বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন, ২০০৩ অনুযায়ী কমিশনকে স্বাধীন, নিরপেক্ষ, যুগোপযোগী ও দক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্তমানে চেয়ারম্যানের পদত্যাগ ও কমিশন পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বুধবার (১৪ আগস্ট) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় প্রতিষ্ঠানটির সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের মাধ্যমে গঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীর পক্ষ হতে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। এ সরকারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতসহ দেশ ও জনগণের সার্বিক মঙ্গল সাধিত হবে মর্মে সকলে বিশ্বাস করে।

কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বেসরকারি বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি, উক্ত খাতে ব্যবস্থাপনা, ট্যারিফ নির্ধারণে স্বচ্ছতা আনয়ন, ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণ ও প্রতিযোগিতামূলক বাজার সৃষ্টি, সেবার মান উন্নয়ন, সর্বোপরি এ খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন, ২০০৩ (২০০৩ সনের ১৩ নং আইন) এর মাধ্যমে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ রেগুলেটরি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন প্রতিষ্ঠা করা হয়। তবে উক্ত আইন লঙ্ঘন করে বিগত সরকার কর্তৃক শুধু রাজনৈতিক বিবেচনায় কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগ করা হয়। এর ফলে বিগত সরকারের লেজুড়বৃত্তির কারণে কমিশন কর্তৃক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সুশাসন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিষয়ে কমিশনের চেয়ারম্যান বিভিন্ন সময়ে প্রকাশ্যে নানাবিধ নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন। ফলে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন, ২০০৩ অনুযায়ী স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণে কমিশনকে দক্ষ ও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্তমান কমিশন পুনর্গঠনের জন্য অতি জরুরি ভিত্তিতে নিম্নবর্ণিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা আবশ্যক।

বিইআরসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবিগুলো হলো-

১। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন, ২০০৩ এর ধারা ৭ লঙ্ঘন করে বিগত সরকারের মদদপুষ্ট অযোগ্য ও স্বৈরাচার চেয়ারম্যান এবং অন্যান্য সদস্যদের নিয়োগ বাতিল করে আইনানুযায়ী সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যোগ্য ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিগণের সমন্বয়ে কমিশন পুনর্গঠনপূর্বক দক্ষ ও শক্তিশালী করতে হবে।

২। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন, ২০০৩ লঙ্ঘন করে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পেট্রোলিয়ামজাত পদার্থের ট্যারিফ বিগত সরকার কর্তৃক নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত বাতিল করত: আইনানুযায়ী এনার্জির (বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পেট্রোলিয়ামজাত পদার্থ) ট্যারিফ নির্ধারণের কার্যক্রম স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের শুনানি/মতামতের ভিত্তিতে বিইআরসি'র মাধ্যমে সম্পাদন করতে হবে।

৩। ভোক্তার স্বার্থ সংরক্ষণ, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের সুশাসন নিশ্চিত করাসহ রেগুলেটরি কার্যক্রমকে গতিশীল করার লক্ষ্যে কমিশনের জনবল কাঠামো যুগোপযোগী ও সংস্কার করতে হবে।

৪। কমিশনের কার্যক্রম গতিশীল করার লক্ষ্যে যোগ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি বঞ্চিত করে অন্য সংস্থা/দপ্তর হতে প্রেষণ/সংযুক্তিতে নিয়োগ বন্ধ করতে হবে।

দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গৃহীত কর্মসূচি হলো-

১। ১৪ আগস্ট কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান।

২। আগামী ১৫ আগস্ট বিকাল ৫টার মধ্যে কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের পদত্যাগের জন্য আল্টিমেটাম।

৩। বর্ণিত সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করলে আগামী ১৮ আগস্ট থেকে কমিশনের সকল কর্মকর্তা- কর্মচারী কর্তৃক কর্ম-বিরতি ও অসহযোগ কর্মসূচি পালন।

ওএফএ/পিএইচ