বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বাংলাদেশ স্কাউটসের ৪ জন রোভার স্কাউট ও স্কাউটার শহীদ হয়েছেন। এরমধ্যে ১ জন উত্তরায়, ১ জন মিরপুর ১০ নম্বর, ১ জন যাত্রাবাড়ী এবং ১ জন মারা গেছেন সাভারে। তবে ৪ জনই গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু বরণ করেছেন। একইসঙ্গে আন্দোলনে অংশ নিয়ে সারাদেশে আহত হয়েছেন ৫২ জন স্কাউট, রোভার স্কাউট এবং স্কাউটার।

সম্প্রতি বাংলাদেশ স্কাউটস এর সদর দপ্তর থেকে প্রকাশিত তালিকায় বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। সংগঠনটির নির্বাহী পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) উনু সিং, পরিচালক (সংগঠন) এ. এইচ. এম. মুহসিনুল ইসলাম এবং ডেপুটি ডিরেক্টর ইকবাল হোসেনের সই করা ওই তালিকা গত ১২ আগস্ট পর্যন্ত হালনাগাদ করা হয়েছে।

তালিকা অনুযায়ী গুলিতে নিহতরা হলেন— আর্মড পুলিশ ব্যাটেলিয়ন স্কাউট গ্রুপের ইয়াং অ্যাডাল্ট লিডার স্কাউটার মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ, দনিয়া কলেজ রোভার স্কাউট গ্রুপের রোভার মেট রোভার রোহান আহম্মেদ খান, সাভারের প্যাক্সহিল ওপেন স্কাউট গ্রুপের রোভার তানজীর খান মুন্না এবং বিএফ শাহীন কলেজ এয়ার স্কাউট গ্রুপের রোভার মেট আহনাফ আহমেদ।

জানা গেছে, নিহত ৪ জনের মধ্যে উত্তরায় আন্দোলন চলার সময় গত মাসের ১৮ জুলাই ‘পানি লাগবে পানি’ বলে শিক্ষার্থীদের মধ্য পানি বিতরণ করছিলেন মুগ্ধ। তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। খেলোয়াড়, গায়ক, সংগঠক হিসেবে ক্যাম্পাসে ছিলেন সুপরিচিত। গণিতে স্নাতক শেষ করে গত মার্চ থেকে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিংয়ের পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (বিইউপি) এমবিএ করছিলেন। 

আর আহনাফ আহমেদ বিএএফ শাহীন কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০২৫ সালে তার এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে শুরু থেকেই আহনাফ সোচ্চার ছিল। মারা যাওয়ার আগে আন্দোলনে অংশ নিয়ে টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেটে আহত হয়ে সে একবার বাসায় ফিরেছিল।

বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন রোহান আহমেদ খান। এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষে গত ১৯ জুলাই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি।

সাভারের তানজীর খান মুন্না গুলিবিদ্ধ হন ৫ আগস্ট। পরে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। 

আর সারাদেশে আহতও হয়েছেন অন্তত ৫২ জন স্কাউট, রোভার স্কাউট ও স্কাউটার। যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন গুরুতর অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আরএইচটি/এমএসএ