সারজিসসহ ছয় সমন্বয়ককে বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) হেফাজত থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। মুক্তি পেয়েই সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম।

পোস্টে সারজিস লিখেছেন, ‘কথা দিয়েছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের থেকে কাউকে গ্রেপ্তার করবেন না, মামলা দিয়ে হয়রানি করবেন না। আপনারা কথা রাখেননি। আপনারা আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর আঘাত করেছেন। সারা দেশে আমার স্কুল কলেজের ভাইবোনদের ওপর লাঠিচার্জ করেছেন। যাকে ইচ্ছা তাকে জেলে পাঠিয়েছেন। আন্দোলনকারীকে খুঁজে না পেলে বাসা থেকে ভাইকে তুলে নিয়েছেন, বাবাকে হুমকি দিয়েছেন। মাশরুর তার উদাহরণ’।

‘যারা একটিবারের জন্যও এ আন্দোলনে এসেছেন তারা শান্তিতে ঘুমাতে পারেন না, গ্রেপ্তারের ভয়ে থাকে। এমন অনেকে আছে যাদের পরিবার এখনো তাদের খোঁজ পায়নি। এমন তো হওয়া উচিত ছিল না! কোথায় মহাখালীর সেতু ভবন আর কোথায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়! অথচ আপনারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক আরিফ সোহেলকে মহাখালীর সেতুভবনে হামলার জন্য গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিলেন। সঙ্গে আছেন আসিফ মাহতাব স্যার, মাশরুরসহ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অসংখ্য শিক্ষার্থী।’

তিনি আরও লেখেন, ‘রিকশা থেকে নামিয়ে প্রিজনভ্যানে তুলছেন, বাসা থেকে তুলে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন। আমার বোনদের রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছেন। কী ভাবছেন? এভাবেই সবকিছু শেষ হয়ে যাবে? ৬ দিনের ডিবি হেফাজত দিয়ে ছয়জনকে আটকে রাখা যায় কিন্তু এই বাংলাদেশের পুরো তরুণ প্রজন্মকে কীভাবে আটকে রাখবেন? দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার করে যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছেন প্রতিনিয়ত সেগুলো কীভাবে নিবৃত করবেন।’

‘পুলিশ ভাইদের উদ্দেশ্যে একটা বলি। এ দেশের মানুষের ক্ষোভ আপনাদের ওপর নয়, পুলিশের ওপর নয়। এই ক্ষোভ আপনার গায়ের ওই পোশাকটার ওপর। যে পোশাকটাকে ইউজ করে বছরের পর বছর আপনাদের দিয়ে এ দেশের অসংখ্য মানুষকে দমন-পীড়ন করা হয়েছে, অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছে, জেল আর আদালতের প্রাঙ্গণে চক্কর কাটানো হয়েছে, সেই পোশাকটার ওপর। ওই পোশাকটা ছেড়ে আসুন আমাদের সাথে, বুকে টেনে নেব।’

সারজিস লেখেন, ‘এ পথ যেহেতু সত্যের পথ, ন্যায়ের পথ, তাই যেকোনো কিছু মোকাবেলা করতে আমরা বিন্দুমাত্র বিচলিত নই। যতদিন না এ বাংলাদেশ আন্দোলনকারীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠছে; গণগ্রেপ্তার, জুলুম, নির্যাতন বন্ধ হচ্ছে ; ততদিন এ লড়াই চলবে।’

এমএ