শিক্ষার্থীদের মৌন অবস্থান
কোটা আন্দোলনে ঘিরে হতাহতের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন ঘিরে সংঘাত ও হতাহতের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে সংঘাতে আহত ও নিহতদের পরিবারবর্গের স্থায়ী পুনর্বাসন এবং ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনাসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছেন তারা।
শনিবার জাতীয় জাদুঘরে সামনে সাধারণ শিক্ষার্থী মঞ্চ আয়োজিত মৌন অবস্থান কর্মসূচি থেকে এসব দাবি জানান।
বিজ্ঞাপন
মৌন অবস্থান কর্মসূচির লিখিত বক্তব্যে সাকুর হাসান বলেন, কোটা বিরোধী আন্দোলন নিয়ে সৃষ্ট ঘটনায় আমরা সাধারণ ছাত্ররা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। কোটা নিয়ে আমাদের দাবি পূরণ হয়েছে, কিন্তু এর মধ্যে অনেক প্রাণ ঝরে গেছে। এই আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে অনেক নাশকতা হয়েছে। আমরা সাধারণ ছাত্ররা রাজনীতি করতে আসিনি, আমাদের যৌক্তিক দাবি উত্থাপন করতে এসেছিলাম। বর্তমানে ব্যাপারটি যে পর্যায়ে গেছে তাতে আমরা মর্মাহত এবং শঙ্কিত।
আন্দোলন ঘিরে হতাহতের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, চরম পরিতাপের বিষয় চলমান কোটা আন্দোলনে নিরীহ শিক্ষার্থীদের ওপর দেশব্যাপী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সকল স্থানে নির্যাতন, নিপীড়ন, হামলা ও প্রাণহানির মতো ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। আমরা সকল শিক্ষার্থী ও দেশবাসীর পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানাই। নিহত সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং আহত শিক্ষার্থীদের সুস্থতা কামনা করছি।
দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে আমরা সরকারের দ্রুত ইতিবাচক পদক্ষেপ প্রত্যাশা করে উত্থাপিত ৯ দফা দাবিতে বলা হয়, কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সংগঠিত প্রত্যেকটা ছাত্র প্রাণহানির নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার করতে হবে। কোটা আন্দোলনে সকল গ্রেফতার হওয়া শিক্ষার্থীদের মুক্তি ও সর্বপ্রকার হয়রানি বন্ধ করতে হবে। এছাড়াও মুক্তিপ্রাপ্ত ৬ জন সমন্বয়কদের পরবর্তীতে কোন প্রকার হয়রানি করা যাবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষাঙ্গনে বহিরাগত হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচারের আওতাভুক্ত করতে হবে। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হামলাকারীদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত শিক্ষার্থী যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
কোটা আন্দোলনে আহত ও শহীদ পরিবারবর্গের স্থায়ী পুনর্বাসন দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষা বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলসমূহের বৈধ সিট নিশ্চিতকল্পে হল প্রশাসনকে যথাযথ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা বাংলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিতকল্পে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সরব উপস্থিতি প্রত্যাহার করতে হবে। মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে বিচারের আওতাভুক্ত করতে হবে।
কোটা আন্দোলনে অপ্রীতিকর ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত সকল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা তদন্তের মাধ্যমে সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষা শেষে শিক্ষার্থীদের জন্য যথাযোগ্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
এআর/এসকেডি