সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানজুর-আল-মতিনের সঙ্গে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি উঠে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তথ্য যাচাইকারী বা ফ্যাক্ট চেক প্রতিষ্ঠান ডিসমিসল্যাব জানিয়েছে, এ দাবি সঠিক নয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানজুরকে নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়েছে। 
 
সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও সংঘাতে বিপুল হতাহতের ঘটনার পর সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী হাইকোর্টে একটি রিট করেন। তাতে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি না চালাতে নির্দেশনা চাওয়া হয়। দুই আইনজীবীর একজন মানজুর-আল-মতিন।

শিক্ষার্থীদের পক্ষে বক্তব্য দিয়েও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও আলোচনায় আসেন মানজুর। এমন পরিস্থিতিতে তাকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য ছড়ানো হয়।

ডিসমিসল্যাব বলেছে, গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজসহ সরকারি দলের বিভিন্ন সমর্থক ও নেতাদের প্রোফাইল থেকে ছড়ানো একাধিক পোস্টে দাবি করা হয়, জামায়াতের সাবেক সংসদ সদস্য হাফেজা আসমা খাতুন মানজুরের নানি। তার মামা ও খালুর সঙ্গে জামায়াত নেতা যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযম ও মতিউর রহমান নিজামীর পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। 

ফ্যাক্ট চেক প্রতিষ্ঠান ডিসমিসল্যাব যাচাই করে দেখতে পেয়েছে, তিনটি দাবিই মিথ্যা এবং পোস্টগুলোতে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের সঙ্গে মানজুরের আত্মীয়তার সম্পর্ক নেই।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি করা হয়, মানজুরের আপন মামা হলেন সাইফুল্লাহ মানসুর। কিন্তু ডিসমিসল্যাব বলছে, মানজুর এবং একটি আলাদা সূত্রে স্বাধীনভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে এই মানজুরের ছোট মামার নাম ‘মনসুরুল খান’, ‘সাইফুল্লাহ মানসুর’ নয়।

সাইফুল্লাহ মানসুর হলেন জামায়াতের সাবেক সংসদ সদস্য আসমা খাতুনের ছেলে এবং মতিউর রহমান নিজামীর জামাতা। যোগাযোগ করা হলে সাইফুল্লাহ মানসুর নিজেই ডিসমিসল্যাবকে বলেন, মানজুরের সঙ্গে তার পরিবারের আত্মীয়তার দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং তিনি মানজুরের মামা নন।
 
ডিসমিসল্যাব যাচাই করতে গিয়ে সাইফুল্লাহ মানসুর অফিশিয়াল নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে আসমা খাতুনের একটি ভিডিও সাক্ষাৎকার পায়। সেখানে আসমা খাতুনকে বলতে শোনা যায় যে তাঁর বড় মেয়ে মুন্নি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এবং তিনি মামুন আল আযমীর স্ত্রী ছিলেন। মামুন আল আযমী হলেন জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযমের ছেলে।

সাক্ষাৎকার থেকে ডিসমিসল্যাব আরও জানতে পারে, আসমা খাতুনের তিন মেয়ে ও দুই ছেলে, অর্থাৎ পাঁচ সন্তান। আর মানজুর জানান, তার নানার পরিবারে সন্তান সংখ্যা ১১ এবং মুন্নি নামে তার কোনো খালা নেই।

যাচাইয়ে ডিসমিসল্যাব জানতে পেরেছে, ছাত্রলীগের পেজ ও বিভিন্ন প্রোফাইলে করা দাবিগুলোতে যে পারিবারিক সম্পর্কের তথ্য দেওয়া হয়েছে, তা জামায়াতের সাবেক সংসদ সদস্য আসমা খাতুনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলে যায়। কিন্তু মানজুরের নানার পরিবারের সঙ্গে মেলে না। তাই দাবিগুলো ভুয়া।

এসকেডি