কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান নিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তারা সেখানে জড়ো হয়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিচ্ছেন। শনিবার (৩ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মুহুর্মুহু স্লোগানে গোটা শাহবাগ এলাকা প্রকম্পিত হচ্ছে।

আন্দোলনকারীরা স্লোগানের ফাঁকে ফাঁকে বক্তব্যও রাখছেন। শাহবাগ মোড়ে খণ্ড খণ্ড ভাগে বিভক্ত হয়ে এক দফার সমর্থনে সরকার বিরোধী ও কোটা আন্দোলনের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবকদের দেখা যাচ্ছে শাহবাগে। 

এসময় আন্দোলনকারীদের, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’,'দফা এক-দাবি এক ‘শেখ হাসিনার পদত্যাগ’ ‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’, ‘স্বৈরাচার গদি ছাড়’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

এদিকে শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কারণে এক পাশে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শাহবাড়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমতে দেখা গেছে।

এর আগে বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে ছাত্র-জনতার সমাবেশে সরকার পদত্যাগের এক দফা ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। এর সেখান থেকে মিছিল নিয়ে টিএসসি হয়ে শাহবাগে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা।

এর আগে এক দফা ঘোষণাপত্রে বলা হয়, তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রিসভাকে পদত্যাগ করতে হবে। আর এক মিনিটও এই সরকার থাকবে না। এক দফা এক দাবি শেখ হাসিনার পদত্যাগ।

নাহিদ বলেন, আমরা আর তাদের কাছে কী বিচার চাইব? তারাই তো খুনি। আমাদের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আপনাদের আন্দোলনের কারণে আমরা ছাড়া পেয়েছি। আজকেও গুলি চলেছে। এই পরিস্থিতিতে এক দফা ঘোষণা করছি। শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আলোচনার দরজা খোলা রয়েছে’। তিনি আগেই বুঝেছেন, দরজা খোলা রাখার সময় হয়েছে। আমরা আসছি। এই যে খুন-হত্যা হয়েছে, এজন্য তাকে পদত্যাগ করতে হবে এবং বিচারের আওতায় আনতে হবে। শুধু শেখ হাসিনা নন, সব মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে।

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, আমাদের এক দফা হলো শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং এই সরকারের লুটপাট-দুর্নীতির বিচার। আমরা জেলের তালা ভেঙে আমাদের ভাইদের আনব। যে অভ্যুত্থান শুরু হয়েছে, এতে সব জনতা যোগ দিন। আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা করে সম্মিলিত মোর্চা গঠন করব। আমরা আমাদের দেশের রূপরেখা ঘোষণা করব। আগামীকাল থেকে সর্বত্র অসহযোগ আন্দোলন হবে।

এই সমন্বয়ক বলেন, যদি ইন্টারনেট বন্ধ, কারফিউ জারি হয় আমরা মেনে নেব না। এখন ছাত্র-জনতার এগিয়ে আসতে হবে। আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে অসহযোগ আন্দোলন পালন করবেন। সরকার যদি জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, এটা জনগণ মানবে না। আপনারা যদি অস্ত্র চালান তাহলে প্রতিরোধ হবে। আমরা সব গণহত্যার বিচার করব বাংলার মাটিতে।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মন্ত্রিসভার সব সদস্যের পদত্যাগ দাবিতে রোববার (৪ আগস্ট) সারাদেশে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন শুরু হবে বলে সমাবেশ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়।

এসআই/এনএম/এসএম