসিএস পুলিশ কর্মকর্তারা যদি চাকরি ফিরে পান তাহলে আমরা কেন পাব না। বিশেষ করে বিভাগীয় মামলা ও আদালতের আশ্রয় নিয়ে তদন্ত ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় যারা নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন, তাদের কী দোষ! তাদের তো চাকরি বহালে কোনো বাধা থাকার কথা নয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের তাঁবেদার আইজিপি শহীদুল হক, বেনজির, আব্দুল্লাহ আল-মামুনরা চাকরি ফিরিয়ে দেননি।

আন্দোলনরত পুলিশ কনস্টেবল মঞ্জুরুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, এপিবিএনে থাকতে আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। তখন করোনাকাল। বাবা ও মা করোনা আক্রান্ত ছিলেন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য আমি বাড়ি যেতে চাইলে ছুটি মঞ্জুর করেনি। বাধ্য হয়ে আমি ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ছুটি ছাড়াই বাড়ি যাই। ফিরে আসার পর আমাকে সাসপেন্ড করা হয়। বিনা ছুটিতে কেন বাড়ি গেলাম সেজন্য চাকরিচ্যুত করা হয়। চাকরি করিই পরিবারের জন্য। বিপদে যদি সেই পরিবারের পাশে থাকতে না দেয় বাহিনী সেটা তো অন্যায্য। আমি চাকরি ফেরত চাই।

জেইউ/এমজে