মানবিক কর্মকাণ্ডের জন্য দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত চট্টগ্রাম-৬ আসনের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ সন্তান ও তরুণ রাজনীতিবিদ ফারাজ করিম চৌধুরী। 

চারপাশের নানা রকম অনিয়ম, বিপদগ্রস্থ মানুষের জন্য সাহায্যর হাত বাড়িয়ে দিয়ে প্রশংসিত হয়েছিলেন তিনি। তবে দেশজুড়ে কোটা সংস্কার আন্দোলকে ঘিরে চলমান উদ্ভুত পরিস্থিতিতে শুরু থেকেই নীরব এই যুবক। 

যে কারণে সাধারণ মানুষের ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। অনেকেই ফারাজকে নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করছেন। পাশাপাশি তার রাজনৈতিক পরিচয় তুলে ধরেও বিভিন্ন মন্তব্য করছেন। 

বিষয়গুলো নিয়ে ফারাজ যখন চুপ, তখন ছেলেকে পাশে নিয়ে এক ভিডিওবার্তা দিয়েছেন এই তরুণ রাজনীতিবিদের মা। ছেলের হয়ে ক্ষমা চেয়ে তিনি বলেছেন, পারিবারিক চাপের কারণে ছাত্রদের পাশে দাঁড়াতে পারছেন না ফারাজ। 

ভিডিওর শুরুতেই সবাইকে সালাম দিয়ে ফারাজ করিমের মা বলেন, আমি রিজওয়ানা ইউসুফ, একজন মা। আমার ছেলেকে আপনারা সবাই চেনেন, যাকে আপনারা ‘মানবতার ফেরিওয়ালা’ বলেন। আজকে জাতির এ সংকটজনক মুহুর্তে আমার ছেলে চুপ, এটার কারণ মা হিসেবে আমি অন্তত জানি। সে যে ত্যাগ স্বীকারটা করছে, সেটা কোনো দালালির জন্য না, কোনো দলের জন্যও না। সে পারিবারিক চাপের মধ্যে আছে দেখে আপনাদের পাশে দাঁড়াতে পারেনি।

রিজওয়ানা ইউসুফ আরও বলেন, ‘ফারাজ মনপ্রাণ দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছে, যাদেরকে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাদেরকে যেন ছাড়ানো যায়। কিন্তু আমি চুপ করে বসে থাকতে পারিনি, কারণ মা হিসেবে আমি বারবার ছেলের দিকে তাকিয়েছি, সে পাঁচ-ছয় রাত ঘুমায়নি। ওর চেহারার দিকে তাকাতে পারতাম না। আমি আজকে আর চুপ থাকতে পারলাম না, আমার আর ভয় লাগছে না। আমার ছেলের জন্য আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা চাইছি। সে মানুষকে অনেক ভালোবাসে। আজকে আপনাদের পাশে সে হয়তো স্বশরীরে নেই, তবে মনপ্রাণ দিয়ে সে আপনাদের পাশে আছে।’

রাজপথে যেসব শিক্ষার্থীরা রয়েছেন তাদের সঙ্গে ছেলেকে পাঠাতে পারেননি বলে ‘লজ্জিত’ লাগছে মন্তব্য করে ফারাজ করিমের মা বলেন, ‘মা হিসেবে আমি লজ্জিত। আপনাদের সন্তানদের সঙ্গে আমার ছেলেকে পাঠাতে পারিনি। একজন অপরাধী মা হিসেবে আজকে আমার সন্তানের সঙ্গে আপনাদের সামনে এসে দাঁড়িয়েছি। আপনাদের কাছে আমি মাফ চাচ্ছি। জানিনা, ওপরওয়ালা আমাকে মাফ করবেন কি না।’

সবশেষ ফারাজ বলেন, ‘আমি যদি জীবনে আবারও সুযোগ পাই, আপনাদের যাদের ভালোবাসা হারিয়ে ফেলেছি তাদের সম্মান ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব।’

এনএইচ