গোয়েন্দা পুলিশের ‘হেফাজতে’ থাকা অবস্থায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কের একটি ছবি দিয়েছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মো. হারুন অর রশীদ। একটি খাবার টেবিলে তাদের সামনে খাবার দিয়ে ছবিটি তোলা হয়েছিল। ছবিটি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।  

এই ছবি প্রকাশ করে হারুন অর রশীদ তার ফেসবুক পেজে লিখেছিলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন। তাই ওদের ডিবি কার্যালয়ে এনে তাদের সাথে কথা বললাম।

গতকাল (বৃহস্পতিবার) দুপুর ২টার দিকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয় থেকে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর আজ সকালে তারা একটি বিবৃতি দেন যেখানে খাবার টেবিলে তাদের বসার প্রসঙ্গটি উঠে আসে। এছাড়া গত কয়েকদিনে ডিবি কার্যালয়ে কী ঘটেছে এর বর্ণনাও দিয়েছেন তারা।  

খাবার টেবিলের ভিডিও প্রসঙ্গে বিবৃতিতে বলা হয়— ডিবি অফিসে আমাদের জোর করে খাবার টেবিলে বসিয়ে ভিডিও করা হয়। আমাদের ছেড়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে পরিবারকে ডেকে ১৩ ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয় এবং মিডিয়ায় মিথ্যা স্টেটমেন্ট দেওয়ানো হয়। আমাদের শিক্ষকরা দেখা করতে এলে দেখা করতে দেওয়া হয়নি।  

বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, মূলত আন্দোলন ও নেতৃত্বকে ছত্রভঙ্গ করতেই ১৯ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের গুম, গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও হয়রানি করা হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় নিরাপত্তার নামে ছয় সমন্বয়ককে সাত দিন ধরে ডিবি হেফাজতে জোরপূর্বক আটকে রাখা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও ডিবি প্রধান নিরাপত্তার কথা বললেও আমাদের আন্দোলন থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার জন্যই ডিবি হেফাজতে রাখা হয়েছিল।  

আমরা গুম, গ্রেপ্তার ও নির্যাতন থেকে নিরাপত্তা এবং নিশ্চয়তা চেয়েছিলাম; আমরা আমাদের মত প্রকাশের অধিকারের নিশ্চয়তা চেয়েছিলাম। কিন্তু অসাংবিধানিক ও আইনবহির্ভূতভাবে আমাদের ডিবি হেফাজতে আটকে রাখা হয়। প্রথমে নিরাপত্তার কথা বললেও পরে আদালতের কথা বলা হয়। আদালতের আদেশ ছাড়া না কি আমাদের ছাড়া যাবে না।

এদিকে হারুন অর রশীদকে ৩১ জুলাই গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) দায়িত্ব থেকে বদলি করে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস)–এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। 

এনএফ