গত ২৪ বছরে (২০০০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত) সংখ্যালঘুদের ওপর যে নির্যাতন হয়েছে, তার একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করার অনুরোধ করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোট।

সোমবার (১২ আগস্ট) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে উপদেষ্টা ব্রি. জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এসব কথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের মহাসচি পলাশ কান্তি দে বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টার সঙ্গে এখন পর্যন্ত যে আলোচনা হয়েছে, তাতে আমরা অত্যন্ত খুশি এবং সন্তুষ্ট। বিগত কয়েকদিনের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর যে নির্যাতন হয়েছে, তারা সব বিষয়েই অবগত রয়েছেন। তারা দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন যেখানে যেখানে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছে তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনবেন। সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিয়ে এ ধরনের বক্তব্য আমরা বিগত সময়ে কখনোই শুনি নাই, এই বক্তব্য আমাদের অনেক ভালো লেগেছে।

তিনি আরো বলেন, ২০০০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিগত ২৪ বছরে সংখ্যালঘুদের ওপর যে নির্যাতন হয়েছে, তার একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা যায় কি না। কারণ আমরা দেখেছি, সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হলেই, এই দল বলে ওই দল করেছে, ওই দল বলে এই দল করেছে। যেহেতু এখন রাজনৈতিক নিরপেক্ষ একটি সরকার রয়েছে, তারাই পারবে বিগত ২৪ বছরে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের কারা জড়িত ছিল তাদের নাম প্রকাশ করতে এবং সেই সাহস তাদের রয়েছে। তারা বলেছেন, এটা চেষ্টা করবেন। সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন এবং সংখ্যালঘু কমিশনের বিষয়েও কথা হয়েছে। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা যায় কিনা, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা যায় কিনা, যেহেতু এখন বাংলাদেশে আমরা সবাই বৈষম্যের বিরুদ্ধে আছি।

মহাসচিব বলেন, যেহেতু অক্টোবরে দুর্গাপূজা। দুর্গাপূজার আগে এবং পরে বিগত ২৪ বছরে কোনো পূজা হিন্দুরা শান্তিপূর্ণভাবে করতে পারে নাই। দুর্গাপূজার প্রতিমা ভাঙচুরের মধ্য দিয়েই আমাদের পূজা শুরু করতে হয়। এসব বিষয়ে কথা বলেছি। এবার মন্ত্রণালয় কঠোরভাবে এসবের মনিটরিং করবেন। দুর্গাপূজায় ছুটি তিনদিন করা যায় কিনা সেটা এবার থেকে তারা দেখবেন। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক সরকারের আমলেই সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হয়েছে। আমরা আশা রাখি বর্তমান সরকারের আমলে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হবে না। আমরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছি।

বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট ঢাকার সভাপতি ড. প্রভাস চন্দ্র রায় বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দায়িত্বে যিনি আছেন, তার সঙ্গে আমরা পরিচিতির জন্য এসেছি। তিনি সংখ্যালঘুতে নিরাপত্তাসহ সবার জান মালের নিরাপত্তায় যেসব কাজ করতে চান, আমরা কি চাই, সেসব জানাতে আমরা এসেছি। আমাদের কথাগুলো সহানুভূতির সঙ্গে শুনেছেন। বলেছেন, তারা যতদিন কাজ করবেন, ততদিন এই বিষয়টা উন্নত থেকে উন্নততর অবস্থায় নিয়ে যাবেন। আগামীতে সংখ্যালঘু লোকদের ওপর নির্যাতন কীভাবে শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা যায়, সেই পরামর্শ জন্য তিনি আমাদের ডাকবেন, সহযোগিতা করবেন। আমরা কথা দিয়েছি, সংখ্যালঘু লোকেরা কীভাবে ওনাদের কাছ থেকে উপকৃত হতে পারেন, সেই পরামর্শ দেওয়ার জন্য আমরা তার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখব।

এমএম/এসএম