বাংলাদেশে চলমান গণহত্যা, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে গুলি, গণগ্রেপ্তার, রাতে বাসায় বাসায় অভিযান পরিচালনার ঘটনায় প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত ২৩৭ প্রবাসী বাংলাদেশি পেশাজীবী ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার ছাত্রজনতাকে ছেড়ে দেওয়া, সহিংসায় অংশ নেওয়া ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার-বিচার এবং সব দায় নিয়ে সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছেন তারা।

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে ন্যায়বিচার, আইনের শাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। আমরা আমেরিকায় বিভিন্ন শাখায় কর্মরত বাংলাদেশি পেশাজীবীরা এ সরকারের শাসনতন্ত্রের প্রেক্ষাপটে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।

বিবৃতিতে বলা হয়, সরকার সম্প্রতি তার বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় বাহিনী যেমন পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, আর্মি এবং সরকারি মদদপুষ্ট ছাত্রলীগ ক্যাডারদের দিয়ে জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড চালায়। এতে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ইতোমধ্যে ২৫০ জনের অধিক প্রাণ হারান। এছাড়া বহু মানুষকে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আমরা ক্ষোভের সঙ্গে বলতে চাই, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রত্যেকটি সভ্য সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রীরা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে অন্যায্য ‘কোটা পদ্ধতি’র বিরুদ্ধে তাদের মতবাদ ব্যক্ত করেছিলেন। কিন্তু তাদের ওপর যে বর্বরতা চালানো হয়েছে, তা একাত্তরে পাকবাহিনীর পরিচালিত অত্যাচারকে হার মানিয়েছে। আমরা এ ধরনের হিংস্রতাকে ধিক্কার জানাই! এছাড়া এই নিপীড়ক সরকার কারফিউ, দেখামাত্রই গুলি চালানো, যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা, ইন্টারনেট এবং মোবাইল ফোনে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখে। একইসঙ্গে নিরাপত্তা কর্মীরা ব্লক রেইড, গণগ্রেপ্তার, অপহরণ চালিয়ে নিরপরাধ ছাত্র জনতাকে হয়রানি করে যাচ্ছে।

তারা আরও বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, বর্তমান কর্তৃত্ববাদী সরকার চলমান সংকটপূর্ণ অবস্থার জন্য দায়ী। আমরা সব নিরাপত্তা সংস্থা যেমন- পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, আর্মি এবং দায়িত্বশীলদের কাছে ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা প্রত্যাশা করছি। যেহেতু সব গণতান্ত্রিক সংস্থা বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর অধীনে ধ্বংস হয়ে গেছে, তাই তাদের বহাল রেখে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা এখন একটি দুঃস্বপ্ন। আমরা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে দাবি জানাচ্ছি, অনতিবিলম্বে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন হোক, যাতে করে বাংলাদেশে ন্যায়বিচার, স্বাধীন মতপ্রকাশ, গণতন্ত্র এবং প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার সুনিশ্চিত হয়।

এনএম/পিএইচ